ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল : কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর বর্বর জঙ্গি হামলার পর ভারত যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত(India Pakistan Conflict), ঠিক সেই সময়ে আন্তর্জাতিক সহায়তার ক্ষেত্রে ভারতের দীর্ঘদিনের দুই ঘনিষ্ঠ বন্ধু—রাশিয়া ও ইজ়রায়েল—ব্যতিক্রমী এক বাস্তবতায় মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে (India Pakistan Conflict)।
অস্ত্র সাহায্য পাবে? (India Pakistan Conflict)
কূটনৈতিক পরিসরে পরিষ্কার, এই দুই দেশ আপাতত তাদের নিজস্ব যুদ্ধ ও সংকটেই এতটাই নিমগ্ন যে ভারতের সঙ্গে দ্রুত বা বড় মাপের সামরিক সমর্থনের সম্ভাবনা ধূসর হয়ে উঠেছে (India Pakistan Conflict)।ভারতের প্রতিরক্ষা এবং কৌশলগত নিরাপত্তা বলয়ের দীর্ঘ ইতিহাসে রাশিয়া এবং ইজ়রায়েলের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। প্রয়োজনের মুহূর্তে এই দুই রাষ্ট্র ভারতকে আধুনিক অস্ত্র, নজরদারি প্রযুক্তি এবং গোয়েন্দা সহায়তা দিয়ে এসেছে। কিন্তু পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পরে ভারতের কাছ থেকে পাওয়া বার্তার জবাবে দুই দেশের সাড়া যেন আগের মতো সক্রিয় নয়।
রাশিয়ার মুখ ঘোরানো ও মোদীর সফর বাতিল (India Pakistan Conflict)
রাশিয়া বর্তমানে ইউক্রেন যুদ্ধের ক্লান্তিকর গহ্বরে জড়িয়ে রয়েছে। যুদ্ধের চাপ এতটাই যে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের মজুত এখন দেশের অভ্যন্তরেই নিবদ্ধ (India Pakistan Conflict)। এমন অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) তাঁর পূর্বনির্ধারিত রাশিয়া সফর বাতিল করেছেন। ৯ মে রাশিয়ার ‘বিজয় দিবস কুচকাওয়াজ’-এ মোদীর অংশগ্রহণ নিয়ে যে জল্পনা ছিল, তা এখন নিষ্প্রভ। ক্রেমলিনের তরফে জানানো হয়েছে, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর পরিবর্তে একজন কূটনৈতিক প্রতিনিধি উপস্থিত থাকতে পারেন।যদিও রাশিয়া এক তরফে সাময়িক যুদ্ধবিরতির কথা ঘোষণা করেছে মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে, তাও কোনও আশ্বাস দিচ্ছে না যে তারা খুব তাড়াতাড়ি অন্য দেশকে সামরিক সহায়তা দিতে সক্ষম হবে। কূটনৈতিক মহলের বক্তব্য, যুদ্ধ থামলেও রাশিয়ার অস্ত্র উৎপাদন ও সরবরাহ স্বাভাবিক হতে অন্তত তিন মাস সময় লাগবে।

ইজ়রায়েলের সমর্থন (India Pakistan Conflict)
ইজ়রায়েলের দৃষ্টিভঙ্গিতে ভারতের সঙ্গে সংহতি বজায় থাকলেও কার্যকর সমর্থন এখন অনিশ্চিত(India Pakistan Conflict)। ভারতে নিযুক্ত ইজ়রায়েলের রাষ্ট্রদূত রুভেন আজ়ার স্পষ্টভাবেই পহেলগাঁও হামলার তুলনা করেছেন ২০২৩ সালের হামাসের হামলার সঙ্গে। তাঁর মতে, উভয় ক্ষেত্রেই নাগরিক জীবনকে লক্ষ্য করে সুপরিকল্পিত জঙ্গি হানা চালানো হয়েছে। তবে সেই আবেগময় তুলনার বাইরে আর কোনও কার্যকর নিরাপত্তা সহযোগিতার খবর নেই।বর্তমানে ইজ়রায়েল নিজেই গাজা এবং লেবানন সীমান্তে ক্রমাগত সংঘর্ষে জড়িত। দেশটির সেনাবাহিনী অভ্যন্তরীণ সুরক্ষা ও হামাসের বিরুদ্ধে অভিযানে ব্যস্ত। এই অবস্থায় ভারতীয় সেনার সঙ্গে সমন্বিত অপারেশন বা প্রযুক্তিগত সহায়তা আদৌ সম্ভব নয় বলেই কূটনীতিকরা মনে করছেন।

আরও পড়ুন: Pak National Died : ভারত ছাড়তে বাধ্য পাক নাগরিকের ফেরার পথে মৃত্যু! আগেই শেষ হয়েছিল ভিসার মেয়াদ
কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জে ভারত (India Pakistan Conflict)
এই পরিস্থিতি ভারতের জন্য এক জটিল কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ(India Pakistan Conflict)। একদিকে যুদ্ধোন্মুখ প্রতিবেশী, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মিত্রদের ব্যস্ততা—একে চাপে ফেলছে দিল্লিকে। যদিও আমেরিকা পরিস্থিতি শান্ত করতে মধ্যস্থতা করছে, তবুও বাস্তব হলো, প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির ক্ষেত্রে ভারতের ভরসার জায়গাগুলো আপাতত ঝাপসা।এই প্রেক্ষিতে ভারতকে হয়তো নিজস্ব অস্ত্রশিল্প ও বিকল্প জোটের দিকে নজর দিতে হবে। দক্ষিণ কোরিয়া, ফ্রান্স কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা চুক্তির বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করা এখন সময়ের দাবি।