ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যার স্থায়ী সমাধান সহজ নয়—এই বার্তা দিল চিন। সোমবার চিনা বিদেশমন্ত্রক স্পষ্ট করে জানায়, সীমান্ত নির্ধারণের মতো বিষয় জটিল এবং সময়সাপেক্ষ (India China Boder Dispute)। তবে সেই সঙ্গেই চিন আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাধানে আগ্রহী বলে জানান বিদেশমন্ত্রক মুখপাত্র মাও নিং। তিনি বলেন, “সীমান্ত নির্ধারণের বিষয়ে আলোচনা চালানোর জন্য চিন সর্বদা প্রস্তুত।”চিনের এই বার্তা এসেছে ঠিক তখনই, যখন সীমান্ত সমস্যা নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে আবার কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে সক্রিয় আলোচনা শুরু হয়েছে।
রাজনাথ-ডং বৈঠকের পরেই প্রতিক্রিয়া (India China Boder Dispute)
গত ২৬ জুন চিনের কিংডাওতে এসসিও প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সম্মেলনের ফাঁকে চিনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডং জ়ুন-এর সঙ্গে বৈঠকে বসেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ (India China Boder Dispute)। সেখানে সীমান্ত সমস্যার জটিল অংশগুলির নিরসনে একটি ‘সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ’ তৈরির উপর জোর দেন রাজনাথ। সেই প্রেক্ষিতে শি জিনপিং সরকারের এই বার্তা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।
পূর্ব লাদাখে এখনও মেটেনি সমস্যা (India China Boder Dispute)
২০২০ সালের এপ্রিল থেকে পূর্ব লাদাখের এলএসি (Line of Actual Control)-তে একাধিকবার অনুপ্রবেশের অভিযোগ ওঠে চিনা সেনার (People’s Liberation Army) বিরুদ্ধে (India China Boder Dispute)। সেই বছরের ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষে শহিদ হন ২০ জন ভারতীয় সেনা (INDIAN ARMY)। পাল্টা প্রতিরোধে হতাহতের ঘটনা ঘটে চিনা সেনার মধ্যেও। এর পর থেকেই শুরু হয় দফায় দফায় সামরিক ও কূটনৈতিক বৈঠক। ২০২১ সালে চুশুল-মলডো এলাকায় কোর কমান্ডার স্তরে কিছু এলাকায় সেনা পিছনো ও কমানোর বিষয়ে সমঝোতা হলেও ফিঙ্গার এরিয়া, ডেপসাং উপত্যকা ও ডেমচক-সহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলির সমস্যা এখনো অমীমাংসিত।

আরও পড়ুন: Trump VS Musk : মার্কিন রাজনীতিতে ‘ট্রাম্প বনাম মাস্ক’ সংঘাত! ‘আমেরিকা পার্টি’ তৈরির ইঙ্গিত ইলনের
কূটনৈতিক স্তরে আলোচনার অগ্রগতি (India China Boder Dispute)
২০২4 সালের মার্চে বেজিংয়ে অনুষ্ঠিত হয় ‘ডব্লিউএমসিসি’ (Working Mechanism for Consultation and Coordination)-এর ৩৩তম বৈঠক (India China Boder Dispute)। সেখানে এলএসি ঘিরে ‘টহলদারির সীমানা’ নির্ধারণ এবং দ্বিপাক্ষিক সমস্যা নিরসনে আলোচনা হয়। যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, উভয় দেশ শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখার লক্ষ্যেই কাজ করছে। এছাড়া, চলতি বছরের শেষেই দিল্লিতে ‘বিশেষ প্রতিনিধি স্তরে’ একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে, যেখানে সীমান্ত সমস্যা মেটাতে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের রূপরেখা স্থির হতে পারে।
কৈলাস-মানস যাত্রা চালুর ঘোষণাও কূটনৈতিক বার্তা (India China Boder Dispute)
চিন-ভারত সম্পর্কে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন হিসেবে চিন গত মার্চেই ঘোষণা করে, ২০২০ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া কৈলাস-মানস যাত্রা ফের চালু করা হবে। একে কূটনৈতিক মহল ‘বিশ্বাস পুনর্গঠনের পদক্ষেপ’ হিসেবেই দেখছে।

আরও পড়ুন: India US Trade Talks : ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে, বড় ঘোষণা হতে পারে ৮ জুলাই?
ধৈর্যের পরীক্ষা চলছেই (India China Boder Dispute)
চিনের বার্তায় স্পষ্ট—তারা আলোচনায় রাজি, তবে সমাধান যে দ্রুত আসবে না, তাও বুঝিয়ে দিয়েছে (India China Boder Dispute)। সীমান্ত সমস্যার সমাধান কেবল সামরিক বা কূটনৈতিক স্তরের আলোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে দুই দেশের নিরাপত্তা, ভূকৌশল এবং রাজনৈতিক সমঝোতা। এই প্রেক্ষিতে দিল্লি-বেজিং আলোচনা যে এখনো বহু পথ চলার অপেক্ষায়, তা বলাই যায়। তবে যোগাযোগের দরজা খোলা থাকাটাই এই মুহূর্তে আশার ইঙ্গিত।