ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ট্রাম্পের এআই ভিডিও নিয়ে হামাসের তীব্র প্রতিক্রিয়া (Hamas on Trump)। বাস্তব পরিস্থিতি ট্রাম্প বুঝছেন না বলে দাবি হামাস নেতৃত্বের।
ধ্বংসস্তূপের উপর বিলাসবহুল গাজার কল্পনা, ক্ষুব্ধ হামাস (Hamas on Trump)
প্যালেস্টিনীয় গোষ্ঠী হামাস, যারা ২০২৩ সালে ইজরায়েলে আকস্মিক হামলা চালানোর আগে গাজা শাসন করতে লড়াই করছিল, তারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি এআই-নির্মিত ভিডিওর তীব্র সমালোচনা করেছে (Hamas on Trump)। ভিডিওতে ধ্বংসপ্রাপ্ত গাজাকে বিলাসবহুল এক রিসোর্ট হিসেবে দেখানো হয়েছে, যেখানে ট্রাম্পের নাম ঝলমল করছে।
“ট্রাম্প আবারও বাস্তবতা বুঝতে পারছেন না”—হামাস (Hamas on Trump)
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য বাসেম নাইম বলেছেন (Hamas on Trump), “দুর্ভাগ্যবশত, ট্রাম্প আবারও এমন পরিকল্পনা দিচ্ছেন, যা গাজার মানুষের সংস্কৃতি ও স্বার্থের কথা বিবেচনা করে না।”
তিনি নিউজউইককে আরও বলেন, “গাজার মানুষ এমন এক ভবিষ্যতের অপেক্ষায় আছে যেখানে তাদের শহর পুনর্গঠিত হবে, অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটবে এবং শিশুরা ভালো ভবিষ্যৎ পাবে। কিন্তু এটি কোনো বড় কারাগারের মধ্যে সম্ভব নয়। আমরা কারাগারের অবস্থার উন্নতির জন্য লড়াই করছি না, বরং কারাগার ও তার প্রহরী থেকে মুক্তির জন্য লড়াই করছি।”
এআই ভিডিও ও বিতর্ক
এই এআই-নির্মিত ভিডিওটি প্রকাশের মাত্র এক সপ্তাহ আগে ট্রাম্প গাজার মানুষকে জোর করে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা থেকে সরে আসেন। প্রতিবেদন অনুসারে, ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার করা ভিডিওটি রাম্বল নামের ফ্লোরিডাভিত্তিক ভিডিও প্ল্যাটফর্ম থেকে ডাউনলোড করা হয়েছে। এটি ডানপন্থীদের মধ্যে জনপ্রিয়।
আরও পড়ুন: Donald Trump: যুদ্ধের অবসান ঘটাতে তৎপর ট্রাম্প, ফোন দুই দেশের রাষ্ট্রপতিকে!
ভিডিওটি শুরু হয় গাজার ধ্বংসপ্রাপ্ত রাস্তায় মানুষের হাঁটাচলার দৃশ্য দিয়ে, যেখানে কিছু বন্দুকধারীকেও দেখা যায়। এরপর দৃশ্য দ্রুত বদলে যায় এবং উন্নয়নের ছবি ও বিলাসবহুল সমুদ্র সৈকতের দৃশ্য উঠে আসে। একটি দৃশ্যে এক শিশু ট্রাম্পের মাথার আকারের বেলুন ধরে আছে। অন্য দৃশ্যে ট্রাম্পের বিশাল একটি সোনার মূর্তি দেখা যায়। আরেকটি দৃশ্যে এক ব্যক্তি সমুদ্র সৈকতে বাতাসে টাকা ওড়াচ্ছেন।
কিছু দৃশ্যে এআই প্রযুক্তির ত্রুটি স্পষ্ট। যেমন, এক ব্যক্তির হাতে ছয়টি আঙুল দেখা যায়, যিনি দেখতে এলন মাস্কের মতো। আরও কিছু দৃশ্যে দাড়িওয়ালা বেলি ড্যান্সার, ট্রাম্পকে নাইটক্লাবে এক নারীর সঙ্গে নাচতে দেখা যায়, এবং ট্রাম্প ও ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে একটি সুইমিং পুলে বসে পানীয় পান করতে দেখা যায়।
প্যালেস্টিনীয়দের ক্ষোভ ও আরব বিশ্বে প্রত্যাখ্যান
এই ভিডিও প্রকাশের পর প্যালেস্টিনীয়রা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। ঠিক যেমনভাবে আরব দেশগুলো এই মাসের শুরুতে ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরের মেয়র আহমেদ আল-সৌফি বলেন, “এটি কেবল একটি কল্পনা। যদি ট্রাম্প সত্যিই প্যালেস্টিনীয়দের জন্য ভালো কিছু করতে চান, তবে তাকে ইজরায়েলের পাশে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের অনুমতি দিতে হবে।”
আরও পড়ুন: Tariffs on EU: ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিরুদ্ধে শুল্ক বসানোর হুমকি দিলেন ট্রাম্প
ট্রাম্পের বিতর্কিত মন্তব্য ও গাজা পুনর্গঠনের চ্যালেঞ্জ
ফেব্রুয়ারির শুরুতে ট্রাম্প বিশ্বকে চমকে দেন, যখন তিনি বলেন যে আমেরিকা গাজাকে ‘দখল করতে’ পারে এবং সেখানে জনসংখ্যা পুনর্বিন্যাস করতে পারে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, এমনকি ট্রাম্প যদি তার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতেও চান, তবে গাজা পুনর্গঠন অত্যন্ত কঠিন হবে।
গাজা থেকে অবিস্ফোরিত বোমা ও ধ্বংসাবশেষ সরাতে হবে, পানীয় জল ও বিদ্যুতের লাইন মেরামত করতে হবে, এবং স্কুল, হাসপাতাল ও দোকান নতুন করে তৈরি করতে হবে। তবে প্রতিবেদনে ট্রাম্পের ওই পরিকল্পনার সমালোচনা করে বলা হয়েছে, তিনি গাজার মানুষকে তাদের ঘরের কাছেই পুনর্বাসনের বদলে ‘চিরতরে সরিয়ে দেওয়ার’ কথা বলছেন।