ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: লাগাতার হিন্দু নির্যাতনে ত্রস্ত ওপার বাংলা। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই পড়শী দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত। বাড়ছে ভারতের বিরুদ্ধে বিষোদগার। জমে উঠেছে পাকিস্তানের প্রতি প্রেম প্রীতি। এই আবহে মঙ্গলবার রাজভবনে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে চলা বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতাকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করলেন মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া সে দেশের অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্তারা। মিথ্যা বলে দাবি করলেন, বাংলাদেশে ঘটে চলা একের পর এক হিন্দু নির্যাতনের ঘটনাকেও।
বাংলাদেশে থামছে না হিন্দু নির্যাতন। প্রতিনিয়িত প্রকাশ্যে আসছে মারধর, বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার রাজভবনে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেন সে দেশের অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্তারা। ১৯৪৭ থেকে ৭১! মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা পাক সরকারের বিরুদ্ধে হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন। পূর্ব পাকিস্তানকে ছিন্ন করে পূর্ব বঙ্গ তথা পৃথক বাংলাদেশ তৈরিতে যাদের অবদান ছিলো অসামান্য, এবার তাঁরাই কলকাতা এসে বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের ঘটনা মিথ্যা বলে দাবি করলেন। এমনকি বলেন, কেউ কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে এসব ঘটিয়ে বাংলাদেশের বদনাম করছে। এসব কিছুই হয়নি বাংলাদেশে। তাঁদের দেশে শান্তি বজায় রয়েছে বলেও স্পষ্ট জানান তাঁরা।
সোমবার বিজয় দিবসে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সংসদেরর বাইরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বাংলাদেশ ইস্যুতে মুখ খোলেন তিনি। বলেন, ‘বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দেওয়া উচিত’। পড়শি দেশে লাগাতার হিন্দু নির্যাতনের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ, বিদেশমন্ত্রীর পদক্ষেপেরও দাবি জানিয়েছেন অভিষেক। মঙ্গলবার একই দাবি তুলে সংসদে সোচ্চার হন কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও।
এদিকে ধীরে ধীরে বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের পদধ্বনি ক্রমশ প্রকট হচ্ছে। সামনে আসছে মৌলবাদীদের সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ। জেল থেকে অবাধে ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে দুস্কৃতী-জঙ্গিরা। রীতিমতো ত্রাসের দেশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। পদ্মাপাড়ের এই পরিস্থিতি মোটেও কাম্য নয়। মঙ্গলবার রাজভবনে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ কথা বলেন, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। অস্থিরতা শেষে দ্রুত বাংলাদেশে শান্তি ফিরুক। বজায় থাকুক ভারত-বাংলাদেশ সৌহার্দ্য। সেই বার্তাও দেন তিনি।
আরও পড়ুন: https://tribetv.in/calcutta-high-court-dismissed-sujaykrishna-bhadra-bail-appeal/
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের এই চরম উত্তেজনার মধ্যে ওপার বাংলায় সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের ঘটনা ঘটলে এপার বাংলা যে চুপ থাকবে না, তা স্পষ্ট হচ্ছে প্রতিদিন-প্রতিমুহুর্তে। ভারত বিমুখ হলে অর্থনৈতিক ভাবে বাংলাদেশ যে বিপন্ন হবে, তা কি বুঝছে অনভিজ্ঞ ইউনূস সরকার? উদ্বিগ্ন ওপার বাংলার গণতন্ত্র প্রিয় মানুষজন, উদ্বেগে এপার বাংলাও।