ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার ২০১৪ সালের মে মাসে ক্ষমতায় আসার পর থেকে ব্যক্তিগত আয়কর আইনে বড় কোনও পরিবর্তন আনেনি (No Income Tax Relief)। এই কারণে অনেক করদাতা হতাশ। তবে, সরকার একটি নতুন সরলীকৃত কর ব্যবস্থা চালু করেছে এবং পুরনো কর ব্যবস্থায় যারা রয়েছেন তাদের জন্য সর্বনিম্ন করের হার ৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছে।
নতুন কর ব্যবস্থায় কম কর হার রয়েছে, তবে এতে বিভিন্ন ছাড় এবং রিবেট ত্যাগ করতে হয় (No Income Tax Relief)। এর মধ্যে রয়েছে বাড়ি ঋণের সুদ, সামাজিক সুরক্ষা খাতে বিনিয়োগ এবং সন্তান শিক্ষার জন্য ব্যয়ের উপর ছাড়।
ব্যক্তিগত আয়ের উপরে কর সরকারকে একটি স্থায়ী এবং উল্লেখযোগ্য রাজস্ব আয় করতে সাহায্য করে (No Income Tax Relief)। কর্পোরেশনগুলির মুনাফার উপর কর থেকে পাওয়া রাজস্বকেও এটি ছাপিয়ে যায়। কিন্তু প্রতিটি কর রিবেট, ছাড় বা করযোগ্য আয়ের সংশোধন সরকারকে রাজস্ব হারানোর দিকে ঠেলে দেয়।
সাধারণ মানুষের ক্ষোভ কতটা যুক্তিযুক্ত? (No Income Tax Relief)
মধ্যবিত্ত মানুষ হিসেবে কাকে গণ্য করা হবে তা নির্ভর করে তার বার্ষিক আয়ের উপর (No Income Tax Relief)। সাধারণত, বার্ষিক ১০-১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ের ব্যক্তিদের এই তালিকায় ধরা যায়।
মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব কমানো (No Income Tax Relief)
অনেক ট্যাক্স বিশেষজ্ঞ মনে করেন, যদি সাধারণ মানুষ আয়করের কারণে সমস্যায় পড়ে, তবে করের হার সংশোধন করা উচিত (No Income Tax Relief)। তাঁরা মনে করেন যে, নতুন কর ব্যবস্থায় বেতনভোগীদের জন্য গত বাজেটে যে অতিরিক্ত রিবেট দেওয়া হয়েছিল, তা ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ের মানুষকে করমুক্ত করেছে। অর্থাৎ, কর কাঠামোর নিচের স্তরে থাকা মানুষদের উপর থেকে ধীরে ধীরে চাপ কমানো হয়েছে।
মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব কমানোর জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানোর যুক্তি উঠে আসে। তবে, মূলত কোর ইনফ্লেশন (খাদ্য ও জ্বালানির দাম বাদ দিয়ে) এখনো নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যদিও খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি অনেকের উপর বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে, এটি করের আওতার বাইরে থাকা মানুষের উপর বেশি প্রভাব ফেলেছে।
কর মেনে চলার জটিলতা
কম কর হার যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি কর মেনে চলার জটিলতাও অনেকের কাছে বড় সমস্যা। বিশেষত, ছোট ব্যবসা এবং স্টার্ট-আপ চালানো উদ্যোক্তাদের জন্য এটি একটি বড় বোঝা। তাদেরকে আয়ের কর আইনের বিভিন্ন ধারা এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক আইন মেনে চলতে হয় এবং রেকর্ড রাখতে হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই বোঝা কমানোর জন্য প্রিজাম্পটিভ ট্যাক্স রেজিম চালু করা যেতে পারে। এতে নির্দিষ্ট আয়ের একটি শতাংশ হিসেবে কর দিতে হয়, যা কর মেনে চলার প্রক্রিয়াকে সহজ করে তুলবে।
কর প্রদানের বিনিময়ে সুবিধা
সরকার কর থেকে পাওয়া রাজস্ব ব্যবহার করে নাগরিকদের বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করে। এর মধ্যে রয়েছে পরিকাঠামো উন্নয়ন, খাদ্য, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য পরিষেবায় ভর্তুকি। এছাড়া, এই কর রাজস্বের মাধ্যমে সমাজের গরিব অংশের জন্য সম্পদ পুনর্বণ্টন করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নাগরিকরা কর প্রদান করে যে সুবিধা পান, তা সমস্ত করদাতার দেওয়া করের তুলনায় অনেক বেশি। তবে, যদি রাজস্ব অপচয় বন্ধ করা যায়, তবে এই সুবিধার প্রবাহ আরও কার্যকর হতে পারে।
আরও পড়ুন: Spices Vastu Tips: রান্নাঘরের মশলা ফেরাতে পারে ভাগ্য, জানুন টোটকা
সরকারকে সামাজিক বৈষম্য কমানোর জন্য সম্পদ পুনর্বণ্টন করতে হয়। পাশাপাশি, বিভিন্ন সামাজিক পরিষেবা এবং পরিকাঠামো নির্মাণে ব্যয় করতে হয়। আয়কর থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব এই ব্যয়ের একটি প্রধান উৎস। অধিকাংশ করই ১০ লক্ষ টাকার উপরের আয়ের মানুষ দেন। তাই সরকার আয়কর কমাতে বা কোনও বড় ঘোষণা করতে অনিচ্ছুক। তবে, আইনের সরলীকরণে জোর দেওয়া হয়েছে।
কী হবে বাজেটে?
২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে মোদী সরকার ব্যক্তিগত আয়কর কাঠামোয় বড় কোনও পরিবর্তন আনেনি। তবে, নিম্ন আয়কর স্তরের জন্য কিছু রিবেট দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষের জন্য আরও ছাড় দেওয়ার দাবি উঠলেও, এটি সরকারের রাজস্বের উপর চাপ সৃষ্টি করবে।
অন্যদিকে, কর মেনে চলার প্রক্রিয়াকে সহজ করা এবং কর ফাঁকি রোধ করে রাজস্ব অপচয় বন্ধ করাই সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই, ভবিষ্যতে বাজেটে সাধারণ মানুষের জন্য কোনও নতুন সুবিধা দেওয়া হবে কি না, তা সময়ই বলবে।