ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক চূড়ান্ত উত্তেজনার পর্যায়ে পৌঁছেছে (Pahalgam Terror Attack)। এই পরিস্থিতিতে ভারত সরকারের তরফে ১৯৬০ সালের ঐতিহাসিক সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি সাময়িক ভাবে স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত ঘিরে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। ভারতের এই পদক্ষেপের কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে আন্তর্জাতিক আদালত ও বিশ্বব্যাঙ্কে (World Bank) ভারতের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে পাকিস্তান। পাক সরকারের এক মন্ত্রীর দাবি, বিষয়টি নিয়ে আইনি পরামর্শ শেষ পর্যায়ে এবং খুব শীঘ্রই পদক্ষেপ করা হবে।
ভারতের পদক্ষেপের প্রেক্ষাপট (Pahalgam Terror Attack)
গত সপ্তাহে জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁও এলাকায় জঙ্গি হামলায় অন্তত ২৬ জন নিরীহ পর্যটক প্রাণ হারান(Pahalgam Terror Attack)। ভারত সরাসরি এই হামলার জন্য পাকিস্তান ঘাঁটি-ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনগুলিকে দায়ী করে। এর জবাবে নয়াদিল্লি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ তৈরির কৌশল নেয়। তারই অঙ্গ হিসেবে ১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি সাময়িক ভাবে স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করা হয়।
কী ছিল সিন্ধু চুক্তির শর্ত?(Pahalgam Terror Attack)
এই চুক্তি অনুযায়ী, সিন্ধু নদী ও তার ছয়টি উপনদীর মধ্যে তিনটি— ঝিলম, চেনাব এবং সিন্ধুর জল ব্যবহারের অধিকার দেওয়া হয়েছিল পাকিস্তানকে(Pahalgam Terror Attack)। আর বাকি তিনটি— সাটলেজ, বিয়াস ও রাভির জল ব্যবহারের অধিকার ছিল ভারতের হাতে। চুক্তির মূল শর্ত ছিল, কোনও দেশই অন্য পক্ষের নদীর জলের প্রবাহ সম্পূর্ণ বন্ধ করতে পারবে না। তবে নিজেদের প্রয়োজনে নির্দিষ্ট পরিমাণ জল ব্যবহারের অধিকার থাকবে।চুক্তির ভিত্তিতে পাকিস্তান সিন্ধু অববাহিকার প্রায় ৮০ শতাংশ জল ব্যবহার করে। এই জলেই নির্ভরশীল পাকিস্তানের বৃহত্তর অংশের কৃষি ব্যবস্থা। ফলে চুক্তি স্থগিত হলে পাকিস্তানের পঞ্জাব এবং সিন্ধু প্রদেশে কৃষিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

পাকিস্তানের হুঁশিয়ারি(Pahalgam Terror Attack)
পাকিস্তানের আইন ও বিচার প্রতিমন্ত্রী আকিল মালিক এক সাক্ষাৎকারে বলেন,“সিন্ধু জলচুক্তি ভারতের একতরফা স্থগিত রাখা আন্তর্জাতিক চুক্তিভঙ্গ(Pahalgam Terror Attack)। আমরা বিষয়টি বিশ্বব্যাঙ্ক, আন্তর্জাতিক আদালত এবং আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতে তুলে ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আলোচনা প্রায় শেষ। খুব শীঘ্রই আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”তিনি আরও জানান, ভারতের এই সিদ্ধান্ত ভিয়েনা কনভেনশনের পরিপন্থী। পাকিস্তান এই বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তুলে ধরার মাধ্যমে ভারতের উপর কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে চায়।

ভারতের নীরবতা(Pahalgam Terror Attack)
ভারত এখনও এই বিষয়ে সরকারি ভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি(Pahalgam Terror Attack)। তবে প্রতিরক্ষা ও কূটনৈতিক মহলের মতে, পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গি হামলার প্রেক্ষিতে ভারতের প্রতিক্রিয়া ‘ন্যায্য ও প্রাসঙ্গিক’। চুক্তির নৈতিক ভিত্তি ভেঙে পড়ায় এই সিদ্ধান্ত অনিবার্য হয়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক ইতিমধ্যেই জটিলতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তির স্থগিতাদেশ শুধু দুই দেশের নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে। এখন আন্তর্জাতিক মহল তাকিয়ে আছে বিশ্বব্যাঙ্ক ও আন্তর্জাতিক আদালতের পরবর্তী প্রতিক্রিয়ার দিকে। জল-নির্ভর কৃষিপ্রধান পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ অনেকাংশে নির্ভর করছে এই জলস্রোতের উপর।