ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ঐতিহাসিক জয়! এই প্রথমবার রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে পৌছাল কেরালা (Kerala in Ranji Final)। গুজরাটকে হারিয়েছে তারা।
শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে গুজরাটকে হারিয়ে প্রথমবারের জন্য ফাইনালে কেরালা (Kerala in Ranji Final)
এক নাটকীয় সমাপ্তির জন্য মঞ্চ প্রস্তুত ছিল (Kerala in Ranji Final)। শেষ দিনে গুজরাটের প্রয়োজন ছিল মাত্র ২৮ রান, হাতে ছিল তিনটি উইকেট। বিপক্ষের ৪৫৭ রান টপকাতে পারলেই গুজরাট চলে যেত ফাইনালে। কিন্তু কেরালা শেষ পর্যন্ত মাত্র ২ রানের লিড নিয়ে প্রথমবারের মতো রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে জায়গা করে নিল।
সারওয়াতের ম্যাজিক, ক্যাচ মিসের পরও জয় কেরালার (Kerala in Ranji Final)
শেষ দিনের শুরুতে কেরালার (Kerala in Ranji Final) মূল অস্ত্র হওয়ার কথা ছিল জলজ সাক্সেনা, যিনি আগের দিন চারটি উইকেট নিয়েছিলেন। তবে ম্যাচের ভাগ্য বদলে দিলেন আরেক স্পিনার আদিত্য সারওয়াতে।
খেলার প্রথম ঘণ্টাই ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কেরালা (Kerala in Ranji Final) আগেই ক্লোজ-ইন ক্যাচিং ও উইকেটকিপিং নিয়ে বাড়তি অনুশীলন করেছিল। স্পিনারদের জন্য ফিল্ডিং সাজানো হয়েছিল অত্যন্ত কৌশলে। হেলমেট পরে ফিল্ডাররা কখনও সিলি পয়েন্ট, কখনও শর্ট লেগে লাফিয়ে লাফিয়ে জায়গা বদল করছিলেন।
গুজরাটের জয়মিত প্যাটেল ও সিদ্ধার্থ দেশাই দুর্দান্ত ব্যাট করছিলেন। তারা মিলে ৭২ রানের পার্টনারশিপ গড়ে চাপ কমানোর চেষ্টা করছিলেন। তবে কেরালার বোলাররা প্রথম পাঁচ ওভারে মাত্র ৫ রান দিয়ে চাপ বাড়িয়ে রাখেন।
সিদ্ধার্থের আউট নিয়ে নাটকীয়তা, কেরালার লাস্ট উইকেট শিকার (Kerala in Ranji Final)
কেরালা (Kerala in Ranji Final) সহজ সুযোগ নষ্ট করেছিল, যখন অধিনায়ক সচিন বেবি শর্ট কভারে সহজ ক্যাচ ফেলে দেন। কিন্তু ভাগ্য কেরালার সঙ্গেই ছিল। এরপরই সারওয়াতের বল জয়মিতকে ক্রিজ থেকে টেনে বের করে নেয়, উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন তৎপরতার সঙ্গে বেলস ফেলে দেন।
এরপর কেরালা (Kerala in Ranji Final) আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠে। প্রতিটি বলেই জোরালো আবেদন শুরু হয়। সারওয়াত এন্ড বদলে আক্রমণ চালিয়ে যান এবং সিদ্ধার্থ দেশাইকে ব্যাট-প্যাড ক্যাচে শর্ট লেগে পাঠিয়ে দেন। গুজরাট রিভিউ নিলে দেখা যায়, বল ব্যাটে না লেগে মাটিতে আঘাত করেছে। গুজরাট ডাগআউটে তখন কিছুটা স্বস্তি দেখা গেলেও পরবর্তী বল ট্র্যাকিংয়ে তিনটি ‘লাল সংকেত’ দেখা যায়, যা কেরালাকে মাত্র এক উইকেট দূরে নিয়ে যায় জয় থেকে।
শেষ ব্যাটসম্যান প্রিয়াজিতসিং জাদেজা ভাঙা হাত নিয়েও খেলতে নামেন। তিনি ও নগওয়াসওয়ালা রান রোটেট করে গুজরাটকে কেরালার স্কোর থেকে মাত্র ২ রান দূরে নিয়ে যান।
শেষ মুহূর্তের রোমাঞ্চ ও কেরালার উল্লাস
এক ইনিংসে স্কোর সমান থাকলে গ্রুপ পর্বে বেশি পয়েন্ট থাকার কারণে গুজরাট ফাইনালে চলে যেত। কিন্তু মাত্র ১ রান লিড থাকায় কেরালা ফিল্ডারদের সবাইকে কাছাকাছি নিয়ে আসে।
নগওয়াসওয়ালা ছক্কা হাঁকানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু সারওয়াতের বল শর্ট লেগে থাকা সালমান নিজারের হেলমেটে লেগে সচিন বেবির হাতে চলে যায়। কেরালার খেলোয়াড়রা তখন উল্লাসে মেতে ওঠে। জলজ সাক্সেনা খুশিতে সালমানের হেলমেট আকাশে ছুড়ে দেন।
আরও পড়ুন: Bangladesh Breaks Record: জাকার-হৃদয়ের জোড়া রেকর্ড, ১৯ বছরের পুরনো নজির ভাঙল বাংলাদেশ
এই ক্ষীণ লিডই কেরালাকে ইতিহাস গড়ার সুযোগ দেয়। এরপর বাকি ওভারগুলো শুধু ব্যাট করে ম্যাচ ড্র করে দিলেই হতো।
গুজরাটের চেষ্টা
গুজরাটের স্পিনাররা শেষ চেষ্টা করেছিল, লাঞ্চের পর চারটি উইকেট তুলে নেয়। কিন্তু সাক্সেনার ৩৭ রানের শান্ত ইনিংস কেরালাকে ৪৬ ওভারে ১১৪/৪ পর্যন্ত নিয়ে যায়, এরপরই ম্যাচ ড্র ঘোষণা করা হয়।
এর ফলে প্রথমবারের মতো রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে পৌঁছে গেল কেরালা।