ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: উত্তর-পূর্ব ভারতের অশান্ত রাজ্য মণিপুরে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে জঙ্গিবিরোধী অভিযান (Manipur Unrest)। বৃহস্পতিবার রাত থেকে রাজ্যের তিন জেলায় পুলিশ ও আধাসেনার যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে চারটি নিষিদ্ধ সংগঠনের আট জন ক্যাডারকে গ্রেফতার করেছে। দীর্ঘ দিন শান্ত হয়ে থাকা জঙ্গি তৎপরতা নতুন করে মাথাচাড়া দিচ্ছে বলেই মনে করছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।
কোথা থেকে ধরা পড়ল কারা? (Manipur Unrest)
ইম্ফল পশ্চিম জেলা,-
- মহারাবি এলাকা থেকে ধরা হয়েছে প্রিপাক (VC-Red Army)-এর এক সক্রিয় ক্যাডারকে।
- একই জেলার অন্য জায়গা থেকে গ্রেফতার হয় কাংলেইপাক কমিউনিস্ট পার্টি (PWG)-র তিন সদস্য।
- কাংলেইপাক কমিউনিস্ট পার্টি (তাইবাঙ্গানবা)-র দুই জন ক্যাডারকেও এখানেই পাকড়াও করা হয়।
কাকচিং জেলা,-
- উমাথেল এলাকা থেকে ধরা হয় সোরেপা নামক জঙ্গিগোষ্ঠীর দুই সক্রিয় সদস্যকে।
কারা এই সংগঠনগুলি? (Manipur Unrest)
- প্রিপাক (People’s Revolutionary Party of Kangleipak – VC Red Army): মণিপুরের এক পুরনো মাওবাদী ঘরানার বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন।
- UNLF (United National Liberation Front): চিনপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাসী, বহুদিন ধরেই মণিপুরকে ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
- কাংলেইপাক কমিউনিস্ট পার্টি: মাওবাদী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী মিলিত লক্ষ্যে কাজ করা একাধিক শাখা সংগঠনের সম্মিলন।

আরও পড়ুন: Israel Katz : ইরানকে হুঁশিয়ারি, প্রয়োজনে ফের হামলা করবে ইজরায়েল
নতুন করে কেন উদ্বেগ? (Manipur Unrest)
২০২৩ সাল থেকে মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে চলা জাতিগত হিংসার জেরে মণিপুর কার্যত দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে(Manipur Unrest)। এই সামাজিক অস্থিরতা ও প্রশাসনিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়েই সক্রিয় হয়ে উঠেছে অতিবাম গেরিলা সংগঠনগুলি।
গোয়েন্দা সূত্রের দাবি—চিনপন্থী জঙ্গি সংগঠনগুলি মায়ানমার সীমান্ত ঘেঁষা অঞ্চলগুলিতে গোপন ক্যাম্প গড়ে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে, এবং অস্ত্র ও অর্থ সংগ্রহেও তৎপর হয়ে উঠেছে। গত কয়েক মাসে স্থানীয় তরুণদের সংগঠনে যুক্ত করার প্রচেষ্টা আরও বেড়েছে।
কী করছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী? (Manipur Unrest)
বর্তমান অভিযানে যৌথবাহিনী স্থানীয় পুলিশ, আধাসেনা (INDIAN ARMY) ও গোয়েন্দা বিভাগের সমন্বয়ে কাজ করছে। উদ্দেশ্য,-
- সীমান্তবর্তী এলাকায় জঙ্গি আস্তানা চিহ্নিত করে ধ্বংস করা
- সক্রিয় সদস্যদের গ্রেফতার ও জেরা করে তথ্য সংগ্রহ
- মণিপুরের গণতান্ত্রিক কাঠামো ও শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সহায়তা করা

আরও পড়ুন: Rohingya Refeugee : রোহিঙ্গা সংকটে নতুন মোড়! দেড় বছরে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে আরও দেড় লক্ষ
শান্তির পথে বড় চ্যালেঞ্জ (Manipur Unrest)
জাতিগত হিংসা, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং জঙ্গি সংগঠনের পুনঃতৎপরতা—এই তিনটি ঘাত-প্রতিঘাতের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে মণিপুর। এই পরিস্থিতিতে সরকারি বাহিনীর এই অভিযান প্রাথমিকভাবে ইতিবাচক পদক্ষেপ হলেও, দীর্ঘমেয়াদি শান্তির জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা, আন্তঃজাতিগত সংলাপ ও কূটনৈতিক নজরদারি।