ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল : এক সপ্তাহের মধ্যে তিনবার কুলতলী (Kultali) ও মৈপীঠ (Maipith) এলাকায় সুন্দরবনের দক্ষিণরায়ের (Royal Bengal Tiger) হানা।সন্ধে নামলেই পথ ঘাট শুনশান! মানুষ তো বটেই গত চারদিন ধরে মৈপীঠে কার্যত ঘরবন্দি রাখা হয়েছিল গৃহপালিত জীবজন্তুকেও। বাঘের আতঙ্কে কার্যত নেওয়া খাওয়া ঘুম সব মাথায় উঠেছিল কুলতলী ও মইপিট এলাকার মানুষের। অবশেষে রবিবার দিনভর আতঙ্ক বাড়িয়ে গভীর রাতে ধরা দিল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার (Royal Bengal Tiger)।
কি ভাবে ফাঁদে দক্ষিণরায়? (Royal Bengal Tiger)
রবিবার সকালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Pargana) কুলতলির কিশোরীমোহনপুর এলাকায় বাঘ (Royal Bengal Tiger) ঢোকার খবর পেয়ে নজরদারি শুরু করে বন দফতর। জঙ্গলের চার দিক জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। ফলে বাঘের গতিবিধি নির্দিষ্ট একটি এলাকায় সীমাবদ্ধ হয়ে যায়। ঘেরা জায়গার মধ্যে পাতা হয় খাঁচা। টোপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল একটি ছাগলকে। খাবারের টানে রবিবার রাতেই খাঁচায় ধরা দেয় বাঘ। সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই বাঘ দেখতে মধ্যরাতেও মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।তবে বাসিন্দাদের বাঘ দেখার সাধ পূরণ হয়নি। কারণ, ত্রিপলে করে বাঘের খাঁচা ঢেকে রাতেই নৌকায় করে বাঘটিকে নিয়ে গিয়েছেন বনকর্মীরা।
শারীরিক পরীক্ষার পর ছাড়া হবে জঙ্গলে (Royal Bengal Tiger)
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার বাঘটির শারীরিক পরীক্ষানিরীক্ষা করা হবে। তারপর সেটিকে গভীর জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে। আপাতত পূর্ণবয়স্ক পুরুষ বাঘটি (Royal Bengal Tiger) সুস্থ রয়েছে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভাগীয় বন আধিকারিক নিশা গোস্বামী।
স্বস্তিতে এলাকার বাসিন্দারা
৬ জানুয়ারি সোমবার সকালে কিশোরীমোহনপুর এলাকায় বাঘের পায়ের ছাপ পাওয়া যায়। ৮ তারিখ বুধবার ভোররাতে বাঘ ফিরে যায় জঙ্গলে। পরেরদিনই ৯ তারিখ বৃহস্পতিবার সকালে ফের বাঘের পায়ের ছাপ পাওয়া যায় মৈপিঠের নগেনাবাদে। জাল দিয়ে ঘিরে ফেলায় ১০ তারিখ ভোর রাতে ফের বাঘ ফিরে যায় জঙ্গলে।১২ তারিখ রবিবার সকালে মৈপিঠের কিশোরিমোহনপুর এলাকায় গঙ্গার ঘাটে বাঘের পায়ের ছাপ দেখে আতঙ্কিত বাসিন্দারা। এবারও আজমলমারির জঙ্গল থেকে বাঘ এসেছে লোকালয়ে বলে জানা গিয়েছে। মুড়িগঙ্গা নদী পেরিয়ে বাঘ লোকালয় সংলগ্ন এলাকায় চলে আসায় আতঙ্ক ছড়ায়। অবশেষে বাঘ খাঁচাবন্দি হওয়ায় স্বস্তিতে এলাকার বাসিন্দারা।
জোড়া বাঘের আশঙ্কা
রবিবার সকালে কুলতলির মৈপীঠের গঙ্গার ঘাট এলাকায় বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পান গ্রামবাসীরা। দাবি করা হয়, একসঙ্গে দুটি বাঘ এসেছে সেখানে। সেই খবর পেয়ে সেখানে যান বনকর্মীরা। তবে এলাকায় একটিই বাঘই হানা দিচ্ছিল নাকি দুটি বাঘের অস্তিত্ব রয়েছে , তা নিয়ে এখনও সংশয়ে গ্রামবাসীরা। কারণ, গত ৪ দিন ধরে যেভাবে ১৫ কিমি এলাকা জুড়ে বাঘের ‘মুভমেন্ট’ সামনে এসেছে, তাতে জোড়া বাঘের আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না গ্রামবাসীরা।
বার বার মৈপীঠে বাঘের হানা
মৈপীঠে বাঘের আতঙ্ক নতুন নয়।গত এক সপ্তাহে এ নিয়ে তিন বার সুন্দরবনের আজমলমারির জঙ্গল থেকে বাঘ মৈপীঠ কোস্টাল থানা এলাকায় ঢুকে পড়ল।বার বার মৈপীঠে বাঘ ঢুকে পড়ায় উঠছে প্রশ্ন। একটি বাঘই বার বার এলাকায় হানা দিচ্ছে, না কি অন্য বাঘ, তা নিয়েও ধোঁয়াশায় বনকর্মীরা।