ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ সপ্তম দিনে পৌঁছেই আরও ভয়াবহ মোড় নিল। বৃহস্পতিবার সকালেই ইজরায়েল হামলা চালায় ইরানের আরাক পরমাণুকেন্দ্রে (Iran Israel conflict)। পাল্টা প্রত্যাঘাতে ইরানের তরফে একের পর এক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয় ইজরায়েলের দিকে। লক্ষ্য হয় হাসপাতাল, জনবসতি ও অর্থনৈতিক কেন্দ্র। সংঘাতে ইতিমধ্যেই জখমের সংখ্যা ৬৫ ছাড়িয়েছে।
আরাক পরমাণুকেন্দ্রে ইজরায়েলের হামলা (Iran Israel conflict)
সকালে ইজরায়েলি বিমানবাহিনী আক্রমণ চালায় ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পরমাণুকেন্দ্র আরাকে (Iran Israel conflict)। এই কেন্দ্রটি বহুদিন ধরেই পশ্চিমি দেশের নজরকাড়া জায়গা, যেখানে প্লুটোনিয়াম উৎপাদনের আশঙ্কা ঘিরে বিতর্ক রয়েছে। এই হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইরানের দিক থেকে পাল্টা জবাব আসে ক্ষেপণাস্ত্র হানার মাধ্যমে।
সোরোকা হাসপাতালে ইরানের পাল্টা আঘাত (Iran Israel conflict)
দক্ষিণ ইজরায়েলের বেরশেবা শহরের সোরোকা মেডিক্যাল সেন্টারে আছড়ে পড়ে একটি ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র (Iran Israel conflict)। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়ো এবং ছবিতে হাসপাতাল চত্বর থেকে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা গিয়েছে। ইজরায়েলি জরুরি পরিষেবার বিবৃতিতে জানানো হয়, হামলায় অন্তত ৬৫ জন আহত হয়েছেন। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু (Benjamin Netanyahu) বলেন,“তেহরানের সন্ত্রাসবাদী শাসকরা নিরীহ মানুষের হাসপাতাল লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। এর চরম মূল্য দিতে হবে তাদের।” একই সুর প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইজরায়েল কাৎজ এবং বিদেশমন্ত্রকের তরফ থেকেও উঠে এসেছে।

ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রে ছয় শহরে আঘাত (Iran Israel conflict)
ইজরায়েলি সেনা সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তেল আভিভ, বেরশেবা, নেস জিয়োনা, রামাতে গণ, গাভ-ইয়াম এবং আশদোদের মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরে কমপক্ষে ‘কয়েক ডজন’ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়ে। তেল আভিভের স্টক এক্সচেঞ্জ ভবনেও ক্ষেপণাস্ত্র হানার দাবি করেছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
ইরানের পাল্টা দাবি (Iran Israel conflict)
অন্যদিকে, ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা INRA দাবি করেছে, ইজরায়েলি সেনার কমান্ড অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স (IDF CI) দফতরে সফল হামলা চালানো হয়েছে। তেল আভিভের গাভ-ইয়াম এলাকায় সেনার গোপন গোয়েন্দা কার্যালয়েও বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তাদের মতে, মূল টার্গেট ছিল ইজরায়েলের সামরিক পরিকাঠামো, সাধারণ মানুষের নয়। সোরোকা হাসপাতালে যে হামলা হয়েছে, তা নেহাতই ‘কল্যাটারাল ড্যামেজ’ বলেই দাবি করেছে ইরান।

উত্তেজনায় টগবগ করছে পশ্চিম এশিয়া (Iran Israel conflict)
এই সংঘাতকে ঘিরে ফের চাপে আন্তর্জাতিক কূটনীতি। আমেরিকা, রাশিয়া, চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন মহল যুদ্ধ বন্ধে আহ্বান জানালেও, কোনও পক্ষই আপসের পথে আসার ইঙ্গিত দিচ্ছে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরানের পরমাণু কেন্দ্রে ইজরায়েলের এই বারবারের ‘প্রিভেন্টিভ স্ট্রাইক’-এর কড়া জবাব দিতেই এ বার হাসপাতাল ও জনবসতি পর্যন্ত হামলার পরিধি বাড়িয়েছে ইরান।
যুদ্ধের মুখে মানবতা (Iran Israel conflict)
অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের মাঝখানে সবচেয়ে বড় ধাক্কা খাচ্ছে সাধারণ মানুষ ও স্বাস্থ্য পরিকাঠামো(Iran Israel conflict)। যুদ্ধ বিধ্বস্ত মধ্য প্রাচ্যে বৃহস্পতিবারের ঘটনা স্পষ্ট করে দিল, সংঘাত এখন আর শুধু সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে নেই — সেটি পৌঁছে গিয়েছে হাসপাতালের বেড, স্টক এক্সচেঞ্জের লিফট এবং সাধারণ মানুষের ঘরের দরজায়। পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায়, তা নির্ভর করছে পরবর্তী কয়েক দিনের কূটনৈতিক উদ্যোগ ও সামরিক পরিসরের উপর। কিন্তু আপাতত যুদ্ধ থামার কোনও লক্ষণ নেই।