ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পশ্চিম এশিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতি নতুন মোড়ে। ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যেকার সংঘর্ষ অষ্টম দিনে গড়াল(Iran Israel Conflict)। এ বার এই দ্বন্দ্বে স্পষ্ট বার্তা দিলেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু— আমেরিকা পাশে থাক বা না-থাক, ইজরায়েল একাই ইরানের পরমাণুঘাঁটি ধ্বংসে সচেষ্ট থাকবে। বৃহস্পতিবার এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, “আমাদের হাতে যথেষ্ট সামরিক শক্তি রয়েছে। ইরানের সব পরমাণুঘাঁটিতে হামলা চালানো হবে। অন্য দেশের অনুমতির দরকার নেই আমাদের। ইজরায়েলের স্বার্থই এখানে মুখ্য। ট্রাম্প (Donald J. Trump) আমেরিকার জন্য যা ভালো মনে করবেন, তা করবেন। আমি ইজরায়েলের জন্য যা দরকার, সেটাই করব।”
ট্রাম্প আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন (Iran Israel Conflict)
অন্য দিকে, হোয়াইট হাউস থেকে প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন— আমেরিকা সরাসরি ইরান-বিরোধী সামরিক অভিযানে অংশ নেবে কি না (Iran Israel Conflict)। তাঁর ভাষায়, “ইরানের সঙ্গে বোঝাপড়ার একটা সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সেই পথে যাব কি না, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।”এরই মধ্যে, দু’দেশের মধ্যে চলা সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন ইরানের চার শীর্ষ সেনা আধিকারিক এবং ন’জন পরমাণু বিজ্ঞানী। ইজরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হানায় চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একাধিক পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরানও দফায় দফায় ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার ইরানের একটি ক্ষেপণাস্ত্র গিয়ে পড়ে ইজরায়েলের একটি হাসপাতালে। ইরানের তরফে জানানো হয়েছে, তাদের নিশানায় ছিল সামরিক ঘাঁটি, হাসপাতাল নয়(Iran Israel Conflict)।
ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ ইরানে (Iran Israel Conflict)
সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে ইরানের অভ্যন্তরেও। শুক্রবার ভোরে কাস্পিয়ান সাগরের ধারে রাশ্ট শহরে ইজরায়েলের একটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে (Iran Israel Conflict)। ঘটনার আগে ইজরায়েলের সেনা বাহিনী সতর্কবার্তা দিয়েছিল— নিরাপদ স্থানে সরতে বলা হয় বাসিন্দাদের। কিন্তু ইরানে ইন্টারনেট পরিষেবা বহু জায়গায় বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষের কাছে সেই বার্তা আদৌ পৌঁছেছিল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এই সংঘাতের সূচনায় ছিল আমেরিকার নেপথ্য সমর্থন। শুক্রবারের প্রথম হামলার আগে ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর মধ্যে দীর্ঘ ফোনালাপও হয়। তবে এখন ট্রাম্প প্রশাসন কিছুটা পিছু হটেছে বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল। অথচ ইজরায়েল কোনও ধরনের সামরিক চাপ বা আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার পরোয়া না করেই যুদ্ধ চালিয়ে যেতে প্রস্তুত(Iran Israel Conflict)।

ইজরায়েলের নির্ভীক অবস্থান (Iran Israel Conflict)
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই পাল্টা বার্তায় হুঁশিয়ারি দিয়েছেন,“ইরান কখনও মাথা নোয়াবে না। যারা আগ্রাসন চালাবে, তাদের ভয়ঙ্কর পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে(Iran Israel Conflict)।”ইজরায়েলের নির্ভীক অবস্থান এবং ইরানের প্রতিরোধ— দুই মেরুতে দাঁড়িয়ে রয়েছে দুই রাষ্ট্র। আমেরিকা এখন দ্বিধায়— তারা এই আগুনে সরাসরি জড়াবে কি না, তা নিয়ে চিন্তায় ট্রাম্প প্রশাসন। ফলে, পশ্চিম এশিয়ার সংকট আর শুধু অঞ্চলিক যুদ্ধের সীমায় নেই, তা এখন আন্তর্জাতিক কূটনীতির এক বিপজ্জনক কেন্দ্রবিন্দু।