ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: অতিমারির পরে আকস্মিক হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাপ্তবয়স্কদের মৃত্যুর (Sudden Death) সঙ্গে কি কোনও ভাবে কোভিড টিকার যোগ রয়েছে? কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া-র সাম্প্রতিক মন্তব্যের পর এই প্রশ্ন নতুন করে উঠে এসেছে । তবে মঙ্গলবার আইসিএমআর (ICMR) এবং এমস (AIIMS)-এর যৌথ গবেষণার রিপোর্ট জানিয়ে দিল— এই দুইয়ের মধ্যে কোনও প্রত্যক্ষ সম্পর্ক নেই।
কী বলেছিলেন সিদ্দারামাইয়া? (Sudden Death)
গত এক মাসে কর্নাটকের হাসন জেলায় হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে ২০ জনের মৃত্যু ঘিরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী(Sudden Death)। তিনি দাবি করেন, ‘‘কোভিড টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা তাড়াহুড়ো করেছিলাম। এখন অল্প বয়সিদের অকালমৃত্যুর সঙ্গে তার যোগসূত্র থাকতে পারে।’’
এমন মন্তব্যের পর তিনি একটি গবেষণা কমিটি গঠনের কথাও ঘোষণা করেন। তবে তার আগেই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এবং গবেষণা সংস্থাগুলির তরফে এই ধারণাকে নস্যাৎ করা হল।
গবেষণায় কী উঠে এল? (Sudden Death)
২০২৩ সালের মে থেকে অগস্ট মাস পর্যন্ত দেশে ১৯টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৪৭টি হাসপাতালে এই গবেষণার জন্য তথ্য সংগ্রহ করা হয়(Sudden Death)। যাঁরা শারীরিক ভাবে সুস্থ ছিলেন কিন্তু ২০২১-এর অক্টোবর থেকে ২০২৩-এর মার্চের মধ্যে আকস্মিক ভাবে মারা গিয়েছেন, তাঁদের তথ্যই বিশ্লেষণ করা হয়।
ICMR এবং AIIMS-এর গবেষণায় (Ministry of Health) উঠে এসেছে— মৃত্যু হওয়া ব্যক্তিরা টিকা নিয়েছেন কি না, তার সঙ্গে তাঁদের হৃদ্রোগ বা আকস্মিক মৃত্যুর কোনও সরাসরি যোগ পাওয়া যায়নি।

আসল কারণ কী? (Sudden Death)
রিপোর্ট বলছে, যাঁরা মারা গিয়েছেন তাঁদের মধ্যে অনেকেই ভুগছিলেন:
- দুর্বল হৃদ্পিণ্ড,
- অনিয়মিত হৃদস্পন্দন,
- ধমনীতে রক্ত চলাচলে সমস্যা,
- হৃদ্পিণ্ডে পেশির দুর্বলতা।
এই ধরনের সমস্যার সঙ্গে অতিরিক্ত ধূমপান, সারা রাত ধরে মদ্যপান, অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা অতিরিক্ত ব্যায়াম-এর যোগ পাওয়া গিয়েছে(Sudden Death)।

আরও পড়ুন: US Syria Relation : সিরিয়ার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ট্রাম্পের!
পরিসংখ্যান কী বলছে? (Sudden Death)
- যাঁদের পারিবারিকভাবে হৃদ্রোগের ইতিহাস রয়েছে এবং তাঁরা কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের আকস্মিক মৃত্যুর সম্ভাবনা বেড়েছে ৩ গুণ।
- ধূমপানকারীদের ক্ষেত্রে মৃত্যু সম্ভাবনা বেড়েছে ২ গুণ।
- অতিরিক্ত মদ্যপানকারীদের ক্ষেত্রে সেই হার ৬ গুণ।
- দুর্বল হৃদ্পিণ্ড থাকলে অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে মৃত্যুর সম্ভাবনা বেড়েছে ৩ গুণ।

কেন্দ্রের কড়া বার্তা (Sudden Death)
এই বিতর্কের আবহে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, “কোভিড টিকার সঙ্গে অকালমৃত্যুর সম্পর্কের দাবি ভিত্তিহীন এবং বৈজ্ঞানিক তথ্যের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। এমন ভুল তথ্য জনস্বাস্থ্যের পক্ষে বিপজ্জনক।” এক গবেষক বলেন, “প্রতিষেধক বর্ম হিসেবে কাজ করে। বরং যারা কোভিডে আক্রান্ত হয়ে পরবর্তীতে হৃদ্যন্ত্রে সমস্যা পেয়েছেন, তাঁদের ঝুঁকি বেশি। কিন্তু প্রতিষেধকের জন্য কেউ মারা যাচ্ছেন— এমন কোনও প্রমাণ নেই।
টিকার নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে ভয়ের বাতাবরণ তৈরি হলেও আইসিএমআর ও এমস-এর রিপোর্ট স্পষ্ট করে দিয়েছে— কোভিড প্রতিষেধক নয়, বরং অসুস্থ জীবনযাপন ও গোপন শারীরিক সমস্যা-ই অকালমৃত্যুর মূল কারণ। বিভ্রান্তি না ছড়িয়ে সচেতনতার বার্তাই এখন সবচেয়ে প্রয়োজন।