ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইরানের পরমাণুকেন্দ্রে মার্কিন হামলার ক্ষয়ক্ষতি কতটা? এই প্রশ্নে আমেরিকার অভ্যন্তরে তীব্র বিভ্রান্তি এবং রাজনৈতিক টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে(Iran Israel Conflict)। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald J. Trump) দাবি করেছেন, “এই হামলা ছিল হিরোশিমা-নাগাসাকির সমতুল্য। ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামো প্রায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।” কিন্তু একইসঙ্গে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-র একটি প্রাথমিক রিপোর্টে জানানো হয়েছিল, হামলার ফলে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি মাত্র কয়েক মাস পিছিয়েছে।
সিএনএন ও নিউ ইয়র্ক টাইমসের রিপোর্টে বিস্ফোরণ (Iran Israel Conflict)
বিভ্রান্তির সূচনা মঙ্গলবার(Iran Israel Conflict)। সিএনএন ও নিউ ইয়র্ক টাইমস একটি গোপন মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্ট তুলে ধরে জানায়—
“ইরানের ফোরডো, নাতান্জ এবং ইসফাহান পরমাণুকেন্দ্রে মার্কিন হামলায় প্রবেশপথ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ভূগর্ভস্থ মূল স্থাপনাগুলি ধ্বংস হয়নি। কর্মসূচি পিছিয়েছে বড়জোর ছ’মাস।”
এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই ট্রাম্প তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান। তাঁর দাবি, “গোয়েন্দারা আসলে জানেই না। এটি ছিল এক ঐতিহাসিক আঘাত। এর অভিঘাত ভবিষ্যৎ কয়েক দশক চলবে।”
সিআইএ প্রধানের মতবদল (Iran Israel Conflict)
ট্রাম্পের এই মন্তব্যের কিছুক্ষণ পরেই মত পাল্টান সিআইএ প্রধান জন র্যাটক্লিফ(Iran Israel Conflict)। তিনি বলেন,“প্রকাশিত রিপোর্টটি ছিল পুরনো এবং অসম্পূর্ণ। নতুন তথ্য ও উপগ্রহচিত্র বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, ইরানের পরমাণুকেন্দ্রগুলি ভয়ঙ্কর ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”
এই অবস্থান পাল্টে যাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, রাজনৈতিক চাপে সিআইএ-র অবস্থান বদলেছে কি না।

ট্রাম্পের সুর চড়ছে (Iran Israel Conflict)
নেটোর সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন—“দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ যেমন হিরোশিমা-নাগাসাকি বন্ধ করেছিল, আমরাও তেমনই ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ থামিয়ে দিয়েছি। ওরা আর বোমা বানাতে পারবে না। প্রয়োজনে আবারও হামলা করব।”
এই মন্তব্য ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অনেকেই বলছেন, একটি পরমাণু কর্মসূচিকে হিরোশিমা ধ্বংসের সঙ্গে তুলনা কূটনৈতিক ভাবে ভয়াবহ ইঙ্গিত দেয়।
সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের রোষ (Iran Israel Conflict)
বুধবার গভীর রাতে ট্রাম্প নিজের সামাজিক মাধ্যমে লেখেন—“পাইলটেরা ৩৬ ঘণ্টা শত্রুপক্ষের আকাশে সাহসিকতার সঙ্গে অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু এখন তারা দেখছে CNN আর নিউ ইয়র্ক টাইমসের মিথ্যা খবর, আর হতাশ হচ্ছে। এটি দেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।” তিনি ঘোষণা করেন, বৃহস্পতিবার সকালেই প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ সাংবাদিক সম্মেলন করে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেবেন(Iran Israel Conflict)।

ভূরাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন? (Iran Israel Conflict)
ভূরাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বিভ্রান্তি মূলত দুটি বিষয় সামনে আনছে—
- মার্কিন সামরিক অভিযানের সঠিক মূল্যায়ন নিয়ে প্রশাসনের ভেতরে মতানৈক্য।
- গণমাধ্যম ও প্রশাসনের দ্বন্দ্ব, যা ট্রাম্পের আগের প্রেসিডেন্সি জমানার পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে।
বিশেষত, সেনা পাইলটদের মানসিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রেসিডেন্টের মন্তব্য এবং সংবাদমাধ্যমকে দোষারোপ করার কৌশলকে অনেকেই রাজনৈতিক অবস্থান মজবুত করার হাতিয়ার বলে মনে করছেন। যুদ্ধ শেষ হলেও তথ্যযুদ্ধ এখনও তুঙ্গে(Iran Israel Conflict)। ইরানের পরমাণু ভবিষ্যৎ, মার্কিন গোয়েন্দা তথ্যের নির্ভরযোগ্যতা এবং ট্রাম্পের সামরিক কৌশলের বাস্তব প্রভাব—এই তিনটি প্রশ্ন ঘিরেই আগামী সপ্তাহে আন্তর্জাতিক মহলের নজর থাকছে ওয়াশিংটনের দিকে।