ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইএফএফ প্রোগ্রামের অধীনে আইএমএফ পাকিস্তানকে (IMF Loan to Pak) মোট ৭ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিতে সম্মত হয়েছে। এখন পর্যন্ত, এটি দুটি পৃথক কিস্তিতে ২.১ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে।
ভারতের আপত্তি উড়িয়ে পাকিস্তানকে অর্থসাহায্য চালিয়ে গেল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF Loan to Pak)
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) জানিয়েছে, ভারত কড়া আপত্তি জানালেও তারা পাকিস্তানকে ১ বিলিয়ন ডলারের নতুন ঋণ দিয়েছে আগেই নির্ধারিত চুক্তির ভিত্তিতে (IMF Loan to Pak)। এই অর্থ সাহায্য ছিল পূর্বনির্ধারিত একটি কর্মসূচির অংশ এবং সেটি নিয়ম মেনেই হয়েছে বলে জানিয়েছে আইএমএফ।
সম্প্রতি ভারত আইএমএফ-কে অনুরোধ করেছিল যাতে পাকিস্তানকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হয়। ভারতের যুক্তি ছিল, পাকিস্তান এখনও সন্ত্রাসবাদকে মদত দেয় এবং সন্ত্রাসবাদীদের নিজেদের মাটিতে আশ্রয় দিয়ে ভারতের নাগরিকদের ওপর হামলা চালাতে সাহায্য করে।
এই আপত্তি বিশেষভাবে উঠে আসে পাহেলগামে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালানোর পরে। এই অভিযানে পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিগুলিতে হামলা চালায় ভারত।
আইএমএফ কী বলেছে (IMF Loan to Pak)
এই প্রসঙ্গে আইএমএফ একটি সাংবাদিক বৈঠকে জানায় (IMF Loan to Pak), পাকিস্তানকে দেওয়া অর্থ সাহায্য ছিল আগেই অনুমোদিত একটি ঋণ কর্মসূচির অংশ এবং তাতে কোনো নিয়ম লঙ্ঘন হয়নি। আইএমএফ-এর কমিউনিকেশন ডিপার্টমেন্টের ডিরেক্টর জুলি কোজাক জানান, “২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পাকিস্তানের ইএফএফ (Extended Fund Facility) প্রোগ্রাম অনুমোদন করে আমাদের নির্বাহী বোর্ড। সেই সময়েই ঠিক হয়, ২০২৫ সালের প্রথম কোয়ার্টারে এই প্রোগ্রামের প্রথম রিভিউ হবে। সেই সময় অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ২৫ মার্চ আইএমএফ ও পাকিস্তান যৌথভাবে একটি স্টাফ-লেভেল এগ্রিমেন্টে পৌঁছায়।”
এই চুক্তি পরে নির্বাহী বোর্ডে পেশ করা হয় এবং ৯ মে তা অনুমোদিত হয়। তারপরেই পাকিস্তান ১ বিলিয়ন ডলারের পরবর্তী কিস্তির ঋণ পায়।
রুটিন পর্যালোচনার ভিত্তিতে টাকা ছাড়া হয়েছে
কোজাক জানান, এটি ছিল সম্পূর্ণ একটি রুটিন পর্যালোচনা। পাকিস্তান কর্মসূচির নির্ধারিত লক্ষ্যগুলি পূরণ করেছে এবং কিছু সংস্কারে অগ্রগতি হয়েছে। এই কারণেই বোর্ড প্রোগ্রামটিকে অনুমোদন করে। তিনি স্পষ্ট করেন, এই ঋণের টাকা পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভে সংরক্ষিত হয় এবং এটি সরকার সরাসরি ব্যবহার করতে পারে না। “এই প্রোগ্রামের অধীনে, এই অর্থ বাজেট ফিনান্সিংয়ের অংশ নয়। সরকার এই অর্থ পায় না বা বাজেট ব্যবহারের জন্য এটি হস্তান্তরিত হয় না,” বলেন কোজাক।
আরও পড়ুন: Turkey: ‘পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদে…,’ তুরস্ককে কড়া বার্তা ভারতের
ব্যবহারে কঠোর নিয়ন্ত্রণ
আইএমএফ জানিয়েছে, এই ঋণ কর্মসূচিতে বেশ কিছু কঠোর শর্ত আরোপ করা হয়েছে যাতে অর্থ অপব্যবহার না হয়। “এই প্রোগ্রামে নিরাপত্তার ব্যবস্থা হিসেবে আন্তর্জাতিক রিজার্ভ জমা করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণের ওপর ‘জিরো টার্গেট’ রয়েছে,” বলেন কোজাক। তিনি আরও বলেন, এই কর্মসূচিতে পাকিস্তানের আর্থিক ব্যবস্থাপনার গুণগত মানোন্নয়নের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে এবং তা স্পষ্টভাবে নথিভুক্ত করা হয়েছে।
৭ বিলিয়ন ডলারের চুক্তির অংশ
আইএমএফ পাকিস্তানকে ইএফএফ কর্মসূচির অধীনে মোট ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যে ২.১ বিলিয়ন ডলার ইতিমধ্যেই দুই ধাপে দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি ১ বিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছে প্রথম রিভিউ সফলভাবে শেষ হওয়ার পর।
আইএমএফ আরও জানিয়েছে, ভবিষ্যতে পাকিস্তান নির্ধারিত শর্ত পূরণ না করলে পরবর্তী কিস্তির অর্থ দেওয়া বন্ধ বা বিলম্বিত হতে পারে।