ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইরানে মহিলাদের হিজাব পরার বাধ্যবাধকতা (Iran Law) দীর্ঘদিনের। তবে, সম্প্রতি ইরান সরকার এই পোশাকবিধির উপর নজর রাখতে ড্রোন ও মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার শুরু করেছে। সরকারের এই সিদ্ধান্ত যা আন্তর্জাতিক স্তরে নতুন উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
রাষ্ট্রপুঞ্জের নজরদারি (Iran Law)
রাষ্ট্রপুঞ্জের এক রিপোর্টে জানানো হয়েছে যে, ইরান সরকার (Iran Law) তার নাগরিকদের পোশাকবিধি সঠিকভাবে মেনে চলানোর জন্য বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করছে, যার মধ্যে ড্রোন এবং ‘নাজের’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
নজরদারি ক্যামেরা (Iran Law)
এপি সংবাদ সংস্থার মতে, ইরান তার প্রধান সড়কগুলোতে নজরদারি ক্যামেরা (Iran Law) স্থাপন করেছে। এই ক্যামেরা মহিলাদের হিজাব পরিধান নিশ্চিত করতে নজর রাখছে। তেহরানের আমিরকবির বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ ধরনের সফ্টওয়্যারও বসানো হয়েছে। এই সফ্টওয়্যার মুখ শনাক্তকরণ প্রযুক্তির মাধ্যমে মহিলাদের হিজাব পরার বিষয়টি যাচাই করছে। ওই সফ্টওয়্যারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার সময় মহিলাদের পোশাক যাচাই করছে, যাতে হিজাব ছাড়া কেউ প্রবেশ করতে না পারে।
আরও পড়ুন: Trump and Reporter: সাংবাদিক সম্মেলনে রিপোর্টারের ভুল, মুখে মাইকের আঘাতে বিরক্ত ট্রাম্প
হিজাব না হলেই রিপোর্ট!
আরও উদ্বেগজনক হল, ইরান সরকার একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ‘নাজের’ চালু করেছে, যার মাধ্যমে সাধারণ মানুষ রাস্তাঘাটে, গাড়ি বা বাসে যেকোনো মহিলাকে হিজাব ছাড়া দেখলে তা পুলিশকে জানাতে পারেন। এই অ্যাপের মাধ্যমে শুধু মহিলাদের হিজাব পরিধান না করার ঘটনা রিপোর্ট করা যাচ্ছে না, সেই সঙ্গে ওই মহিলার অবস্থান এবং গাড়ির নম্বরও পুলিশের কাছে পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে।

হিজাব না হলেই মৃত্য!
ইরানে মহিলাদের পোশাকের উপর এই কঠোর নজরদারি কোনো নতুন ঘটনা নয়। ইরানের ধর্মগুরু আয়াতোল্লা আলি খামেনি ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামী বিপ্লবের পর থেকে হিজাব পরার বাধ্যবাধকতা জারি রেখেছেন। এর বিরোধিতা করা হলে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। ২০২২ সালে ইরানি তরুণী মাহসা আমিনি হিজাব না পরার কারণে নীতিপুলিশের হেফাজতে মৃত্যুবরণ করেন, যা গোটা ইরানে প্রতিবাদের সঞ্চার করে।
গ্রেফতার পড়ুয়া
এই পরিস্থিতিতে, সম্প্রতি তেহরানের ইসলামিক আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া আহু দারইয়াই প্রকাশ্যে অন্তর্বাস পরে হেঁটেছিলেন। যার জেরে তাকে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হতে হয়। প্রশাসন জানায়, দারইয়াই মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন, এবং তাকে একটি মানসিক রোগ চিকিৎসাকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। এর পর থেকে তার মুক্তির বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়।
নতুন বিতর্ক
ইরানের বর্তমান পরিস্থিতি এবং মহিলাদের পোশাক নিয়ে কঠোর নজরদারির এই উদ্যোগ আন্তর্জাতিক মহলে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। পদ্ধতিগতভাবে নিপীড়নমূলক এসব পদক্ষেপ ইরানের মানবাধিকার পরিস্থিতির উপর গুরুতর প্রশ্ন তুলছে।