ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের শঙ্কা আরও ঘনীভূত হল ইজরায়েলের সাম্প্রতিক হামলায়। ইরানের বৃহত্তম ইউরেনিয়াম কেন্দ্র ‘নাতানজ’-এ শুক্রবার সকালেই বিমানহানা চালায় ইজ়রায়েল, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন রাইসিং লায়ন’(Iran Israel Conflict)। এই অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ও সামরিক ঘাঁটি।
নাতানজে ভয়াবহ ধ্বংস, নিহত পরমাণু বিজ্ঞানী (Iran Israel Conflict)
ইজরায়েলি সেনা বাহিনী (IDF) দাবি করেছে, তাদের টার্গেট করা হামলায় ইরানের ছয় জন শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী প্রাণ হারিয়েছেন(Iran Israel Conflict)। নাতানজ, যা তেহরান থেকে প্রায় ২২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত, বহুদিন ধরেই ইরানের পরমাণু কার্যকলাপের কেন্দ্রবিন্দু। সাধারণত, পরমাণু বোমা তৈরির জন্য প্রয়োজন হয় ৯০ শতাংশ পরিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম—যার লক্ষ্যেই বহু বছর ধরেই পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে কার্যক্রম চালিয়ে এসেছে তেহরান।
সামরিক কাঠামোয় বিস্ফোরণ, নিহত শীর্ষ সেনাকর্তা (Iran Israel Conflict)
এই একই অভিযানে ইরানের রেভলিউশনারি গার্ড কমান্ডার হোসেন সালামি নিহত হয়েছেন, বলে জানিয়েছে দেশটির সরকারি সংবাদমাধ্যম(Iran Israel Conflict)। পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মহম্মদ হোসেন বাগেরিও নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ইজরায়েল। যদিও ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এই খবর এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেনি।সালামি এবং বাগেরি—দু’জনই ইরান-ইরাক যুদ্ধের প্রাক্তন সেনা, আমেরিকা ও ইজরায়েলের কড়া সমালোচক এবং দেশের পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র নীতির মূল কারিগর।

আরও পড়ুন: Iran Israel Conflict : ইজরায়েলি হামলায় নিহত ইরানের দুই শীর্ষ সেনাকর্তা, মধ্যপ্রাচ্যে চরম উত্তেজনা
ইরানের হুঁশিয়ারি (Iran Israel Conflict)
ইজরায়েলের (Benjamin Netanyahu) এই আকস্মিক ও ভয়াবহ হামলার পর চরম হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই (Iran Israel Conflict)। তাঁর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ইজরায়েলকে এই আগ্রাসনের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। খারাপ পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকো।” তেহরানের সামরিক সূত্রের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, ইরান এখন ইজরায়েলে পাল্টা হামলার পরিকল্পনা করছে।ইজরায়েল ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে, সম্ভাব্য ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোন হামলার আশঙ্কায়।
অপারেশন রাইসিং লায়নের উদ্দেশ্য ও কৌশল (Iran Israel Conflict)
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইজরায়েল এই হামলা চালিয়েছে ‘প্রি-এম্পটিভ স্ট্রাইক’ হিসেবে, অর্থাৎ পরমাণু অস্ত্রে ইরানের সক্ষমতা লাভের আগেই তা ধ্বংস করে দেওয়া। এটি আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বিতর্কিত হলেও, ‘আত্মরক্ষার স্বার্থে’ এই হামলা চালানোর দাবি করেছে জেরুজালেম।IDF সূত্রে জানা গিয়েছে, সুনির্দিষ্ট স্যাটেলাইট গোয়েন্দা তথ্য ও সাইবার নজরদারির মাধ্যমে পরিকল্পনা করে এই আক্রমণ চালানো হয়েছে, যাতে ইরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় হওয়ার আগেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা যায় পরমাণু অবকাঠামো।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া (Iran Israel Conflict)
এই ঘটনার জেরে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং রাশিয়া(Iran Israel Conflict)। হোয়াইট হাউস থেকেও জানানো হয়েছে, “সহিংসতা যেন পরমাণু যুদ্ধের দিকেই এগিয়ে না যায়।” বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান যদি জবাবি হামলা করে, তাহলে এই সংঘাত লেবানন, সিরিয়া এবং পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। সেইসঙ্গে, বিশ্বব্যাপী তেলের দাম, বাজার ও ভূ-রাজনৈতিক সম্পর্কেও এর মারাত্মক প্রভাব পড়বে। নাতানজে ইজ়রায়েলের হামলা শুধু একটি সামরিক কৌশল নয়,এটি সম্ভবত আগামী দিনের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের সূচনা বিন্দু। এখন নজর থাকবে তেহরানের প্রতিক্রিয়ার দিকে—যা স্থির করবে এই সংঘাত আঞ্চলিক থাকবে, না ছড়িয়ে পড়বে বিশ্বব্যাপী।