ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পহেলগাঁওতে নিরীহ পর্যটকদের ওপর নৃশংস হত্যালীলার জবাবে চালানো হয় ‘অপারেশন মহাদেব।’ সন্ত্রাসবাদী হামলার তিন জঙ্গিই সেনার গুলিতে নিহত। লোকসভায় জানিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ(Army)। তিন জঙ্গির নাম সুলেমান, আফগান এবং জিবরান। ফরেন্সিক পরীক্ষায় প্রমাণ মিলেছে যে, ওই তিন জঙ্গির কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র থেকেই ছোড়া হয়েছিল পহেলগাঁওয়ে ঘটনাস্থলে পাওয়া গুলির খোল ও কার্তুজ।চণ্ডীগড়ের ফরেন্সিক ল্যাবে সেই প্রমাণ মিলেছে।
রাত জেগে পর্যবেক্ষণ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর (Army)
সরকারি সূত্রের মতে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদে জানানোর আগে নিশ্চিত হতে চেয়েছিলেন যে ‘অপারেশন মহাদেবে’ নিহত তিন জঙ্গিই পহেলগাঁও হামলার সঙ্গে জড়িত(Army)। তাই সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত তিনি চণ্ডীগড় ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে ফোন এবং ভিডিও কলের মাধ্যমে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছিলেন।সূত্রের খবর, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভোর ৫টা পর্যন্ত জেগে ছিলেন। তিনি পহেলগাঁওয়ে ঘটনাস্থল থেকে বুলেটের খোলের সঙ্গে নিহত জঙ্গিদের থেকে মেলা বন্দুক, রাইফেলের যে যোগসূত্র রয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য বিজ্ঞানীদের সঙ্গে ক্রমাগত যোগাযোগ রাখছিলেন।বিজ্ঞানীদের সবুজ সংকেত পাওয়ার পরেই মাত্র কয়েক ঘন্টা বিশ্রাম নেন।তারপরে সংসদের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।

সংসদে বড় ঘোষণা অমিত শাহের (Army)
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সোমবার ‘অপারেশন মহাদেব’-এ তিন জঙ্গি নিহত হওয়ার পরে ঘটনাস্থল থেকে একটি এম-৯ মার্কিন রাইফেল এবং দু’টি একে-৪৭ উদ্ধার করা হয়েছে(Army)। ওই অস্ত্র থেকে যে গুলি ছোড়া হয়েছে, তার সঙ্গে মিল রয়েছে পহেলগাঁওয়ের ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার কার্তুজ এবং গুলির খোলের। অমিত শাহ বলেন, ‘সন্দেহের কোনও অবকাশ নেই। আমার কাছে ব্যালিস্টিক রিপোর্ট রয়েছে। তা খতিয়ে দেখে সই করেছেন অন্যতম সেরা বিজ্ঞানীরা। মঙ্গলবার ভোর ৪টে ৪৬ মিনিটে আমাকে ভিডিও কল করা হয়। তাতেই নিশ্চিত করে জানানো হয় যে, পহেলগাঁওয়ের ঘটনাস্থলে ছোড়া গুলি এবং ‘অপারেশন মহাদেব’-এর সময় উদ্ধার রাইফেলের মধ্যে ১০০ শতাংশ মিল রয়েছে।’
‘অপারেশন মহাদেব'(Army)
সোমবার সংসদে যখন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং অপারেশন সিন্দুর নিয়ে বিতর্ক শুরু করেন, তখন উপত্যকা থেকে বড় খবর দেয় ভারতীয় সেনা(Army)। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরের কাছেই দাচিগামের জঙ্গলে অভিযান শুরু করে নিরাপত্তা বাহিনীর চিনার কোর গ্রুপ। সেই অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন মহাদেব’। তবে শুধুই নিরাপত্তা বাহিনী নয়, অপারেশন মহাদেবে যৌথভাবে অভিযান চালায় জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ এবং সিআরপিএফ জওয়ানরা।তার কিছুক্ষণ বাদে দাচিগামের জঙ্গলে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। ভারতীয় সেনার তরফে জানানো হয়, জঙ্গিদের সঙ্গে এনকাউন্টার চলছে। পরে সেনা জানায় অপারেশন মহাদেবে তিনজন জঙ্গিকে নিকেশ করা গিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে পহেলগাঁও হামলার মূল চক্রী লস্কর জঙ্গি সুলেমান।

গোপন সুড়ঙ্গ বন্ধ (Army)
‘অপারেশন মহাদেব’-এ তিন জঙ্গি নিহত হওয়ার পরে ঘটনাস্থল থেকে একটি এম-৯ মার্কিন রাইফেল এবং দু’টি একে-৪৭ উদ্ধার করা হয়(Army)। এরপর জঙ্গিদের দেহ শ্রীনগরে আনা হয়। যাঁরা তাদের খাবার, আশ্রয় রসদ জোগাতেন, তাঁরা শনাক্ত করেন দেহগুলি। কিন্তু কী ভাবে এত দিন জঙ্গিদের কাশ্মীরেই আটকে রাখা হয়েছিল? কেন তিন মাসেও তারা কাশ্মীর ছেড়ে পালাতে পারেনি? সরকারি সূত্র উল্লেখ করে এনডিটিভি জানিয়েছেন, ফাঁদ পাতা হয়েছিল জঙ্গিদের জন্য। কোনও ভাবেই তারা যাতে পালাতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে গোপন সুড়ঙ্গ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তা থেকেই এসেছে সাফল্য।
আরও পড়ুন-Indian exports: রাশিয়া থেকে তেল কেনার ‘সাজা’! ভারতের ওপর ২৫% শুল্ক চাপালেন ট্রাম্পের
বিজ্ঞানীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর (Army)
কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, পহেলগাঁওয়ে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া কার্তুজ আগেই চণ্ডীগড়ের গবেষণাগারে পাঠানো হয়েছিল(Army)। সোমবার ‘অপারেশন মহাদেব’-এ জঙ্গিরা নিহত হলে তাদের অস্ত্রশস্ত্র রাতেই বিশেষ বিমানে করে ওই গবেষণাগারেই পাঠানো হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে গুলির মিল পাওয়া যায়। তারপরেই নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে যে, গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও হামলায় ওই অস্ত্রই ব্যবহার করা হয়েছিল।সূত্রের খবর, এই পুরো প্রক্রিয়া চলাকালীন, চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রস্তুত করে তাঁর হাতে পৌঁছনোর আগে পর্যন্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিজ্ঞানীদের সঙ্গে ক্রমাগত কথা বলছিলেন।
