ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: কাশ্মীরের বৈসরন উপত্যকায় ২২ এপ্রিলের (Kashmir Terror Attack) ভয়াবহ জঙ্গি হামলা কেঁপে উঠেছিল গোটা দেশ। সেই হামলায় প্রাণ হারান ২৬ জন, যাঁদের মধ্যে ছিলেন ২৫ জন পর্যটক এবং এক জন স্থানীয় যুবক। কিন্তু এই বিভীষিকার মধ্যেই উঠে আসে এক অনন্য মানবিকতা ও সাহসিকতার গল্প-কাশ্মীরি যুবক নজাকত শাহ-এর কাহিনি।
নিজের প্রাণের তোয়াক্কা না করে…(Kashmir Terror Attack)
নিজের প্রাণের তোয়াক্কা না করে ছত্তীসগড় থেকে ঘুরতে আসা (Kashmir Terror Attack) আগরওয়াল পরিবারের ১১ জন সদস্যকে নিরাপদে বের করে আনেন নজাকত। অথচ সেই একই হামলায় গুলিতে প্রাণ হারান তাঁরই মামাতো ভাই আদিল হুসেন শাহ। ভাইয়ের মৃত্যুর শোক বুকে চেপেও নজাকত নিজের দায়িত্ব থেকে এক মুহূর্তও সরে আসেননি।
কাশ্মীর ঘুরে যাওয়ার আমন্ত্রণ (Kashmir Terror Attack)
পেশায় ব্যবসায়ী নজাকত পহেলগাঁওয়েরই (Kashmir Terror Attack) বাসিন্দা। শীতের সময়ে তিনি ছত্তীসগড়ের চিরমিরি অঞ্চলে গরম পোশাক বিক্রি করেন। সেখানেই পরিচয় হয় আগরওয়াল পরিবারের সঙ্গে। সেই সম্পর্ক থেকে তাঁদের কাশ্মীর ঘুরে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানান নজাকত।
নিরাপদ স্থান
১৭ এপ্রিল আগরওয়াল পরিবার জম্মুতে পৌঁছয়, ২২ এপ্রিলের ভ্রমণসূচি ছিল পহেলগাঁও। বৈসরনে দুপুর ১২টা নাগাদ ঘোরাঘুরি শুরু করে তাঁরা। হঠাৎই বিকট গুলির শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তেই নজাকত পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে নেন। আগরওয়াল পরিবারের তিন শিশুকে সঙ্গে নিয়ে বাকিদের দ্রুত নিরাপদ জায়গার দিকে নিয়ে যেতে থাকেন। পাহাড়ি পথে ১৪ কিলোমিটার দূরে এক নিরাপদ স্থানে তাঁদের পৌঁছে দেন।
আমাদের প্রাণে বাঁচিয়েছে
পর্যটক কুলদীপ আগরওয়াল জানান, “নজাকত না থাকলে আমরা জানি না কী হতো। ওর উপস্থিত বুদ্ধি, সাহস আর পরিচিত ভূগোল আমাদের প্রাণে বাঁচিয়েছে।”
বীরত্বের কাহিনি
এই ঘটনায় আরও এক বীরত্বের কাহিনি সামনে আসে—নজাকতের মামাতো ভাই আদিল হুসেন শাহ এক পর্যটককে রক্ষা করতে গিয়ে জঙ্গির হাত থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিতে চেয়েছিলেন। সেখানেই তাঁকে গুলি করে হত্যা করে জঙ্গিরা। ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ শুনেও নজাকত প্রথমে যাননি তাঁর শেষকৃত্যে। কারণ, তাঁর সঙ্গে থাকা পর্যটক পরিবারটির নিরাপত্তা তখনই ছিল তাঁর কাছে সবচেয়ে বড় কর্তব্য।
আরও পড়ুন: Gold Rate Today: অক্ষয় তৃতীয়ার আগে সোনার দামে বড় পতন, গ্রাহকদের জন্য স্বস্তির হাওয়া!
এক সংবাদমাধ্যমে নজাকত বলেন, “ভাইয়ের চলে যাওয়া খুব কঠিন ছিল, কিন্তু ওঁদের নিরাপদে পৌঁছে দেওয়াটাই তখন আমার কাছে সবচেয়ে জরুরি ছিল। আমি চাই না, আমার কাশ্মীরকে কেউ ভয় পায়।” নজাকতের এই নিঃস্বার্থ সাহসিকতায় এখন গোটা দেশ তাঁকে কুর্নিশ জানাচ্ছে। জঙ্গিদের বিভীষিকার মাঝেও তাঁর মতো মানুষের উপস্থিতিই কাশ্মীরকে নতুন আশার আলো দেখায়।