ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: কানাডার কূটনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সাক্ষী রইল আন্তর্জাতিক মহল (India Canada Relation)। দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নে (Mark Carney) তাঁর প্রথম মন্ত্রিসভার রদবদলে বিদেশমন্ত্রীর পদে নিয়োগ করলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত অনিতা আনন্দকে (Anita Anand)। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও শিল্পমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে তাঁকে এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে বসানো হয়েছে। এই নিয়োগ শুধু কানাডার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেই নয়, আন্তর্জাতিক পরিসরেও তাৎপর্য বহন করছে, বিশেষ করে ভারতের দৃষ্টিকোণ থেকে।
কূটনৈতিক প্রেক্ষাপট (India Canada Relation)
জাস্টিন ট্রুডোর শাসনামলে ভারত-কানাডা সম্পর্ক একাধিকবার টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে (India Canada Relation)। খলিস্তানপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রতি ট্রুডোর প্রশাসনের সহনশীল মনোভাব নয়াদিল্লির অসন্তোষের কারণ হয়েছিল। সেই উত্তপ্ত পর্বের পর একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত, হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারী যখন কানাডার বিদেশনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে আসীন হন, তখন স্বভাবতই তা এক নতুন কূটনৈতিক বার্তা বহন করে। বৃহস্পতিবার বিদেশমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণের সময় অনিতা গীতায় হাত রেখে শপথ নেন, যা ভারতীয় সংস্কৃতির প্রতি তাঁর সংযোগের প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই প্রতীকী পদক্ষেপও নয়াদিল্লির কাছে এক ইতিবাচক বার্তা হিসেবেই ধরা যেতে পারে।
অনিতা আনন্দের পটভূমি (India Canada Relation)
১৯৬৭ সালের ২০ মে, কানাডার নোভা স্কোশিয়ার কেন্টভিলে জন্মগ্রহণ করেন অনিতা (India Canada Relation)। তাঁর বাবা-মা—চিকিৎসক দম্পতি সরোজ ডি রাম এবং এস ভি আনন্দ—ষাটের দশকে ভারত থেকে কানাডায় পাড়ি দেন। অনিতার পিতা তামিল, মা পঞ্জাবি। অর্থাৎ দক্ষিণ ও উত্তর ভারতের সাংস্কৃতিক সংমিশ্রণ রয়েছে তাঁর পরিবারে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী অনিতা ২০১৯ সালে ওকভিল থেকে প্রথম বার হাউস অব কমন্সে নির্বাচিত হন। এর পর ক্রয় ও জনকল্যাণ দফতরের দায়িত্ব পান। কোভিড অতিমারির সময়ে টিকা ও সুরক্ষা সরঞ্জাম আমদানিতে তাঁর নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পরে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও ট্রেজারি বোর্ড প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

আরও পড়ুন: IMF Loan For Pakistan : আইএমএফ-এর ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পেল পাকিস্থান! আড়াল করলো ঋণের পরিমাণ
রাজনৈতিক সম্ভাবনা ও তাৎপর্য (India Canada Relation)
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগের পরে অনিতার নাম সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবেও উঠে এসেছিল (India Canada Relation)। তা থেকেই বোঝা যায়, লিবারেল পার্টির অভ্যন্তরে তিনি কতটা প্রভাবশালী। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিদেশমন্ত্রী হিসেবে তাঁর ভূমিকা শুধু আন্তর্জাতিক সম্পর্কই নয়, ভবিষ্যতের কানাডার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে।

আরও পড়ুন: Harvard University : হার্ভার্ডকে ২০০ কোটির পর আরও ৪৫ কোটির আর্থিক অনুদান বন্ধ করলো ট্রাম্প প্রশাসন!
ভারতের প্রেক্ষাপটে আশার আলো? (India Canada Relation)
অনিতার নতুন দায়িত্ব গ্রহণে ভারত আশাবাদী হতে পারে (India Canada Relation)। তাঁর ভারতীয় শিকড়, ধর্মীয় পরিচয়, এবং ভারসাম্যপূর্ণ নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা কানাডার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়ক হতে পারে। তবে তা নির্ভর করবে কানাডার বর্তমান সরকারের ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ ও অবস্থানের উপর। সব মিলিয়ে, অনিতা আনন্দের বিদেশমন্ত্রী হিসেবে পদোন্নতি শুধু কানাডার রাজনীতির নয়, আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক অঙ্গনের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ ও দৃষ্টিগ্রাহ্য ঘটনা। তাঁর নেতৃত্বে কানাডা-ভারত সম্পর্ক কতটা নতুন মাত্রা পায়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।