ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর দেশপ্রিয় পার্কে অমর একুশে শহিদ বেদি তৈরি করেছিলেন। সেখানেই প্রতি বছর বাংলার বিশিষ্ট গুণীজনদের নিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে থাকে রাজ্য সরকার। এবছরও তার ব্যতিক্রম হলো না। ২১ শে ফেব্রুয়ারি রাজ্য সরকারের উদ্যোগে প্রতি বছরের মতো এবারও দেশপ্রিয় পার্কে অনুষ্ঠিত হল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠান। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)-সহ রাজ্যের মন্ত্রী, বিধায়ক এবং বিশিষ্টরা। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের একাধিক খ্যাতনামা শিল্পী।
অমর একুশের মঞ্চে প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন (Mamata Banerjee)
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ঠিক আগেই না ফেরার দেশে পারি দিয়েছেন ‘বাংলা ভাষা’র অন্যতম কাণ্ডারি সঙ্গীতশিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়। ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রয়াত হন প্রতুল বাবু। তাই প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা জানিয়েই উদযাপিত হল এবারের ভাষা দিবস। মঞ্চে প্রয়াত সঙ্গীতকারের ছবি রেখে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করলেন মুখ্যমন্ত্রী-সহ বিশিষ্টরা। অনুষ্ঠানের শুরুতে তাঁর স্মৃতির উদ্দেশে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।এরপর রাজ্য সঙ্গীত ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ গেয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। মঞ্চে প্রতুলবাবুর স্ত্রীকে আগলে নিজের পাশে বসালেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)। এরপরই গাওয়া হল প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের ‘বাংলায় গান গাই’।
প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতিচারণা (Mamata Banerjee)
অনুষ্ঠানের শুরুতে কবিতা পাঠ করেন জয় গোস্বামী। পরে গান পরিবেশনা করেন সঙ্গীত শিল্পী ইমন চক্রবর্তী। পুরো অনুষ্ঠানটির পরিচালনা করছেন গায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। সকলের কথাতেই বারে বারে উঠে এসেছে প্রয়াত শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতিচারণা।
মুখ্যমন্ত্রীর কথাতেও উঠে এল প্রয়াত শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “প্রতুলদা তো চলে গেলেন। কিন্তু তাঁর ‘আমি বাংলায় গান গাই’ রয়ে গেল!” মমতা (Mamata Banerjee) আরও বলেন, “প্রতুল মুখোপাধ্যায় নেই। বৌদি এসেছেন, তাঁর ধারা বহন করছেন। প্রতুল মুখোপাধ্যায় মারা যাওয়ার দিন আমার মনে হল, উনি তো মারা গেলেন, কিন্তু ওঁর গান থেকে গেল। উনি মারা যাওয়ার ৪৮ ঘণ্টা আগে আমার সঙ্গে দেখা হয়েছিল। আমি সাধারণত I CU, ITU-তে যাই না। এত যন্ত্র দেখলে আমার একটা ভয় লাগে। তাও আমি গেলাম ওঁকে ডাকলাম, বিশ্বাস করুন উনি তাকালেন।”
আরও পড়ুন : ডি কোম্পানির নামে হুমকি ফোন, SMS ! দুলাল সরকারের পর টার্গেট প্রাক্তন মন্ত্রী ?
একুশের মঞ্চে মমতার বক্তব্য
এদিনের অনুষ্ঠানে ভাষার প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শুধু আমাদের মাতৃভাষা নয়, আমরা সব ভাষাকেই শ্রদ্ধা জানাই। সকলে সকলের ভাষা নিয়ে ভাল থাকুন। তবে বাংলা ভাষার গুরুত্ব চিরকাল ছিল, থাকবে। দেরিতে হলেও আমরা ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি পেয়েছি। এজন্য শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে ধন্যবাদ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বস্তা বস্তা নথি দিয়ে ব্রাত্য প্রমাণ করে দিয়েছেন, বাংলা ভাষা হাজার বছরের পুরনো ভাষা।” অনুষ্ঠানে বক্তব্যের শেষে নিজের লেখা একটি কবিতা পাঠ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন : বালি ঘাট পরিদর্শনে গিয়ে আক্রান্ত জিতেন্দ্র তেওয়ারি ! উঠল ‘গো ব্যাক’ স্লোগান
অন্য দেশ নিয়ে মন্তব্য নয়
এ বার ঢাকার ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিন থাকার সময়ে সেখানে ছিলেন না অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। এই নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। তবে প্রতিবেশী দেশ নিয়ে কোনও কথা বলতে রাজি নন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেশপ্রিয় পার্কের অনুষ্ঠানে মমতার সাফ বার্তা , ‘অন্য কোনও দেশ নিয়ে আমি কিছু বলব না। আমি আমাদের দেশ নিয়ে বলব।’