ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ২২ এপ্রিল ঘটে যাওয়া ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর পর গোটা দেশ যখন শোকস্তব্ধ, ঠিক সেই সময় তদন্তে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে (Pahalgam Attack Drug Link)। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (NIA India)-র সাম্প্রতিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, হামলার পেছনে শুধু ধর্মীয় উগ্রতা নয়, ছিল মাদকপাচারের মাধ্যমে সন্ত্রাসে অর্থ জোগানোর সুগভীর চক্রান্ত।সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া এনআইএ’র হলফনামায় জানা গিয়েছে, পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) দীর্ঘদিন ধরেই মাদকপাচারকে হাতিয়ার করে ভারতে সন্ত্রাস ছড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ‘লশকর-এ-ত্যায়বা’ তাদের সামনে রেখে ‘মাদক-সন্ত্রাস’ চালাচ্ছে ইসলামাবাদ। এই হামলার পিছনেও ছিল একই রকম একটি চক্রান্ত।
মুন্দ্রা বন্দর হয়ে মাদকপাচারের ছক(Pahalgam Attack Drug Link)
তদন্তে উঠে এসেছে, গুজরাতের মুন্দ্রা বন্দরের মাধ্যমে ভারতে প্রবেশ করানো হয়েছিল প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকার মাদক (Pahalgam Attack Drug Link)। ট্যালকম পাউডারের ছদ্মবেশে ২,৯৮৮.২ কেজি হেরোইন পাঠানো হয়েছিল আফগানিস্তান থেকে ইরানি মধ্যস্থতাকারীদের সহায়তায়। এরপর পারস্য উপসাগর হয়ে মুন্দ্রায় সেই মাদক পৌঁছায়। মাদকগুলো দিল্লির নেব সরাই এবং আলিপুর এলাকার গুদামে মজুত করার পরিকল্পনা ছিল। এখান থেকে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার ছক কষা হয়েছিল।কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের দাবি, পাচার হওয়া মাদক বিক্রির অর্থ সরাসরি লশকর-এ-ত্যায়বা এবং অন্যান্য পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনের হাতে তুলে দেওয়া হত, যাতে ভারতে নাশকতা চালানোর জন্য তাদের অর্থের অভাব না হয়। এই অর্থেই পহেলগাঁও হামলার মতো সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ সংগঠিত করা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এনআইএ’র তৎপরতায় ফাঁস ষড়যন্ত্র(Pahalgam Attack Drug Link)
এনআইএ’র তৎপরতায় মুন্দ্রা বন্দর থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার হওয়ায় আইএসআইয়ের এই ষড়যন্ত্র ভেস্তে যায় (Pahalgam Attack Drug Link)। তদন্তে ধৃত কবীর তলোয়ার সুপ্রিম কোর্টে জামিনের আবেদন করলেও কেন্দ্রীয় সরকার তার প্রবল বিরোধিতা করেছে। অতিরিক্ত সলিসিটার জেনারেল ঐশ্বর্য ভাটি এজলাসে জানান, ‘‘আইএসআই বারবার একই কৌশলে সন্ত্রাসের জন্য অর্থ জোগাড় করছে।’’এনআইএ জানিয়েছে, অতীতে পঞ্জাবকেই প্রধান মাদকপথ হিসেবে ব্যবহার করত আইএসআই। কিন্তু নিরাপত্তা ব্যবস্থার কঠোরতায় এখন তারা গুজরাত-সহ পশ্চিম ভারতের উপকূলীয় এলাকা ব্যবহার করছে(Pahalgam Attack Drug Link)।

আরও পড়ুন: Nawaz Sharif On Pahalgam : ক্ষুব্ধ ভারতকে শান্ত করতে ভাই শাহবাজকে কী পরামর্শ দিলেন নওয়াজ শরীফ?
পহেলগাঁও হামলার তদন্ত(Pahalgam Attack Drug Link)
পহেলগাঁও হামলার তদন্তভার কেন্দ্র সরকার ২৬ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে এনআইএ’র হাতে তুলে দেয় (Pahalgam Attack Drug Link)। সন্ত্রাসদমন শাখার আইজি, ডিজি এবং এসপি পদমর্যাদার আধিকারিকদের নিয়ে গঠিত একটি বিশেষ দল তদন্ত চালাচ্ছে। কোথা দিয়ে জঙ্গিরা ঢুকল, হামলা কখন শুরু হল, কারা সরাসরি জড়িত ছিল—প্রতিটি বিষয় খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে।নিহতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান রেকর্ড করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ২০০ জনের বেশি স্থানীয় বাসিন্দাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের দাবি, স্থানীয় বাসিন্দাদের একটি অংশ জঙ্গিদের আশ্রয় ও অস্ত্র সরবরাহে সাহায্য করেছে। অন্তত ১৫ জনের নাম পাওয়া গিয়েছে, যাদের মোবাইলে হামলার আগে গ্রুপ চ্যাটের মাধ্যমে পরিকল্পনার ইঙ্গিত মিলেছে।

অস্ত্রভাণ্ডারের সন্ধান(Pahalgam Attack Drug Link)
সেদোরি নালা মছিলের জঙ্গলে অভিযান চালিয়ে নিরাপত্তাবাহিনী একটি জঙ্গি বাঙ্কারের খোঁজ পেয়েছে (Pahalgam Attack Drug Link)। সেখান থেকে পাঁচটি একে-৪৭ রাইফেল, আটটি ম্যাগাজিন, একটি পিস্তল ও বিপুল পরিমাণ কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: US On Pahalgam : এক সুরে চিন-আমেরিকা! পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর কাছাকাছি দুই “সুপার পাওয়ার”?
পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া(Pahalgam Attack Drug Link)
এদিকে, পাকিস্তান হামলার দায় অস্বীকার করেছে (Pahalgam Attack Drug Link)। তাদের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ দাবি করেছেন, নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য রাশিয়া, চিন বা অন্য কোনও পশ্চিমী দেশের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। যদিও ভারতের তরফে সেই দাবিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।পাকিস্তান মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (TRF) হামলার দায় স্বীকার করলেও পরে তা অস্বীকার করে উল্টো ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা র-এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলে। ভারতীয় গোয়েন্দারা অবশ্য নিশ্চিত করেছেন, হামলাকারীদের মধ্যে দু’জন ভারতীয় হলেও অধিকাংশই পাকিস্তানের নাগরিক।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও ভারতের অবস্থান(Pahalgam Attack Drug Link)
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে (Pahalgam Attack Drug Link) । চিন পাকিস্তানের নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি সমর্থন করলেও, আন্তর্জাতিক মহলের বড় অংশ নয়াদিল্লির বক্তব্যকেই সমর্থন করছে।প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) ইতিমধ্যেই ফৌজকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ভবিষ্যতে ভারত আরও বড় কোনও পাল্টা পদক্ষেপ নিতে পারে, যাতে এই ধরনের মাদক-সন্ত্রাস চক্রান্তের স্থায়ী সমাধান করা যায়।