ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ শক্তিপীঠ তারাপীঠে আজ পালিত হচ্ছে ফলহারিণী অমাবস্যা। দেবী তারার বিশেষ রূপ ‘ফলহারিণী’-র আরাধনায় মুখর হয়ে উঠেছে সমগ্র মন্দির প্রাঙ্গণ ও শ্মশান এলাকা (Falaharini Amavasya 2025)। অশুভ ফল নাশ ও মঙ্গলকামনায় এই তিথিকে ঘিরে হাজার হাজার ভক্ত ভোর রাত থেকেই উপস্থিত হয়েছেন তারাপীঠে। মরশুমি ফলের মাধ্যমে সাজানো দেবীর পুজো, বিশেষ অন্নভোগ ও শোভাযাত্রায় জ্যৈষ্ঠ অমাবস্যার এই দিনটি পরিণত হয়েছে এক মহা আধ্যাত্মিক উৎসবে।
আজ জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যা তিথিতে (Falaharini Amavasya 2025), বীরভূমের প্রসিদ্ধ শক্তিপীঠ তারাপীঠ মন্দিরে পালিত হচ্ছে ফলহারিণী অমাবস্যা পুজো। এই পবিত্র তিথিতে ভোর থেকে মন্দির চত্বর এবং আশেপাশের এলাকা ভরে উঠেছে হাজার হাজার ভক্তের উপস্থিতিতে। দেবী মা তারার কৃপা লাভের আশায় দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে এসেছেন ভক্তরা।
ফলহারিণী অমাবস্যার মাহাত্ম্য ও পূজার বিশেষত্ব (Falaharini Amavasya)
হিন্দু ধর্মমতে, জ্যৈষ্ঠ অমাবস্যায় মা তারা ‘ফলহারিণী’ রূপে পূজিত হন। এই রূপে দেবী অশুভ ফল হরণ করে ভক্তদের জীবনে মঙ্গল প্রদান করেন। তাই এই পুজোর নাম ফলহারিণী কালীপুজো। এই দিনে মা তারার পূজায় প্রধান উপাচার হিসেবে ব্যবহৃত হয় নানা ধরনের মরশুমি ফল।
আরও পড়ুন: Weather Report: বর্ষার আগাম আগমন, বাংলার অধিকাংশ জেলায় বজ্রবিদ্যুৎসহ ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা!
মন্দির সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল ১১টা ৭ মিনিটে অমাবস্যা তিথি শুরু হয়েছে এবং তা চলবে মঙ্গলবার সকাল ৮টা ৪৪ মিনিট পর্যন্ত। এই সময়কালেই চলছে মূল পূজা, আরতি ও বিশেষ অন্নভোগের আয়োজন।
দেবীকে ফল দিয়ে সাজানো, বিশেষ ভোগ (Falaharini Amavasya)
ফলহারিণী পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, এদিন দেবী তারার অলঙ্কার, মুকুট, মালা সবই তৈরি হয় ফল দিয়ে। পাঁচটি বা নটি ফল ভক্তরা নিয়ে এসে দেবীকে অর্পণ করেন। পুজোয় দু’বার অন্নভোগ দেওয়া হয়—একবার দিনে ও আবার রাতে। বিশেষ ভোগ হিসেবে থাকে খিচুড়ি, মিশ্র সবজি (লাবড়া), মিষ্টি ও ফলমূল।

তারাপীঠে নজিরবিহীন ভিড় (Falaharini Amavasya)
মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কৌশিকী অমাবস্যার পর ফলহারিণী অমাবস্যাতেই সবচেয়ে বেশি ভিড় হয় তারাপীঠে। সেই কারণে বীরভূম জেলা প্রশাসন ও মন্দির কমিটি যৌথভাবে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। মন্দির চত্বর ও শ্মশান এলাকা জুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী এবং মন্দিরের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক দল।
ভক্তদের বিশ্বাস, এই পুণ্য তিথিতে মা তারাকে ফল নিবেদন করলে জীবনের সমস্ত অশুভতা দূর হয় এবং সৌভাগ্য বৃদ্ধি পায়। এই কারণে প্রতিবছর হাজার হাজার ভক্ত (Falaharini Amavasya), এমনকি দেশের বাইর থেকেও অনেক তীর্থযাত্রী উপস্থিত হন তারাপীঠে।
এই বছরের ফলহারিণী অমাবস্যা পুজো ঘিরে তারাপীঠ যেন এক অন্যরকম ভাবগম্ভীরতায় মোড়া উৎসবস্থলে পরিণত হয়েছে। আধ্যাত্মিকতার আবহে মা তারার উপাসনায় এক হয়ে উঠেছে লক্ষ লক্ষ ভক্তের মন।