ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: সীমান্তে সাময়িক সংঘর্ষবিরতি কার্যকর হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদ (India Pakistan Conflict)। পাকিস্তানের বাণিজ্যিক রাজধানী করাচিতে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে এক প্রকাশ্য জনসভা, যেখানে লশকর-ই-তইয়বা (LeT), আহলে-সুন্নত ওয়াল জামাত (ASWJ), জামাত-উদ-দাওয়া (JuD)-এর মতো নিষিদ্ধ সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের নেতারা ভারতকে সরাসরি হুমকি দিয়েছে। সভাটি হয় ‘দিফা-ই-ওয়াতন কাউন্সিল’ (DWC)-এর ব্যানারে, যা পূর্বে একাধিকবার পাকিস্তানে জঙ্গিদের ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
কারা উপস্থিত ছিলেন? (India Pakistan Conflict)
এই সভায় উপস্থিত ছিলেন একাধিক কট্টরপন্থী ধর্মীয় নেতা, যাঁরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রশংসা করেন এবং ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ নিহত জঙ্গিদের শহিদ বলে আখ্যা দেন (India Pakistan Conflict)। ভারতের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেওয়া হয় এবং ‘উচিত জবাব’ দেওয়ার হুমকি ছুড়ে দেন বক্তারা। চমকপ্রদভাবে, সভায় ছিল পাক পুলিশের নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থাও—যা ইঙ্গিত দেয় পাকিস্তানের রাষ্ট্রযন্ত্র এই সংগঠনগুলির কার্যকলাপের প্রতি সহানুভূতিশীল।
‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযান (India Pakistan Conflict)
উল্লেখযোগ্যভাবে, এই জনসভা ঘটে এমন এক সময়ে, যখন মাত্র কয়েক দিন আগে ভারত সফলভাবে ‘অপারেশন সিঁদুর’ সামরিক অভিযান সম্পন্ন করেছে (India Pakistan Conflict)। ২২ এপ্রিল পহেলগাম পর্যটন কেন্দ্রে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন ভারতীয় ও বিদেশি পর্যটক নিহত হন। এর পাল্টা জবাবে, ভারতীয় সেনা (INDIAN ARMY) ৬ ও ৭ মে পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও পাক পাঞ্জাবে লশকর ও জইশ ঘাঁটিতে একযোগে মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালায়। অভিযানে প্রায় ১০০ জন জঙ্গি নিহত হয়, ধ্বংস হয় লশকরের সদর দপ্তর ‘মার্কাজ-তইবা’, এবং মৃত্যু হয় কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী আবু জুন্দলের।

আরও পড়ুন: India Pakistan Tensions : ভারতের প্রতিশোধের আশঙ্কা ইমরানের, জেল থেকেই করলেন সাবধান!
ন্ত্রাসবাদী সমাবেশ সীমান্তে (India Pakistan Conflict)
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ৩ দিনের উত্তপ্ত সংঘর্ষের পর আমেরিকার মধ্যস্থতায় ১০ মে থেকে কার্যকর হয় সংঘর্ষবিরতি (India Pakistan Conflict)। কিন্তু সংঘর্ষবিরতির পরপরই করাচির সভা এবং প্রকাশ্য সন্ত্রাসবাদী সমাবেশ সীমান্তে স্থায়ী শান্তির আশা ম্লান করে দিচ্ছে। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং আইএসআই আবার সন্ত্রাসবাদকে কৌশলগত হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করেছে। এর ফলে সীমান্তে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা প্রবল।

আরও পড়ুন: Pakistani journalist: বিশ্বের সামনে ফের মুখ পুড়ল পাকিস্তানের
অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা (India Pakistan Conflict)
নতুন করে মাথাচাড়া দেওয়া এই সন্ত্রাসী জোটগুলি শুধুমাত্র ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য হুমকি নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতাকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিচ্ছে (India Pakistan Conflict)। বিশ্লেষকরা বলছেন, পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা, সেনাবাহিনীর আধিপত্য এবং আন্তর্জাতিক চাপে কোণঠাসা ইমেজ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা থেকেই এ ধরনের জনসভার অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে।
পাকিস্তানের দ্বিচারিতা (India Pakistan Conflict)
পাকিস্তানের এই দ্বিচারিতাভারত ইতিমধ্যেই জাতিসংঘ সহ আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মঞ্চে পাকিস্তানের এই দ্বিচারিতা তুলে ধরার উদ্যোগ শুরু করেছে । পাশাপাশি সীমান্তে গোয়েন্দা নজরদারি এবং সম্ভাব্য সন্ত্রাসী অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাহিনীকে সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছে।বিশেষজ্ঞদের মত, পাকিস্তানে যদি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলিকে লাগামছাড়া ভাবে কাজ করতে দেওয়া হয়, তাহলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের সীমান্ত সংঘর্ষ বা জঙ্গি হামলার আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এই পরিস্থিতিতে শুধু সামরিক পদক্ষেপ নয়, আন্তর্জাতিক চাপ ও কূটনৈতিক কৌশলও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।