Last Updated on [modified_date_only] by Debu Das
ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল : ভারত–আমেরিকা সম্পর্ক সম্প্রতি এক অস্বস্তিকর অধ্যায়ের মধ্যে দিয়ে গেলেও, হোয়াইট হাউসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald J. Trump) সাম্প্রতিক ইঙ্গিত নতুন সম্ভাবনার আভাস দিয়েছে (Modi Trump Ties)। শুল্ক–বিতর্ক, রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের তেল কেনা ও এসসিও সম্মেলনে মোদি–পুতিন–শি জিনপিং-এর হাস্যোজ্জ্বল ছবি নিয়েই যখন দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন তুঙ্গে, তখন হঠাৎই ট্রাম্পের সুর পাল্টে গিয়ে কূটনৈতিক মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
শীতল সম্পর্কের প্রেক্ষাপট (Modi Trump Ties)
ভারতের রাশিয়া–নির্ভর জ্বালানি আমদানি নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের উপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক চাপিয়েছে (Modi Trump Ties)। একইসঙ্গে মার্কিন প্রশাসনের শীর্ষস্তরে ভারতকে ‘ক্রেমলিনের মানি লন্ড্রির জায়গা’ বলার মতো কড়া মন্তব্য এসেছে। ভারত অবশ্য সরাসরি প্রতিক্রিয়া না দিয়ে ধীরস্থিরভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী জনসমক্ষে কখনও ট্রাম্পের সমালোচনা করেননি, বরং দেশের কৃষি ও অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষার প্রতিশ্রুতিই দিয়েছেন।
একটি বই ও সম্পর্ক উষ্ণ করার চেষ্টা (Modi Trump Ties)
মোদির হোয়াইট হাউস সফরে ট্রাম্প তাঁকে উপহার দিয়েছিলেন নিজের বই Our Journey Together। বিশ্লেষকদের মতে, সেই বইয়ের ছবিই হয়তো ট্রাম্পকে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের পথে উৎসাহিত করেছে (Modi Trump Ties)। হঠাৎই তিনি ঘোষণা করেন, ‘‘আমি সব সময় মোদীর বন্ধু থাকব। ভারত–আমেরিকার সম্পর্ক বিশেষ ধরনের। চিন্তার কিছু নেই।’’ একদিন আগেই যিনি ‘আমেরিকা ভারত ও রাশিয়াকে চীনের অন্ধকার দিকে হারিয়েছে’ বলেছিলেন, তাঁর এই নাটকীয় পরিবর্তন কূটনৈতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
আরও পড়ুন : Nepal Gen Z Protest : অগ্নিগর্ভ নেপাল,পুলিশের গুলিতে আহত তরুণ! সার্বভৌমত্ব রক্ষার দোহাই কেপি শর্মার
মোদির ইতিবাচক বার্তা (Modi Trump Ties)
ট্রাম্পের বক্তব্যের জবাবে মোদি দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানান (Modi Trump Ties)। এক্স পোস্টে তিনি লেখেন, ‘‘ট্রাম্পের ইতিবাচক মন্তব্য আমি গভীরভাবে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে গ্রহণ করছি এবং তা পুরোপুরি প্রতিফলিত করছি। ভারত–আমেরিকার সম্পর্ক অগ্রগতিমূলক ও বৈশ্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্বে পরিণত হয়েছে।’’পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও জোর দিয়ে বলেন, মোদী ভারতের মার্কিন সম্পর্ককে ‘‘অত্যন্ত গুরুত্ব দেন’’।
বিতর্ক থেকে প্রশমনের পথে (Modi Trump Ties)
ট্রাম্প প্রশাসনের একাধিক সদস্য সম্প্রতি নিজেদের অবস্থান নরম করেছেন। বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো, যিনি কয়েক দিন আগে ভারতের ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়কে নিয়ে মন্তব্য করে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছিলেন, তিনি এখন বলেন, ‘‘মোদীর প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে। ভারতীয় মানুষদের আমি ভালোবাসি।’’
মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্টও মন্তব্য করেন, ‘‘শেষ পর্যন্ত দুই মহান দেশ নিজেদের সমস্যা মিটিয়ে নেবে।’’
আরও পড়ুন : Zelenskyy On US Tariff : রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য করলেই মার্কিন শুল্কের কোপ, সমর্থন করলেন জেলেনস্কি
আড়ালে চলেছে আলোচনাও
প্রকাশ্যে সম্পর্ক যতই খারাপ দেখাক, আড়ালে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনা চলছেই (Modi Trump Ties)। কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল সম্প্রতি আশা প্রকাশ করেছেন, নভেম্বরের মধ্যে ভারত–আমেরিকা বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হতে পারে।
নতুন সমীকরণ না সাময়িক উষ্ণতা? (Modi Trump Ties)
প্রশ্ন উঠছে, মোদি–ট্রাম্পের ব্যক্তিগত সৌহার্দ্য কি সত্যিই দুই দেশের সম্পর্কে নতুন গতি আনবে, নাকি এটি ট্রাম্পীয় কূটনীতির স্বভাবসিদ্ধ অনিশ্চয়তা মাত্র?
বিশ্লেষকদের মতে, ভারত–আমেরিকার সম্পর্ক মূলত কৌশলগত ও অর্থনৈতিক বাস্তবতার উপর দাঁড়িয়ে। বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র এবং প্রাচীনতম গণতন্ত্র উভয়েই একে অপরের গুরুত্ব জানে। তাই সম্পর্ক কখনও পুরোপুরি ভেঙে পড়বে না। তবে তা পুনর্গঠনের গতি নির্ভর করছে দুই দেশের স্বার্থের ভারসাম্যের উপর।