ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: নিউ ইয়র্ক সিটির অভিবাসন নিয়ন্ত্রক ব্র্যাড ল্যান্ডারকে অভিবাসন আদালতের বাইরে গ্রেফতার করা হয়েছে (NYC mayoral candidate arrested)। সেখানে তিনি মুখোশধারী ফেডারেল এজেন্টদের মুখোমুখি হয়েছিলেন। তারা একজন অভিবাসীকে আটক করার চেষ্টা করছিল। ল্যান্ডার, যিনি বিচারকের পরোয়ানা দেখার জন্য আবেদন করেছিলেন, তাকে হাতকড়া পরিয়ে দেয়ালে ধাক্কা দেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনাটি ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে, সহ-রাজনীতিবিদরা এজেন্টদের কর্মকাণ্ডকে নিন্দা করেছেন।
আদালত চত্বরে গ্রেফতার মেয়র পদপ্রার্থী (NYC mayoral candidate arrested)
নিউ ইয়র্ক সিটির বর্তমান ফিনান্স অফিসার ও মেয়র পদপ্রার্থী ব্র্যাড ল্যান্ডারকে মঙ্গলবার ফেডারেল এজেন্টরা হাতকড়া পরিয়ে গ্রেফতার করে (NYC mayoral candidate arrested)। তিনি তখন একজন অভিযুক্তকে ইমিগ্রেশন কোর্ট থেকে বাইরে নিয়ে যাচ্ছিলেন।
এজেন্টদের অভিযোগ, আইন লঙ্ঘন করেছেন ল্যান্ডার (NYC mayoral candidate arrested)
ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE) জানিয়েছে, ল্যান্ডারের বিরুদ্ধে আইনপ্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের ওপর হস্তক্ষেপ ও আক্রমণের অভিযোগ উঠেছে (NYC mayoral candidate arrested)। যদিও ল্যান্ডার সাফ জানিয়েছেন, তিনি কোনো এজেন্টকে আক্রমণ করেননি। গ্রেফতারের পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনার ভিডিওতে দেখা যায়, ল্যান্ডার অভিযুক্তকে নিয়ে আদালতের করিডোর ধরে বেরিয়ে যাচ্ছেন এবং ICE এজেন্টদের বলছেন, “আপনাদের কাছে কি বিচারকের ওয়ারেন্ট আছে? যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিককে গ্রেফতারের অধিকার আপনারা রাখেন না।”
ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতি ঘিরে বিতর্ক
ঘটনাটি ঘটেছে এমন এক সময়ে, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চলছে। অবৈধভাবে আমেরিকায় থাকা অভিবাসীদের গ্রেফতার ও বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এই অভিযানে দেশজুড়ে তল্লাশি এবং গ্রেফতারি অভিযান চলছে।
আরও পড়ুন: Ayatollah Ali Khamenei: ‘যুদ্ধ শুরু!’ ট্রাম্পের আত্মসমর্পণ প্রস্তাবের পরেই হুঙ্কার খামেনেই-র
ICE-এর দাবি, আইন রক্ষায় বাধা দিয়েছেন ল্যান্ডার
হোমল্যান্ড সিকিউরিটির মুখপাত্র ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলিন বলেন, “আমাদের ICE অফিসাররা ৪১৩ শতাংশ বেশি আক্রমণের মুখোমুখি হচ্ছেন। এই ধরনের রাজনীতিকেরা ভাইরাল হওয়ার লোভে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা নিয়ে খেলছেন। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। যদি কেউ অফিসারদের গায়ে হাত তোলে, তার পরিণাম ভোগ করতেই হবে।”
ল্যান্ডারের দাবি, বিচার না করেই অভিবাসীকে বহিষ্কার করা হচ্ছে
ছাড়া পাওয়ার পরে ল্যান্ডার বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ গঠন করা হয়নি। তিনি বলেন, যাঁকে তিনি সাহায্য করছিলেন, তাঁর নাম এডগার্ডো। এডগার্ডোর যথাযথ শুনানি হওয়ার অধিকার ছিল, কিন্তু সরকার ও আদালত সেটা মানেনি। ল্যান্ডার বলেন, “আমি ঠিক আছি, কিন্তু এডগার্ডো ভালো নেই। আইন শাসনের নিয়ম ভালো নেই, আমাদের সংবিধানও ভালো নেই।”
তীব্র নিন্দায় নিউ ইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল
নিউ ইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশিয়া জেমস এই গ্রেফতারির ঘটনাকে ‘গভীরভাবে অগ্রহণযোগ্য’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “অভিবাসীদের অধিকার রক্ষায় দাঁড়ানো একজন জনপ্রতিনিধিকে গ্রেফতার করা ক্ষমতার অপব্যবহার। আদালত চত্বরে এমন ভয় ও ভীতি প্রদর্শন অশোভন এবং এটি একটি বিপজ্জনক নজির তৈরি করল।”
আরও পড়ুন: Volcanic Eruption in Bali: ইন্দোনেশিয়ায় অগ্ন্যুৎপাত, এয়ার ইন্ডিয়ার বলি-গামী বিমান ফিরল দিল্লি
মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবাদ
নিউ ইয়র্ক সিভিল লিবার্টিস ইউনিয়নের ডিরেক্টর ডোনা লাইবারম্যান বলেন, “ল্যান্ডার শুধুমাত্র প্রশ্ন করছিলেন। এজন্য ICE তাঁকে গ্রেফতার করল, এটি গণতন্ত্রের ওপর হামলা। নির্বাচিত একজন জনপ্রতিনিধিকে শুধুমাত্র প্রশ্ন করার জন্য গ্রেফতার করাটা মানুষের ইচ্ছাকে অসম্মান করা। এটা পরিষ্কার করে দেয়, ICE আইনের শাসনের তোয়াক্কা করে না।”
ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপ ঘিরে দেশজুড়ে বিক্ষোভ
ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতির কারণে দেশে ক্রমেই বাড়ছে আতঙ্ক। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন শহরে, বিশেষ করে লস অ্যাঞ্জেলসে, ICE-এর বিরুদ্ধে ধারাবাহিক প্রতিবাদ চলছে। দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে এই নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ। নিউ ইয়র্ক সিটির মতো অভিবাসীবহুল শহরে জনপ্রতিনিধিকে গ্রেফতার করার এই ঘটনা রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে নতুন বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।