ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: এই সময়ে মানুষ কি আদৌ মানুষের জন্য? অন্য কাউকে জিজ্ঞেস করতেই এখন সংকোচ বোধ করেন আরেকজন। এত সব ঝাপটা সামলে ট্রাইব টিভি খোঁজ নিল মানুষের মনের।
তেল চিটে আকাশের নীচে শুধুই কি মৃত্যু, শুধুই কি হতাশা! না এই আকাশ কোথায়? হেথায় শেখায়। এই আকাশই শেখায় জীবনকে ভালোবাসতে। শেখায় নিজেকে ভালোবাসো, ভালোবাসো অপরকেও। জীবনের থেকে বড় রোমান্স আছে নাকি আর কিছু! ৪৮ তম আন্তর্জাতিক বইমেলায় (Kolkata Book fair) ট্রাইব টিভির প্রতিনিধি ত্রয়ণ চক্রবর্তী খোঁজ নিলেন এই সমস্ত কথার।
আরও পড়ুন: Valentine’s Day 2025: প্রেমের সপ্তাহে কবে কোন দিন? জেনে নিন সম্পূর্ণ তালিকা ও অর্থ
বইমেলাও ভালোবাসার প্রতিচ্ছবি (Kolkata Book fair)
বাড়ন্ত শীতে যখন ছেলেটা হিমেল হাওয়া গায়ে মেখে ফিনফিনে পাঞ্জাবি পরে প্রেমিকার হাত ধরে বইমেলায় বইয়ের পাতা ওল্টাতে ব্যস্ত। তখন চোখে এক সমুদ্র সমান সম্মান নিয়ে অমোঘ দৃষ্টিতে প্রেমিকের দিকে তাকিয়ে মেয়েটা। এই ছবি দেখে বোঝাই যায় বইমেলার সঙ্গে প্রেমের টান। সরস্বতী পুজোয় যখন বসন্তের বিকেলে কলকাতার হাজার প্রেমের ডেস্টিনেশনকে ছাড়িয়ে বইমেলাকেই (Kolkata Book fair) একান্ত প্রেমের জায়গা বেছে নেওয়া যায়, তখনই বোঝা শুধু দুজন দুজনের প্রতি প্রেম না এখনকার দিনে দাঁড়িয়েও বাংলা সাহিত্যের চন্দ্রশেখর, দেবদাস, মেমসাহেব,পরিণীতা হোক কিংবা ডেভিড কপারফিল্ড, অলিভার টুইস্ট, প্রাইড অ্যান্ড প্রিজুডিস থেকে ইমা, মিডলমার্চ, ওথারিং হাইটস, জেন ইয়ারের গন্ধ বেশি টানে।
আবার দেখা মেলা কর্মস্থানেই রসদ খুঁজে নেওয়া মানুষ। যেমন, কলকাতা বইমেলায় (Kolkata Book fair) ডিউটি পড়েছে বিধাননগর থানার সাব ইন্সপেক্টর বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়ের। পঞ্চাশোর্ধ্ব বিশ্বজিৎ বসেছিলেন পুলিশের স্টলে। স্টল ঘুরতে ঘুরতেই প্রশ্নবাণ — ‘বাড়িতে বই পড়া হয়?’ ‘একদম। তবে ঘুম আনতে যেটুকু পড়া। শরৎ রচনাবলী, বঙ্কিম রচনাবলী বেশি পড়ি।’ পছন্দের লেখক তবে কে? সময় না নিয়েই বললেন, ‘শঙ্কর। অফিস এনভারমেন্ট নিয়ে ওঁর লেখা বিভিন্ন উপন্যাস দারুণ লাগে।’ চৌরঙ্গি উপন্যাসটা নাকি সবচেয়ে বেশি পছন্দ!
আরও পড়ুন: Valentine’s Day Horoscope: ভ্যালেন্টাইন্স ডে-তে জীবনে আসবে প্রেম, ভালোবাসার ঘর বাঁধবেন এই চার রাশি
বইমেলার (Kolkata Book fair) ফ্লাড লাইটে, বসন্তের গোড়ায় হঠাৎ শীত গা ঢাকা দিয়ে পালানোয় হাজার হাজার পাঠক ঘামছেন। শুধু বই ভালোবেসে। বইও তাই ঘামছে পাঠকের জন্য! এই ভালোবাসা যদ্দিন থাকবে, তদ্দিন হাজার মাধ্যম এলেও পাঠকরা ঘাম ঝরাবেন। শুধু বইয়ের জন্য। আর ভালোবাসার সমীকরণ এভাবেই হয়তো প্রযুক্তিকে ঠেকিয়ে বই-তর্ক জিইয়ে রাখবে, না-মেলা হিসেব মিলিয়ে দেবে!
জীবন হল সমুদ্রের মতো। সে নেবে যখন, নিয়ে নেবে সব, আবার দেবে যখন, তখন দেবে উজাড় করে। আসলে মানুষ ভালোবাসে, চায় ভালোবাসতে, চায় ভালোবাসা পেতে। তাই তো, পার্কের ঘাসে হাত ধরা, লেকের জলের পাশে বসা। ফুচকার হাঁড়ি ভাগ করার এই শহরে এই বইমেলাও ভালোবাসার প্রতিচ্ছবি।