ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার প্রশাসনের উপর ক্রমাগত আক্রমণ চালিয়ে বিলিয়নেয়ার এলন মাস্ক বৃহস্পতিবার একটি সমীক্ষা শুরু করেছেন (Musk to Create New Party)। সেখানে ২০ কোটিরও বেশি ফলোয়ারকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে যে আমেরিকায় এমন একটি নতুন রাজনৈতিক দল তৈরি করার সময় এসেছে যা “আসলে মধ্যবর্তী ৮০ শতাংশ-এর প্রতিনিধিত্ব করে”।
আমেরিকায় মধ্যপন্থীদের প্রতিনিধিত্বের দাবি তুলে মাস্কের ভাইরাল ভোট (Musk to Create New Party)
বিলিয়নিয়ার উদ্যোক্তা এলন মাস্ক আবারও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর প্রশাসনের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন (Musk to Create New Party)। বৃহস্পতিবার, ৫ জুন, ২০২৫, মাস্ক তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম X-এ (আগের নাম টুইটার) একটি ভোটের আয়োজন করেন। প্রশ্ন ছিল, “এবার কি আমেরিকায় এমন একটা রাজনৈতিক দল তৈরি করা উচিত, যারা সত্যিই মাঝখানের ৮০ শতাংশ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করবে?” এই পোস্ট দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। ৪১ লক্ষেরও বেশি মানুষ ভোট দেন, যার মধ্যে ৮১ শতাংশ মানুষ ‘হ্যাঁ’ ভোট দেন।
ট্রাম্পকে খোঁচা, নিজের ভবিষ্যৎ বুঝিয়ে মাস্ক (Musk to Create New Party)
এই ঘটনার পর একজন প্রভাবশালী রক্ষণশীল (কনসারভেটিভ) ব্যক্তির পোস্টের উত্তরে মাস্ক বলেন (Musk to Create New Party), “একটা কথা মাথায় রাখতে বলি—ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে আছেন আর ৩.৫ বছর, আর আমি থাকব আগামী ৪০ বছরেরও বেশি সময়।”
মাস্কের এই বক্তব্য অনেকের মতে ট্রাম্পের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
কী থেকে শুরু এই দ্বন্দ্ব?
এই দ্বন্দ্বের সূচনা তখন, যখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “আমি এলনের ওপর ভীষণ হতাশ। ও আমার ‘Big Beautiful Bill’-এর বিরোধিতা করেছে।” ট্রাম্পের দাবি, মাস্ক শুধুই নিজের স্বার্থ দেখেন। কারণ ওই বিল ইলেকট্রিক গাড়ির জন্য ভর্তুকি কমিয়ে দেয়, এর ফলে মাস্ক ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। তিনি আর হোয়াইট হাউসে অবাধে ঢোকার সুযোগও পাচ্ছেন না।
আরও পড়ুন: Donald Trump : পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপ ট্রাম্পের! আলোচনায় ড্রোন হামলা থেকে ইরানের পরমাণু চুক্তি
নেটমাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া
মাস্কের এই ভোটে প্রতিক্রিয়া ছিল মিশ্র। কেউ বলেন, “১০০ শতাংশ হ্যাঁ! আমাদের অবশ্যই র্যাঙ্কড চয়েস ভোটিং চাই, যাতে ভোটাররা তাঁদের অপছন্দের দলকে সাহায্য করতে না ভয় পান।” আবার কেউ লেখেন, “৫ জুন ২০২৫ – আমেরিকার দ্বিতীয় বিপ্লবের সূচনা!” তবে অনেকেই মাস্ককে ‘MAGA’ (Make America Great Again) ভাবধারার যথেষ্ট প্রতিনিধি বলে মনে করেননি। কেউ লেখেন, “ট্রাম্প আর মাস্কের একান্তে কথা বলা উচিত। একটা সমঝোতায় আসা দরকার। এটা খুবই হতাশাজনক!”
এক ব্যবহারকারী বলেন, “সরকারি খরচ কমালেও ঋণ বাড়বে, না কমালেও ঋণ বাড়বে। অনেক আগেই টিপিং পয়েন্ট পার হয়ে গেছি। নতুন রাজনৈতিক দল কিছু বদলাবে না।”
‘ট্রাম্প আমার জন্যই জিতেছেন’, দাবি মাস্কের
একটি আগের পোস্টে মাস্ক দাবি করেছিলেন, “আমার না থাকলে ট্রাম্প হেরে যেতেন। ডেমোক্র্যাটরা হাউসে সংখ্যাগরিষ্ঠ হতেন আর রিপাবলিকানদের সিনেটে ৫১-৪৯ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকত।” তিনি আরও লেখেন, “এত অকৃতজ্ঞতা!”
আরও পড়ুন: Bangabandhu: বদলার রাজনীতি! বঙ্গবন্ধু ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’, ড্যামেজ কন্ট্রোল ইউনুসের
ট্রাম্পের পাল্টা স্বীকারোক্তি
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রথমবার মাস্কের সঙ্গে সম্পর্কের তিক্ততা স্বীকার করেন। জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্জের সঙ্গে ওভাল অফিসে বসে সাংবাদিকদের বলেন, “এলনের সঙ্গে আমার দারুণ সম্পর্ক ছিল। এখন আর আছে কি না জানি না। আমি ওর জন্য অনেক কিছু করেছি। তাই খুব হতাশ হয়েছি।”
এই রাজনৈতিক নাটক এখন আমেরিকার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ও ‘মধ্যপন্থী’ জনতার রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।