ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ‘ব্যাঙ্কে টাকা রাখা কি আর নিরাপদ?’—এই প্রশ্ন নতুন করে সামনে এসেছে রাজস্থানের কোটায় ঘটে যাওয়া এক চাঞ্চল্যকর জালিয়াতি-কাণ্ডে (Fraud Case)। একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের মহিলা আধিকারিক চার কোটিরও বেশি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ। প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত সাক্ষী গুপ্তাকে, যিনি ব্যাঙ্কের ‘রিলেশনশিপ ম্যানেজার’ পদে কর্মরত ছিলেন।
তদন্তে কী জানা গেছে? (Fraud Case)
তদন্তে জানা গিয়েছে, ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে মোট ৪১ জন গ্রাহকের ১১০টি অ্যাকাউন্ট থেকে ৪ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা বেআইনি ভাবে তুলে নেন সাক্ষী (Fraud Case)। তিনি সেই টাকা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করেছিলেন, উচ্চ রিটার্নের লোভে। তাঁর ধারণা ছিল, শেয়ার বাজার থেকে লাভ হলে পরে মূলধন গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টে ফিরিয়ে দেবেন। কিন্তু বাজারে ধস নামায় সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
তদন্তকারী অফিসার কী জানিয়েছেন? (Fraud Case)
সাক্ষী এতটাই সুপরিকল্পিত ভাবে কাজ করেছিলেন যে, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষও তিন বছর ধরে কিছু টের পাননি (Fraud Case)। তদন্তকারী (NIA) অফিসার ইব্রাহিম খান জানিয়েছেন, “অভিযুক্ত নিজের পরিবারের সদস্যদের মোবাইল নম্বর গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টে যুক্ত করেছিলেন, যাতে গ্রাহকদের কাছে কোনও লেনদেন সংক্রান্ত বার্তা না পৌঁছয়।” অর্থাৎ, টাকার উত্তোলন বা পরিবর্তন সংক্রান্ত এসএমএস গ্রাহকদের না গিয়েই আটকাত। এই প্রতারণা সামনে আসে তখন, যখন এক গ্রাহক নিজের ‘ফিক্সড ডিপোজিট’-এর অবস্থা জানতে চেয়ে ব্যাঙ্কে যোগাযোগ করেন। শুরু হয় অভ্যন্তরীণ তদন্ত এবং ১৮ ফেব্রুয়ারি ব্যাঙ্কের তরফ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। এরপরেই বৃহস্পতিবার রাতে সাক্ষীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

আরও পড়ুন: Elon musk On Trump : “আমার সাহায্য না পেলে ট্রাম্প জিততেই পারতেন না!” ট্রাম্পের পাল্টা দাবি মাস্কের
গ্রাহকদের কী দাবি? (Fraud Case)
ঘটনার পর এক ক্ষুব্ধ গ্রাহক প্রশ্ন তোলেন,“আমরা এত দিন ব্যাঙ্ককে বিশ্বাস করেছি (Fraud Case)। এখন তো দেখছি, অফিসারেরাই আমাদের প্রতারক হয়ে উঠছেন। টাকা রাখব কোথায়?”যদিও ব্যাঙ্ক এখনও পর্যন্ত এই জালিয়াতি নিয়ে কোনও সরকারি বিবৃতি দেয়নি, তবে ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ব্যাঙ্কের এক অভ্যন্তরীণ কর্তা জানিয়েছেন, “এই ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত ও বিচ্ছিন্ন। তদন্ত চলছে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যাতে না ঘটে, সেই জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় ঝুঁকি (Fraud Case)
এই জালিয়াতি আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, প্রযুক্তি যত উন্নতই হোক, মানবিক বিশ্বাসভঙ্গ ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত না করলে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাও ঝুঁকির বাইরে নয় (Fraud Case)। গ্রাহকদের পক্ষ থেকে নিয়মিত অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ এবং ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে কড়া নজরদারি ছাড়া এমন ঘটনা রোধ করা কঠিন।সাক্ষী গুপ্তার গ্রেফতারির পর শুরু হয়েছে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি। তবে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে—এই একক প্রতারণা নাকি এর পিছনে আরও কেউ জড়িত? তদন্তই এখন তার উত্তর দেবে।