ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পরমাণুকেন্দ্রে মার্কিন হামলার পর এবার প্রত্যাঘাতের হুঁশিয়ারি দিয়ে সরাসরি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে (Donald J. Trump) নিশানা করল ইরান(Iran Warns US)। সোমবার সকালে ইরানের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে একের পর এক জোরালো বার্তা সামনে আসতে শুরু করে। রয়টার্স-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ইরানের সামরিক সদর দফতর খাতাম আল-আনবিয়া-র মুখপাত্র ইব্রাহিম জোলফাকারি এক ভিডিয়ো বার্তায় বলেন, “এই যুদ্ধের শুরুটা ট্রাম্প করে থাকলেও, শেষটা আমরা করব। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেন প্রস্তুত থাকে আমাদের প্রত্যাঘাতের জন্য।”
জোলফাকারি মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ‘জুয়াড়ি’ বলে কটাক্ষ করেন। তাঁর দাবি, আমেরিকা ইরানের বিরুদ্ধে যে আক্রমণ চালিয়েছে, তার ভয়াবহ মূল্য দিতে হবে। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, “এখন থেকে পশ্চিম এশিয়ায় মার্কিন ঘাঁটিগুলি আমাদের বৈধ নিশানা। এই হামলার পর আমাদের প্রতিরোধ ও প্রতিশোধের সীমারেখাও প্রসারিত হয়েছে।”
সংঘাতের সূত্রপাত (Iran Warns US)
গত রবিবার ভোরে ইরানের অন্তত তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালায় মার্কিন সামরিক বাহিনী(Iran Warns US)। ইরান-ইজরায়েল সংঘর্ষের আবহে এই প্রথম সরাসরি ইরানের ভূখণ্ডে হামলা চালাল আমেরিকা। যদিও পেন্টাগন পরে জানিয়েছে, তারা সংঘাত বাড়াতে চায় না, বরং প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ হিসেবে ওই আক্রমণ চালানো হয়েছে। তবে ইরান এই যুক্তি মানতে নারাজ। রবিবারই ইরানের রেভলিউশনারি গার্ড এক বিবৃতিতে জানিয়ে দেয়, আমেরিকার এই আক্রমণের উপযুক্ত জবাব দেবে তারা। পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন মার্কিন ঘাঁটি হুঁশিয়ারির কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে।

পাল্টা প্রস্তুতি ইরানের (Iran Warns US)
সোমবার ইরানের প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল আমির হাতামি আরও একটি ভিডিয়ো বার্তায় বলেন, “আমরা অতীতে বহু বার আমেরিকার আগ্রাসনের মুখে পড়েছি(Iran Warns US)। প্রতিবারই তাদের কড়া জবাব দেওয়া হয়েছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। আমরা শান্তির জন্য লড়ি, কিন্তু কেউ আমাদের শান্তি কেড়ে নিতে এলে, প্রতিরোধ করাই আমাদের কর্তব্য।” এই বার্তায় আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। কারণ, ইরানের পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে ও সরাসরি আমেরিকাকে যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দেওয়ার ঘটনা বিরল। এর ফলে পশ্চিম এশিয়ায় সংঘাত আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

পরিণতি কতটা ভয়াবহ? (Iran Warns US)
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরান যদি সত্যিই পাল্টা হামলার রাস্তায় হাঁটে, তা হলে পশ্চিম এশিয়ার বহু মার্কিন সামরিক ঘাঁটি এবং কৌশলগত এলাকা ঝুঁকির মুখে পড়বে(Iran Warns US)। তেল সরবরাহ এবং বাণিজ্যপথেও তার প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষত হরমুজ় প্রণালী ঘিরে যদি সংঘর্ষ শুরু হয়, তা হলে বৈশ্বিক জ্বালানির দামে ব্যাপক হেরফের হতে পারে। সব মিলিয়ে, আমেরিকার হামলার পর ইরানের পাল্টা হুমকি বিশ্ব রাজনীতিকে ফের একবার টালমাটাল করে দিয়েছে। এখন নজর আন্তর্জাতিক কূটনীতির দিকে—এই যুদ্ধ কি আটকে যাবে কূটনৈতিক আলোচনায়, নাকি রণাঙ্গনে গড়াবে সংঘর্ষ? উত্তর সময়ই দেবে।