ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভারতীয় নৌসেনার জন্য বিশেষ অ্যান্টি-শিপ মিসাইলের সফল পরীক্ষা করা হয়েছে (Naval Anti-Ship missile)। এর মাধ্যমে নৌসেনার শক্তি আরও বাড়বে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
ডিআরডিও ও ভারতীয় নৌসেনার যুগান্তকারী সাফল্য (Naval Anti-Ship missile)
ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (DRDO) এবং ভারতীয় নৌসেনা সফলভাবে প্রথম নৌবাহিনীর অ্যান্টি-শিপ মিসাইল (NASM-SR)-এর ফ্লাইট ট্রায়াল সম্পন্ন করেছে (Naval Anti-Ship missile)। ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫-এ ওড়িশার চাঁদিপুরের ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট রেঞ্জ (ITR) থেকে এই পরীক্ষা চালানো হয়। ভারতীয় নৌসেনার সি কিং হেলিকপ্টার থেকে এই মিসাইলটি ছোঁড়া হয় এবং এটি সফলভাবে জাহাজ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে।
সাগরের ওপর নিখুঁত হামলার ক্ষমতা প্রমাণিত (Naval Anti-Ship missile)
এই পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে মিসাইলটি ম্যান-ইন-লুপ প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং সমুদ্রের উপর নিম্ন উচ্চতায় (Sea-skimming mode) উড়ে গিয়ে ছোট জাহাজ লক্ষ্যবস্তুতে সরাসরি আঘাত হানতে সক্ষম (Naval Anti-Ship missile)।
এটির গাইডেন্স সিস্টেমে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ইমেজিং ইনফ্রা-রেড সিকার (Imaging Infra-Red Seeker) ব্যবহার করা হয়েছে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে মিসাইলটি লক্ষ্যভ্রষ্ট না হয়ে নির্ভুলভাবে তার টার্গেটে আঘাত হানতে পারে।
মিসাইলের বিশেষ প্রযুক্তিগত দিক
মিসাইলটি বিয়ারিং-অনলি লক-অন মোডে উৎক্ষেপণ করা হয় যেখানে একাধিক লক্ষ্যবস্তু ছিল। প্রথমে এটি একটি বড় জাহাজে লক করেছিল, কিন্তু টার্মিনাল ফেজে পাইলট ছোট একটি লুকিয়ে থাকা টার্গেট নির্বাচন করেন এবং মিসাইলটি নিখুঁতভাবে সেটি আঘাত করে।
আরও পড়ুন: Groom Garlands Friend: উত্তরপ্রদেশে কনের বন্ধুকে মালা পরাল নেশাগ্রস্ত বর! চড় মেরে বিয়ে বাতিল কনের
এই মিসাইলটি দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ফাইবার অপটিক জাইরোস্কোপ ভিত্তিক ইনর্শিয়াল নেভিগেশন সিস্টেম (INS), রেডিও অলটিমিটার, ইন্টিগ্রেটেড অ্যাভিওনিক্স মডিউল, ইলেক্ট্রো-মেকানিক্যাল অ্যাকচুয়েটর এবং থার্মাল ব্যাটারি ব্যবহার করে। এটি সলিড প্রোপালশন সিস্টেমের মাধ্যমে কাজ করে এবং লম্বা সময় ধরে জ্বালানি সংরক্ষণ করতে পারে।
DRDO-এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
এই মিসাইলটি DRDO-র বিভিন্ন গবেষণাগারে তৈরি করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে রিসার্চ সেন্টার ইমারাত, ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ল্যাবরেটরি, হাই এনার্জি ম্যাটেরিয়ালস রিসার্চ ল্যাবরেটরি এবং টার্মিনাল ব্যালিস্টিক্স রিসার্চ ল্যাবরেটরি।
এই মিসাইলের উৎপাদনে MSME, স্টার্ট-আপ এবং অন্যান্য ডিফেন্স প্রোডাকশন পার্টনারদের সাহায্য নেওয়া হয়েছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তা
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং DRDO, ভারতীয় নৌসেনা এবং সংশ্লিষ্ট শিল্প সংস্থাগুলিকে এই সফল পরীক্ষার জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই প্রযুক্তি “ম্যান-ইন-লুপ” ফিচারের মাধ্যমে ইন-ফ্লাইট পুনরায় টার্গেট নির্বাচন করার সক্ষমতা বাড়াবে।
ডিআরডিও-র চেয়ারম্যান ড. সমীর ভি কামাতও DRDO এবং এর সহযোগী সংস্থাগুলির বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। এই সাফল্য ভারতীয় নৌসেনার শক্তি বহুগুণ বাড়াবে এবং ভবিষ্যতে সমুদ্রে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।