ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভারতে আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিযোগিতামূলক পরিকাঠামোর সর্বোত্তম ব্যবহার করে সীমান্ত প্রযুক্তিতে উৎকর্ষ অর্জন করার আহবান জানিয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী (National Science Day)। হায়দ্রাবাদে জাতীয় বিজ্ঞান দিবস উদযাপনে যুবসমাজের উদ্দেশ্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এই বার্তা দেন। ২০৪৭ সালের মধ্যে বিকশিত ভারতের লক্ষ্য অর্জনের জন্য ভারতের যুবসমাজের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো সরকারের প্রচেষ্টা বলে জানিয়েছেন রাজনাথ সিং।
হায়দরাবাদে ‘বিজ্ঞান বৈভব’ অনুষ্ঠানে রাজনাথ সিং (National Science Day)
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং ভারতের যুবসমাজকে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করতে এবং আধুনিক প্রযুক্তিতে দক্ষতা অর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন (National Science Day)। তিনি বলেন, সরকারের প্রচেষ্টার ফলে দেশে আন্তর্জাতিক মানের প্রযুক্তিগত পরিকাঠামো গড়ে উঠছে এবং তরুণদের উচিত এর সর্বোত্তম ব্যবহার করা। তিনি ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, হায়দরাবাদে দুই দিনব্যাপী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উৎসব ‘বিজ্ঞান বৈভব’-এর উদ্বোধন করেন। এই আয়োজন জাতীয় বিজ্ঞান দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত হয়।
নতুন প্রযুক্তির দিকেই যুদ্ধের ভবিষ্যৎ (National Science Day)
রাজনাথ সিং বলেন (National Science Day), “যুদ্ধ এখন হার্ডওয়্যার থেকে সফটওয়্যার নির্ভর হয়ে উঠছে। নতুন প্রযুক্তিগত বিপ্লব আসন্ন এবং আমাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, মেশিন লার্নিং এবং ক্লিন-টেকের মতো রূপান্তরকারী প্রযুক্তিগুলিতে নেতৃত্ব দিতে হবে।” তিনি আরও বলেন, ভারত কঠিন পরিস্থিতিতেও শক্তিশালী ও নিরাপদ থাকতে পারবে, যদি আমরা গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জগুলোর সমাধান খুঁজে বের করতে পারি। তাই যুবসমাজকে বৈজ্ঞানিক চিন্তাভাবনা গ্রহণ করতে হবে এবং গড়পড়তা চিন্তার বাইরে গিয়ে কাজ করতে হবে।
তিনি ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ড. এ পি জে আবদুল কালামের কথা স্মরণ করে বলেন, “বিজ্ঞান মানবতার জন্য এক অনন্য উপহার; আমরা এটিকে বিকৃত করব না, বরং সমাজের কল্যাণে ব্যবহার করব।”
আরও পড়ুন: Agra Incident: আগ্রায় বাড়ির ভিতর ঢুকে কিশোরীকে ধর্ষণ, গ্রেফতার ২ যুবক
‘উন্নত ভারত ২০৪৭’-এর লক্ষ্যে আধুনিক প্রযুক্তি
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে কেন্দ্র সরকার আধুনিক প্রযুক্তিকে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে কাজে লাগাতে বদ্ধপরিকর। ভারতের তরুণদের মধ্যে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে এবং তাদের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ২০৪৭ সালের মধ্যে ‘উন্নত ভারত’ গঠনের লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
তিনি নতুন শিক্ষানীতি ২০২০-র উল্লেখ করে বলেন, এটি দেশের বিজ্ঞান শিক্ষাকে নতুন মাত্রা দেবে এবং সৃজনশীলতা, সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা ও উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করবে।
‘বিজ্ঞান বৈভব’ প্রদর্শনীতে বিপুল সাড়া
এই উপলক্ষে আয়োজিত ‘বিজ্ঞান বৈভব’ প্রদর্শনীতে ৩০,০০০-রও বেশি ছাত্র-ছাত্রী অংশ নেয়। এখানে ২০০-র বেশি প্রদর্শনী স্টলে ডিআরডিও ও ভারতের শীর্ষস্থানীয় শিল্প সংস্থাগুলির তৈরি সর্বাধুনিক প্রতিরক্ষা ও মহাকাশ প্রযুক্তি প্রদর্শিত হয়। প্রদর্শনীর মূল লক্ষ্য ছিল তরুণদের মধ্যে বিজ্ঞান নিয়ে কৌতূহল সৃষ্টি করা, নতুন উদ্ভাবনের অনুপ্রেরণা দেওয়া এবং স্টেম (STEM) ক্ষেত্রে ক্যারিয়ার গড়ার প্রতি উৎসাহিত করা।
আরও পড়ুন: Karnataka: ইডলি তৈরিতে প্লাস্টিকের ব্যবহারে ‘না’ কর্ণাটকে
বিজ্ঞান ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে আত্মনির্ভর ভারতের পথে ভারত
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের সচিব এবং ডিআরডিও চেয়ারম্যান ড. সমীর ভি কামাত, অ্যারোনটিক্যাল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়ার সভাপতি ড. জি সতীশ রেড্ডি, ডিআরডিও-র মহাপরিচালক ও বিভিন্ন শিল্প সংস্থার প্রধানরা।
‘বিজ্ঞান বৈভব’ যৌথভাবে আয়োজন করেছে ডিআরডিও, অ্যারোনটিক্যাল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া (AeSI) ও কালাম ইনস্টিটিউট অফ ইয়ুথ এক্সেলেন্স। এই আয়োজন কিংবদন্তি বিজ্ঞানী সি ভি রমনের স্মরণে জাতীয় বিজ্ঞান দিবসের অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত হয়।অনুষ্ঠানটি নীতিনির্ধারক, বিজ্ঞানী, শিল্পপ্রধান, শিক্ষাবিদ ও তরুণ উদ্ভাবকদের একত্রিত করেছে। তাদের আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় অগ্রগতির জন্য নতুন প্রযুক্তির সম্ভাবনা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, “ভারত আত্মনির্ভর হয়ে বিশ্বের প্রযুক্তি নেতৃত্বে আসতে চায় এবং এর জন্য প্রয়োজন বিজ্ঞান, উদ্ভাবন ও সহযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়া।”