ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ১৯৯৯ সালে নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে তৎকালীন কাশ্মীরের কার্গিল জেলায় ঢুকে পড়ে পাকিস্তানি সেনা(Operation Safed Sagar)। তাদেরকে পিছু হঠাতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে শুরু করা হয় ‘অপারেশন বিজয়’। ২ মাস ধরেছিল চলেছিল ভারত-পাক যুদ্ধ। ভারতীয় সেনাদের মরণপণ লড়াইয়ের মুখে শেষপর্যন্ত ১৯৯৯ সালের ২৬ জুলাই পিছু হঠতে বাধ্য হয় পাক সেনা। অপারেশন বিজয়ের মতোই ভারতীয় বায়ু সেনাবাহিনীর অপারেশনের নাম ছিল ‘অপারেশন সফেদ সাগর’। সোমবার সেই ‘অপারেশন সফেদ সাগরে’র ২৬তম বর্ষপূতি। আর সেই উপলক্ষ্যে ভারত কী ভাবে পাকিস্তানি অনুপ্রবেশকারীদের প্রতিহত করেছিল, তার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছে বিমানবাহিনী।
‘অপারেশন সফেদ সাগর’ (Operation Safed Sagar)
এক্স পোস্টে বায়ুসেনা জানিয়েছে, ‘১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর কাশ্মীরে এটিই ছিল প্রথম বৃহৎ পরিসরে বিমান শক্তির ব্যবহার(Operation Safed Sagar)। এর আগে কখনও কোনও বিমান বাহিনীকে দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে এত উচ্চতার নির্ভুল অভিযানের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি – যা সামরিক বিমান চলাচলের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী মুহূর্ত তৈরি করেছে।বিমানবাহিনী বর্ণনা করেছে কীভাবে অপারেশন সফেদ সাগর বিভিন্ন দিক থেকে অনুপ্রেরণামূলক ভূমিকা পালন করেছিল। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এতে অপ্রচলিত ভূমিকায় বিমান শক্তি ব্যবহার করা হয়েছিল, স্থানীয় সংঘাতে বিমান সম্পদের সীমিত ব্যবহারের কার্যকারিতা প্রদর্শন করা হয়েছিল এবং দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত ধারণা ভেঙে দেওয়া হয়েছিল যে বিমান শক্তির ব্যবহার অনিবার্যভাবে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে পরিণত হবে।’

যুদ্ধবিমানের বর্ণনা (Operation Safed Sagar)
বায়ুসেনার তরফে আরও বলা হয়েছে, ‘এই অভিযান কেবল ভারতীয় বিমান বাহিনীর বহুমুখী দক্ষতা এবং দৃঢ় সংকল্পই প্রদর্শন করেনি বরং কম তীব্রতার সংঘাতের ক্ষেত্রেও – এমনকি ক্যালিব্রেটেড বিমান হামলার প্রতিরোধমূলক মূল্যও প্রতিষ্ঠা করেছে(Operation Safed Sagar)। এটি প্রমাণ করেছে যে আন্তর্জাতিক সীমানা অতিক্রম না করেই বিমান শক্তি যুদ্ধের গতিপথকে চূড়ান্তভাবে পরিবর্তন করতে পারে।সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারতীয় বিমানবাহিনী একটি ভিডিওও পোস্ট করেছে। যেখানে অভিযানের সময় তারা কোন কোন যুদ্ধবিমান ব্যবহার করেছিল তার বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। ‘অপারেশন সফেদ সাগরে’র সময় ভারতীয় বিমানবাহিনী মিরাজ ২০০০, মিগ ২১, মি ১৭, জাগুয়ার, মিগ ২৩, মিগ ২৭, চেতক, মিগ ২৯ ব্যবহার করে।
আরও পড়ুন- Operation Sindoor: ‘অসৎ কংগ্রেস!’ অপারেশন সিঁদুরের পরেই পাকিস্তানকে তথ্য, ভুল সংশোধন জয়শংকরের
‘অপারেশন বিজয়’ (Operation Safed Sagar)
১৯৯৯ সালে মে থেকে জুলাই টানা তিন মাস ধরে জম্মু ও কাশ্মীরের দ্রাস-কার্গিল সেক্টরে চলে লড়াই(Operation Safed Sagar)। পাকিস্তানের দিক থেকে নাগাড়ে অনুপ্রবেশ চলতে থাকে কার্গিলে। পাকিস্তান প্রথমে দাবি করে যে, জঙ্গিরাই এসব করছে। পরে নিজের আত্মজীবনী ‘ইন দ্য লাইফ অফ ফায়ার’-এ পাকিস্তানের তৎকালীন সেনাপ্রধান পারভেজ মুশারফ স্বীকার করেছিলেন যে অনুপ্রবেশকারীদের মদ্যে ছিল পাক সেনাও।শত্রু মোকাবিলায় ভারত শুরু করে ‘অপারেশন বিজয়’।সেই সময় পাহাড়ে পাকিস্তানি সেনাকে পরাস্ত করতে ভারতীয় সেনা বিশেষ গোলকধাঁধা তৈরি করে। যা বুঝতে না পারায় শোচনীয় হার হয় পাকিস্তানের।কার্গিল যুদ্ধে ৫০০ জনেরও বেশি ভারতীয় জওয়ান শহিদ হয়েছিলেন। দু দেশের সম্পর্ক সেই সময় অন্য মাত্ৎায় পৌঁছায়।

আরও পড়ুন- Yadav Family: ‘ভোটের আগে গোটা পরিবার নাটক করছে!’ লালু-পুত্রের বিরুদ্ধে সরব স্ত্রী
‘অপারেশন সিঁদুর’ (Operation Safed Sagar)
গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলায় ২৫ ভারতীয় ও এক নেপালি নাগরিক নিহত হওয়ার প্রতিশোধ হিসেবে ৭ মে ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালানো হয়(Operation Safed Sagar)।পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে অবস্থিত নয়টি জঙ্গি ঘাঁটিকে লক্ষ্য করে এই অভিযান চালানো হয়, বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য এবং সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে তাদের জড়িত থাকার প্রমাণের ভিত্তিতে জায়গাগুলি বেছে নেওয়া হয়।ভারতীয় বিমানবাহিনী (আইএএফ) অপারেশন সিঁদুরে তার নির্ধারিত কাজগুলি নির্ভুল এবং পেশাদারিত্বের সঙ্গে সফলভাবে সম্পাদন করেছে। জাতীয় উদ্দেশ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সুচিন্তিত ও বিচক্ষণতার সঙ্গে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
