ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) দু’দিনের সফরে মঙ্গলবার সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সলমনের আমন্ত্রণে এই নিয়ে তৃতীয়বারের মতো সৌদি সফরে গেলেন তিনি (Narendra Modi)। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, এই সফরে ভারত ও সৌদি আরবের মধ্যে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হতে পারে, বিশেষত অপরিশোধিত তেল ও তৈলশোধনাগারে বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে। পাশাপাশি ছয়টি দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা স্মারক (MoU) সই হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
মোদির সৌদি সফর: কী কী হতে পারে আলোচনা? (Narendra Modi)
সরকারি সূত্রে জানা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী মোদির (Narendra Modi) সৌদি সফরে যেসব ক্ষেত্র নিয়ে MoU সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে-জ্বালানি ও শক্তি,স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান ও গবেষণা,প্রতিরক্ষা সহযোগিতা,সংস্কৃতি বিনিময়,উন্নত প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন। এছাড়াও দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও মজবুত করতে একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে। সৌদি আরব বর্তমানে ভারতের অন্যতম প্রধান অপরিশোধিত তেল সরবরাহকারী দেশ। সাম্প্রতিক সময়ে চিনে জ্বালানির চাহিদা কমে যাওয়া এবং বৈদ্যুতিক যানবাহনের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির ফলে সৌদি তেল রপ্তানিতে কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে। সেই ঘাটতি পুষিয়ে দিতে ভারতের সঙ্গে চুক্তিতে বিশেষ ছাড় দিতে পারে সৌদি সরকার। এমনকি পূর্ব ও পশ্চিম ভারতের তিনটি প্রধান তৈল শোধনাগারে সৌদি বিনিয়োগের ঘোষণাও আসতে পারে।
মোদির এক্স পোস্টে কী বার্তা? (Narendra Modi)
সৌদি সফরে রওনা হওয়ার আগে এক্স (পূর্বতন টুইটার) হ্যান্ডেলে একটি বার্তা দেন প্রধানমন্ত্রী মোদি (Narendra Modi)। তিনি লেখেন: “সৌদি আরবের জেদ্দার উদ্দেশে রওনা হচ্ছি। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ও অনুষ্ঠানগুলিতে অংশ নেব। ভারত ও সৌদি আরবের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে, যা গত দশকে অনেকটা গভীর হয়েছে। কৌশলগত অংশীদারিত্বের লক্ষ্য নিয়েই সৌদি প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের অপেক্ষায় রয়েছি। পাশাপাশি, প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করব।”
হজ কোটা ও ব্যবস্থাপনা
প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে হজ বিষয়ক আলোচনা একটি বড় ভূমিকা নিতে চলেছে। জানা গেছে, সৌদি যুবরাজের সঙ্গে হজযাত্রী কোটা, অবকাঠামো, থাকার ব্যবস্থা ও অন্যান্য সংগঠনের কার্যকরী চুক্তি নিয়েও বিশদে আলোচনা হতে পারে।উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে ভারতের হজ কোটা ছিল ১,৩৬,০২০ জন, যা ২০২৫ সালে বেড়ে হয়েছে ১,৭৫,০২৫ জন। এর মধ্যে ১,২২,৫১৮ জন হজযাত্রীর থাকার ব্যবস্থা ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। তবে হজগ্রুপ অপারেটরদের সঙ্গে বিলম্বিত চুক্তির ফলে প্রায় ৪২ হাজার যাত্রী এবার হজে যেতে পারবেন না বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রকের তরফে গোটা প্রক্রিয়াটি পরিচালিত হচ্ছে, এবং এই বিষয়টি নিয়ে সৌদি প্রশাসনের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা হতে পারে।
মোদি জমানায় সৌদি-ভারত সম্পর্ক
প্রধানমন্ত্রী মোদির নেতৃত্বে ভারত ও সৌদি আরবের সম্পর্ক গত দশকে দৃশ্যতই দৃঢ় হয়েছে। শুধু অর্থনৈতিক নয়, কৌশলগত এবং সাংস্কৃতিক স্তরেও এই সম্পর্ক আজ গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের বন্ধুত্ব আরও মজবুত ও ভবিষ্যতমুখী হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।প্রধানমন্ত্রীর সৌদি সফরের দিকে নজর রয়েছে আন্তর্জাতিক মহলেরও, কারণ এই সফর শুধু দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেই নয়, গোটা পশ্চিম এশিয়ায় ভারতের অবস্থানকে আরও সুদৃঢ় করার কৌশলগত অংশ হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে।