ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ‘বিচার প্রক্রিয়া চলছে।’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর খলিস্তানপন্থী সন্ত্রাসবাদী হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যাকাণ্ড নিয়ে মন্তব্য করেছেন কানাডার সদ্য অভিষিক্ত প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি(Mark Carney)। প্রায় ২০ মাস ধরে চলা উত্তেজনার পরে অবশেষে বরফ গলেছে ভারত ও কানাডার সম্পর্কে। জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে কানানাসকিসে ‘ব্রেকথ্রু’ বৈঠকে মুখোমুখি হন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি। এরপরেই হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যাকাণ্ড নিয়ে সাংবাদিকের প্রশ্ন সুকৌশলে এড়িয়ে গিয়েছেন মার্ক কার্নি।
কানাডার প্রধানমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া (Mark Carney)
দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী মোদী বৈঠককে ‘অসাধারণ’ বলে অভিহিত করেন এবং জানান, ‘ভারত ও কানাডার সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ(Mark Carney)। প্রধানমন্ত্রী কার্নি এবং আমি একসঙ্গে এই বন্ধুত্বকে নতুন দিশা দিতে প্রস্তুত।’ কার্নিও জানান, দু’দেশ একযোগে যে সব বিষয়ে কাজ করবে, তারমধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক দমননীতি ও সন্ত্রাসবাদ রোধ। পাশাপাশি, দুই দেশ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থেকে শুরু করে শক্তি নিরাপত্তা-সহ একাধিক খাতে যৌথ সহযোগিতার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে বলেও জানান তিনি। বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন কানাডার প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, কানাডায় নিজ্জরের হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে আলোচনা বলেছেন কিনা।পাল্টা জবাবে কার্নি বলেন, ‘আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে সংলাপের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেছি, কেবল আলোচনা নয়, সরাসরি সহযোগিতা, ট্রান্সন্যাশনাল রেপ্রেশন মোকাবেলার গুরুত্ব… একটি বিচার প্রক্রিয়া চলছে এবং আরও মন্তব্যের বিষয়ে আমাকে সতর্ক থাকতে হবে।’

ভারত-কানাডা সম্পর্ক (Mark Carney)
অন্যদিকে বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি জানান, বৈঠকে ভারত-কানাডা সম্পর্কের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে(Mark Carney)। সম্পর্ক স্বাভাবিক করে তোলার প্রথম পদক্ষেপ হবে দুই দেশে হাইকমিশনার নিযুক্ত করা। দুই দেশই দ্রুত সেই সিদ্ধান্ত নেবে।সূত্রের খবর, দুই দেশের শীর্ষ নেতৃত্ব সম্মত হয়েছেন যে, সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে ফের একে অপরের রাজধানীতে হাই কমিশনার নিয়োগ করা হবে। ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে দু’দেশেই কোনও হাই কমিশনার নেই।

আরও পড়ুন-Melodi: ‘আপনি সেরা!’ জি৭ সম্মেলনের ফাঁকে চর্চায় ‘মেলোডি’
জি-৭ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী (Mark Carney)
কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি বলেছেন যে জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতি ভারতীয় অর্থনীতির আকার এবং গতিশীলতা এবং ভারতের নেতৃত্বের অবস্থানের প্রতিফলন(Mark Carney)। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদী ২০১৮ সাল থেকে প্রতিটি জি-৭-তে যোগ দিয়েছেন, যা ভারতীয় অর্থনীতির আকার, ভারতীয় অর্থনীতির গতিশীলতা, ভারতীয় প্রযুক্তি, জি-২০ এবং তার বাইরেও বিভিন্ন স্থানে ভারত যে নেতৃত্বের অবস্থানে রয়েছে তার প্রতিফলন। সুতরাং জি-৭-এর সভাপতি হিসেবে, সেই প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রীকে আতিথ্য দেওয়া সম্পূর্ণ স্বাভাবিক, সম্পূর্ণরূপে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আমি সম্পূর্ণরূপে আশা করি প্রধানমন্ত্রী আগামী বছরও জি-৭-তে উপস্থিত থাকবেন।’

আরও পড়ুন-Rajasthan: ‘কাশী আঙ্কল বালিশ দিয়ে বাবার মুখ…,’ মেঘালয়কাণ্ডের পুনরাবৃত্তি রাজস্থানে
ভারত–কানাডা সম্পর্কের অবনতি (Mark Carney)
২০২৩ সালে হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যার পর থেকে ভারত–কানাডা সম্পর্কের অবনতি ঘটতে থাকে(Mark Carney)। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে কানাডার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন, নিজ্জরকে ব্রিটিশ কলম্বিয়ার সারে শহরে খুনের পিছনে ভারতীয় গোয়েন্দাদের বিশ্বাসযোগ্য যোগসূত্র-এর হাত থাকতে পারে। ভারতের তরফে ওই অভিযোগকে ‘অযৌক্তিক’ বলে খারিজ করে দেওয়া হয় এবং পাল্টা অভিযোগ ওঠে, কানাডা ভারত-বিরোধী বিচ্ছিন্নতাবাদী ও চরমপন্থীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে।এই ঘটনার পর দু’দেশের সম্পর্ক কার্যত তলানিতে পৌঁছয়। কূটনৈতিক টানাপোড়েন এতটাই তীব্র হয় যে, ভারত তার হাই কমিশনার সঞ্জয় কুমার ভার্মা এবং পাঁচজন আধিকারিককে ফিরিয়ে নেয়। তার আগে, কানাডা তাদের কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য ভারতের কূটনৈতিক সুরক্ষা প্রত্যাহারের দাবি জানায়। জবাবে ভারত ছ’জন কানাডীয় আধিকারিককে বহিষ্কার করে, যার মধ্যে ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনারও ছিলেন।এই আবহে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর মার্ক কার্নির আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রীর মোদীর কানাডা সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
