ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: আজ ২৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ হল মাঘী পূর্ণিমা (Maghi Purnima 2025)। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে একটি পুণ্য তিথি। এই দিনে দেশজুড়ে নানা স্থানে পালন করা হচ্ছে পুণ্যস্নানের অনুষ্ঠান। বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভ মেলায় লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম ঘটেছে। ভোররাত থেকেই শুরু হয়েছে ত্রিবেণী সঙ্গমে পুণ্য স্নান। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ নিজে এই পুণ্যস্নানের ব্যবস্থাপনা নজরদারি করছেন।
লক্ষ মানুষের কুম্ভ স্নান (Maghi Purnima 2025)
সরকারি সূত্রের খবর, আজ ভোর ৬টা পর্যন্ত প্রায় ৭৩ লক্ষ মানুষ ত্রিবেণী সঙ্গমে (Maghi Purnima 2025) স্নান করেছেন। এই পুণ্যস্নানের সঙ্গে শেষ হবে এক মাসব্যাপী কল্পবাস। কল্পবাসীরা প্রায় ১০ লক্ষের কাছাকাছি, যাঁরা স্নানের পর মহাকুম্ভ থেকে চলে যাবেন। প্রশাসন তাঁদের ট্রাফিকের নিয়মকানুন মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছে এবং কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত পার্কিং স্থল ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছে।
গঙ্গাসাগরেও চলছে স্নান (Maghi Purnima 2025)
একইভাবে, গঙ্গাসাগর মেলাতেও পুণ্যার্থীরা ভিড় (Maghi Purnima 2025) জমিয়েছেন। মাঘী পূর্ণিমার সকাল থেকেই শুরু হয়েছে পুণ্যস্নান। স্নানের পর ভক্তরা কপিল মুনির আশ্রমে পুজো করছেন। এখানে ১, ৫, ও ৬ নম্বর স্নানের ঘাটে পুণ্যস্নান অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: Tribeni Kumbh Mela: আজ শুরু বঙ্গীয় ত্রিবেণী কুম্ভ স্নান, জানুন সারাদিনের কর্মসূচি
মাঘী পূর্ণিমায় স্নানের মাহাত্ম্য
জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে, পূর্ণিমা ও অমাবস্যার সময় বিশেষ সংযোগ তৈরি হয়, এবং এই সময়ে স্নান করা অত্যন্ত শুভ। ১২ ফেব্রুয়ারি মাঘী পূর্ণিমার দিনে স্নানের মাহাত্ম্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বৈদিক পঞ্চাঙ্গ অনুযায়ী, এই দিন ভোর ৫টা ১০ মিনিট থেকে ৬টা ১০ মিনিট পর্যন্ত শুভ মুহূর্ত থাকবে। এই দিনে দান করার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এদিন অসহায়দের ফল, কাপড় দান করলে জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধি আসে। কথিত আছে এদিন নাকি দেবতারা মর্ত্যে নামেন মানুষের বেশে।
ত্রিবেনীতেও কুম্ভস্নান
প্রায় সাতশো চার বছর আগে হুগলির ত্রিবেণীতে গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতী নদীর সঙ্গমে কুম্ভের আয়োজন হতো, যা পরে বন্ধ হয়ে যায়। গত চার বছর ধরে আবার শুরু হয়েছে ত্রিবেণী কুম্ভমেলা। এবারের আয়োজনে পুণ্যস্নানের পাশাপাশি নগরকীর্তন, শক্তিপীঠ পরিক্রমা, রুদ্র অভিষেক, রুদ্র মহাযজ্ঞ, শিব সহস্র নাম, সাধু প্রবচন ও ধর্মসভা অনুষ্ঠিত হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সন্ধ্যায় সপ্তর্ষি ঘাটে গঙ্গা আরতিরও ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

ত্রিবেণীতেও নাগা সন্ন্যাসীরা
মাঘী পূর্ণিমার এই দিন নাগা সাধুরা দলে দলে স্নান করতে নামেন। বলা হয়, গঙ্গাসাগরে মকর সংক্রান্তির পর সাধু সন্ন্যাসীরা পায়ে হেঁটে ত্রিবেণী সঙ্গমে মিলিত হতেন মাঘী পূর্ণিমায়। তাই, আজকের এই পুণ্যস্নান ও সঙ্গমের গুরুত্ব অবিস্মরণীয়। প্রশাসনিক ব্যবস্থায় সুষ্ঠুভাবে পালিত হচ্ছে হুগলির ত্রিবেণী সঙ্গমের কুম্ভমেলা, যা সত্যিই এক অমূল্য ঐতিহ্য।