ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রাচীন ও মর্যাদাপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে একটি গভীর রাজনৈতিক সংকটের মুখোমুখি (Harvard University)। ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald J. Trump) প্রশাসনের সঙ্গে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান বিরোধ শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্য করে নয়, বরং বৃহত্তর অর্থে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার এবং রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের সীমা নির্ধারণে এক দৃষ্টান্তমূলক ঘটনা হয়ে উঠছে।
হার্ভার্ডে ব্যাপক প্রতিবাদ (Harvard University)
গাজায় ইজরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে, বিশেষ করে হার্ভার্ডে ব্যাপক প্রতিবাদের ঝড় ওঠে(Harvard University)। অনেক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক মানবাধিকারের পক্ষে এবং প্যালেস্টাইনের সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে অংশ নেন। ট্রাম্প প্রশাসন এই ঘটনাগুলিকে ‘ইহুদি বিদ্বেষ’ এবং ‘জঙ্গিবাদে প্ররোচনা’ হিসেবে চিহ্নিত করে। সরকারের অভিযোগ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো রাজনৈতিক আখড়ায় পরিণত হচ্ছে এবং সেখানে বেআইনি কার্যকলাপ ঘটছে।
অনুদান বন্ধের ঘোষণা (Harvard University)
এই অবস্থার প্রেক্ষিতে ট্রাম্প সরকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে দেওয়া ২০০ কোটি ডলারের বেশি সরকারি অনুদান বন্ধের ঘোষণা দেয়(Harvard University)। পাশাপাশি বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে পাঠানো হয় এবং সতর্ক করে বলা হয়, হার্ভার্ড যদি সরকারের শর্ত না মানে, তবে তারা ভবিষ্যতে বিদেশি ছাত্র ভর্তি করতে পারবে না। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় যে করছাড় সুবিধা পেত, সেটিও বন্ধ করার হুমকি দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন : Donald Trump on Pakistan : ইরানের পর এবার পাকিস্তান? ট্রাম্পের মন্তব্য ঘিরে তুঙ্গে উত্তেজনা
রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ (Harvard University)
হার্ভার্ড প্রশাসন এ ধরনের রাজনৈতিক চাপে নতি স্বীকার না করে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, তারা সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা বিসর্জন দেবে না(Harvard University)। কারা পড়বেন, কারা পড়াবেন, কী পড়ানো হবে—এই বিষয়গুলো বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব নীতিমালার আলোকে নির্ধারণ করবে। রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মৌলিক আদর্শের পরিপন্থী বলে তারা মত প্রকাশ করে।এই ঘটনার গভীরে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য স্পষ্ট। ট্রাম্প প্রশাসনের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বামপন্থী আদর্শে প্রভাবিত এবং সরকারের বিরোধিতা করে। ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনতেই এই ধরনের চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে—শিক্ষার স্বাধীনতা কি শুধুই নীতির কথা, না কি তা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ভিত্তিও?

আরও পড়ুন : US Iran Nuclear Talks : পরমাণু চুক্তিকে ঘিরে ফের উত্তেজনা! ইরান সফরে IAEI-প্রধান, জেদে অনড় তেহরান
ছাত্র-ছাত্রীদের ভিসা বাতিল (Harvard University)
বিশ্লেষকদের মতে, এই সংঘাত যুক্তরাষ্ট্রের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শিক্ষা নীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে (Harvard University)। বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের ভিসা বাতিল, গবেষণায় অর্থসঙ্কট, করছাড় বন্ধ—এসব পদক্ষেপ শুধু হার্ভার্ড নয়, গোটা বৈশ্বিক শিক্ষাব্যবস্থার জন্যই অশনিসঙ্কেত।অন্যদিকে, ট্রাম্পের দাবি, জনস্বার্থে কাজ না করে রাজনৈতিক প্রপাগান্ডার মঞ্চ হয়ে উঠেছে হার্ভার্ড। তাই তাকে ‘রাজনৈতিক সংগঠন’ হিসেবে বিবেচনা করে কর আরোপ করা উচিত।এই বিরোধের পরিণতি কী হবে, তা সময় বলবে। তবে এটি স্পষ্ট, শিক্ষার স্বাধীনতা এবং রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের দ্বন্দ্ব এক নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। হার্ভার্ডের দৃঢ় অবস্থান হয়তো ভবিষ্যতের শিক্ষানীতির পথে আলোকবর্তিকা হয়ে উঠতে পারে।