Last Updated on [modified_date_only] by Aditi Singha
ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বজ্রপাতকে সাধারণত গ্রীষ্মকালীন ঝড়ের নাটকীয় আলোর ঝলক হিসেবেই দেখি (Lightning Strike)। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন, বজ্রপাত শুধু আলোর খেলা নয়—এটি আসলে এক গুরুত্বপূর্ণ বায়ু দূষণের উৎস। প্রতিটি বজ্রপাতের সঙ্গে তৈরি হয় নাইট্রোজেন অক্সাইড নামের গ্যাস, যা আমাদের পরিচিত গাড়ির এক্সহস্ট থেকেও বের হয়। এই গ্যাস বাতাসে মিশে জলবায়ুকে প্রভাবিত করে, এমনকি দূরের অঞ্চল পর্যন্ত বায়ুগুণমানের পরিবর্তন ঘটায়।

মহাকাশ থেকে নজরদারি! (Lightning Strike)
এই রহস্য ভেদে নামল নাসার শক্তিশালী স্যাটেলাইট টেম্পো (TEMPO)। পৃথিবীর প্রায় ২২,০০০ মাইল ওপরে অবস্থানরত এই স্যাটেলাইট সাধারণত প্রতি ঘণ্টায় একবার করে বায়ু দূষণের তথ্য সংগ্রহ করে। কিন্তু ২০২৫ সালের জুনের শেষদিকে গবেষকরা এক অভিনব পরীক্ষা চালান—সেটিকে প্রতি ১০ মিনিটে তথ্য সংগ্রহের নির্দেশ দেওয়া হয়। উদ্দেশ্য ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চল জুড়ে চলা বজ্রঝড়কে সরাসরি ট্র্যাক করা।
এই পরীক্ষা প্রথমবারের মতো বিজ্ঞানীদের সুযোগ দিল বজ্রঝড় চলাকালীন প্রতিটি মুহূর্তের পরিবর্তন সরাসরি পর্যবেক্ষণ করার।

কী বিজ্ঞানীদের অভিমত! (Lightning Strike)
প্রফেসর কেনেথ পিকারিং জানিয়েছেন—
“বজ্রঝড় দ্রুত গড়ে ওঠে এবং মিলিয়েও যায়। এত ঘন ঘন তথ্য সংগ্রহ আমাদের ঝড়ের আসল চিত্র ধরতে সাহায্য করছে।”
অন্য গবেষক ডেল অ্যালেন বলছেন—
“NOAA-র জিওস্টেশনারি লাইটনিং ম্যাপার যন্ত্র দিয়ে আমরা বজ্রপাতের সংখ্যা গণনা করতে পারছি। প্রতিটি বজ্রপাত কত নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড তৈরি করছে ও কতক্ষণ তা বাতাসে থাকে, সেই তথ্য প্রথমবারের মতো মিলছে।”

প্রভাব: দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন (Lightning Strike)
- বিশ্বজুড়ে মোট ১০-১৫% নাইট্রোজেন অক্সাইড বজ্রপাত থেকে আসে।
- মানুষের তৈরি দূষণ অনেক বেশি হলেও, বজ্রপাতের উৎপাদিত গ্যাস উচ্চ স্তরে ছড়ায়, যেখানে ওজোন উৎপাদন আরও কার্যকর।
- এই ওজোন শুধু বায়ু দূষক নয়, জলবায়ু উষ্ণায়নেও ভূমিকা রাখে।
- বাতাসের প্রবাহে এই দূষণ মাটির কাছেও নেমে আসে, ফলে শত শত মাইল দূরের বাতাসও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ভাল দিকও আছে! (Lightning Strike)
সবটা নেতিবাচক নয়। বজ্রপাত তৈরি করে হাইড্রক্সিল র্যা ডিক্যাল (OH radical), যেগুলোকে বলা হয় বায়ুমণ্ডলের “প্রাকৃতিক পরিচ্ছন্নতাকর্মী”। এগুলো ক্ষতিকর গ্যাস যেমন মিথেন ভেঙে দেয়, যা একটি শক্তিশালী গ্রিনহাউস গ্যাস।
স্থানীয় প্রভাব (Lightning Strike)
কলোরাডোসহ পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারীদের জন্য এই তথ্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বজ্রপাতের গ্যাস সেসব অঞ্চলে স্থানীয় ওজোন বৃদ্ধির বড় কারণ। ফলে ঝড় চলাকালীন এবং পরে বায়ুগুণমান পূর্বাভাস আরও সঠিকভাবে দেওয়া সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন: Today Weather: ভেসে যাচ্ছে বঙ্গ, এবার পুজোয় নৌকা ভ্রমণ!
গবেষণার গুরুত্ব!
বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, এই গবেষণার মাধ্যমে জলবায়ু মডেলের অনিশ্চয়তা কমবে, পূর্বাভাস আরও নির্ভুল হবে এবং প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দূষণ থেকে আমাদের স্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষার পথ খুলবে।