ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার জেরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক (Pahalgam Terror Attack)। এই হামলার জবাবে ভারতের তরফে নেওয়া একাধিক কড়া কূটনৈতিক পদক্ষেপের মধ্যে অন্যতম ছিল ১৯৬০ সালের সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত। আর এই ঘোষণাতেই যেন দৃশ্যত মাথায় হাত পাকিস্তানের। ইসলামাবাদ থেকে সরাসরি হুঁশিয়ারি এসেছে—ভারতের এই সিদ্ধান্তকে তারা ‘জল-যুদ্ধ’ হিসেবে দেখছে।
ভারতের জল-যুদ্ধ (Pahalgam Terror Attack)
পাকিস্তানের বিদ্যুৎমন্ত্রী আওয়াইস লেখরি বুধবার রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান, “ভারতের সিদ্ধান্ত একপ্রকার জল-যুদ্ধ(Pahalgam Terror Attack)। প্রতিটি জলবিন্দুর উপর পাকিস্তানের অধিকার রয়েছে এবং আমরা তা রক্ষা করব—আইনত, রাজনৈতিক ভাবে এবং আন্তর্জাতিক স্তরেও।” একই সুর শোনা গিয়েছে পাক প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ উপদেষ্টা সরতাজ আজ়িজ়ের গলাতেও। তাঁর বক্তব্য, “সিন্ধু জলচুক্তি প্রত্যাহার হলে, তা একটি শত্রুতামূলক এবং যুদ্ধের পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত করা যেতে পারে।”
জরুরি বৈঠক(Pahalgam Terror Attack)
এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার পাকিস্তানে বসছে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির জরুরি বৈঠক(Pahalgam Terror Attack)। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফের (Shehbaz Sharif) উপস্থিতিতে এই বৈঠকে ভারতের সিদ্ধান্তের পরবর্তী প্রতিক্রিয়া ঠিক করা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী মহম্মদ ইশাক দার জানিয়ে দিয়েছেন, “ভারতের প্রতিটি পদক্ষেপের যথাযথ ও কড়া জবাব দেওয়া হবে।”সিন্ধু জলচুক্তির গুরুত্ব এবং প্রেক্ষাপটও এই পরিস্থিতিতে নতুন করে সামনে এসেছে।

সিন্ধু জল চুক্তি (Pahalgam Terror Attack)
১৯৬০ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর নেতৃত্বে ভারত এবং আয়ুব খানের শাসনকালে পাকিস্তানের মধ্যে এই ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়(Pahalgam Terror Attack)। চুক্তি অনুযায়ী,
সিন্ধু, বিতস্তা (ঝিলম), চন্দ্রভাগা (চেনাব) নদীর জলের অধিকাংশ (প্রায় ৮০%) ব্যবহারাধিকার দেওয়া হয় পাকিস্তানকে। ভারতের জন্য নির্ধারিত ছিল বিপাশা (বিয়াস), শতদ্রু (সাতলেজ), ইরাবতী (রাভি) নদীর জল (প্রায় ২০%)। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, এই চুক্তির শর্ত ছিল—কোনও পক্ষই জলপ্রবাহে বাধা দিতে পারবে না, যুদ্ধাবস্থাতেও নয়।

চুক্তির স্থগিতাদেশ(Pahalgam Terror Attack)
এই চুক্তির স্থগিতাদেশ নিয়ে পাকিস্তান শুধু উদ্বিগ্ন নয়, বরং তা আন্তর্জাতিক জলসম্পদ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এক বিপজ্জনক নজির হয়ে উঠতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। সরতাজ আজ়িজ়ের মতে, “যদি ভারত সিন্ধু চুক্তি থেকে সরে আসে, তবে চিনও ব্রহ্মপুত্র নদীর জল আটকে রাখার যুক্তি খুঁজে পেতে পারে।”উল্লেখ্য, ভারতের মিষ্টি জলের ৩০ শতাংশ আসে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা থেকে। ফলে জল-রাজনীতি এই অঞ্চলে ভিন্ন মাত্রা নিতে পারে।
কৌশলগত চাপ (Pahalgam Terror Attack)
বিশ্লেষকদের মতে, সিন্ধু চুক্তি স্থগিত করা ভারতের একটি কৌশলগত চাপ তৈরির পদক্ষেপ। পাকিস্তান যদিও হুঁশিয়ারি দিচ্ছে, কিন্তু বাস্তবে তারা আন্তর্জাতিক মহলে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কতটা সাড়া ফেলতে পারবে, সেটাই এখন দেখার।এই মুহূর্তে দক্ষিণ এশিয়ায় জল হয়ে উঠেছে নতুন কূটনৈতিক অস্ত্র। যুদ্ধের ময়দান ছাড়িয়ে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জল এখন বইছে উত্তপ্ত স্রোতে।