ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মধ্যপ্রাচ্যে ফের যুদ্ধের আশঙ্কা। ইজরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান সংঘর্ষের আবহে এবার নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল পাকিস্তানের বিস্ফোরক মন্তব্যে (Iran Israel Conflict)। ইরানের এক শীর্ষ সেনা আধিকারিক জানিয়েছেন, ইজরায়েল যদি তেহরানে পারমাণবিক হামলা চালায়, তবে পাকিস্তানও পারমাণবিক অস্ত্রে জবাব দেবে। এই হুঁশিয়ারির ফলে আঞ্চলিক সংঘাত বিশ্বব্যাপী সংকটের রূপ নিতে পারে বলে উদ্বেগ বাড়ছে কূটনৈতিক মহলে।
পাকিস্তানের হুশিয়ারি (Iran Israel Conflict)
ইরানের ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কোর (IRGC)-এর সিনিয়র জেনারেল মোহসেন রেজাই সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “পাকিস্তান প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, ইজরায়েল (Benjamin Netanyahu) যদি ইরানে পারমাণবিক অস্ত্র প্রয়োগ করে, তাহলে তারাও পারমাণবিক হামলা চালাবে ইজরায়েলে(Iran Israel Conflict)।” যদিও পাকিস্তানের কোনও শীর্ষ সরকারি মুখ এখনো পর্যন্ত এ ধরনের হুমকি প্রকাশ্যে দেননি, তবু রেজ়াইয়ের মন্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
অপারেশন রাইজিং লায়ন (Iran Israel Conflict)
গত ১৩ জুন ইজরায়েল ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে একটি সামরিক অভিযানের অংশ হিসেবে ইরানের একাধিক পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় (Iran Israel Conflict)। এই হামলায় ইরানে অন্তত ৭৮ জনের মৃত্যু হয় বলে দাবি করা হয়েছে। ইরান পাল্টা প্রতিশোধ নেয় ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস ৩’-এর মাধ্যমে, যার ফলে ইজরায়েলেও অন্তত ১৪ জনের প্রাণহানি ঘটে। এই পাল্টাপাল্টি হামলায় দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

ইরানের জনগণের পাশে পাকিস্তান (Iran Israel Conflict)
এই প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এসেছে জোরালো প্রতিক্রিয়া (Iran Israel Conflict)। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার ইজরায়েলের আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা করে বলেন, “এই সংকটময় সময়ে পাকিস্তান ইরানের জনগণের পাশে রয়েছে।” অন্যদিকে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ আরও কড়া সুরে বলেন, “ইজরায়েল শুধু ইরান নয়, ইয়েমেন ও প্যালেস্টাইনকেও টার্গেট করছে। মুসলিম দেশগুলির এখনই একজোট হওয়া প্রয়োজন। নয়তো, একে একে সকলকেই একই পরিণতির শিকার হতে হবে।”

সাধারণ মানুষ আতঙ্কে (Iran Israel Conflict)
বিশ্লেষকরা বলছেন, পাকিস্তানের এই অবস্থান শুধু কূটনৈতিক নয়, বরং কৌশলগত। মুসলিম বিশ্বের মধ্যে নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা এবং ইরানের সঙ্গে মিত্রতা জোরদার করাই এর অন্যতম উদ্দেশ্য। তবে এক পারমাণবিক শক্তিধর দেশের পক্ষ থেকে এ ধরনের হুমকি গোটা বিশ্বের নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক। জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা দ্রুত হস্তক্ষেপ না করলে এই সংঘাত বিশ্বযুদ্ধের রূপ নিতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আমেরিকা, রাশিয়া, চীন— সবাই নিরবিচারে নজর রাখছে পরিস্থিতির ওপর, কিন্তু এখনো পর্যন্ত কার্যকর হস্তক্ষেপের কোনো ইঙ্গিত মেলেনি। যুদ্ধের আবহে সাধারণ মানুষ আতঙ্কে। পশ্চিম এশিয়ার রাজনীতি ও ধর্মীয় বিভাজনের উপর এই সংঘাতের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। এখন দেখার, এই সংকট কোন দিকে মোড় নেয়— শান্তির দিকে, না পরমাণু ধ্বংসের পথে।