ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বিয়ে হয়েছিল মাত্র সাত দিন, বিয়ের পর নব দম্পতি (Pahalgam Terror Attack) গিয়েছিলেন হানিমুনে। সেই সুখের দৃশ্য এক লহমায় বদলে গেল শোকে। ভূস্বর্গের সৌন্দর্যের মাঝে পড়ে রয়েছে স্বামীর রক্তাক্ত মৃতদেহ, আর তা আগলে বসে রয়েছেন স্ত্রী। এই দৃশ্য দেখে মন খারাপ গোটা দেশের। কাশ্মীরে জঙ্গি হানায় নিহত হয়েছেন অন্তত ২৬ জন। এই ঘৃণ্য ঘটনায় প্রতিবাদে সরব গোটা দেশ। দোষীদের কঠিন শান্তির দাবি জানাল বাংলা টলিপাড়াও। এই ঘটনায় কী বলছেন তারা?
কী বললেন সম্পূর্ণা? (Pahalgam Terror Attack)
অভিনেত্রী (Pahalgam Terror Attack) সম্পূর্ণা লাহিড়ী (Sampurna Lahiri) বলেন, ” খুবই নিন্দনীয় ঘটনা, এভাবে কিভাবে যে ক্ষমতা দেখানো যায় সেটা আমার কাছে পরিষ্কার নয়। সন্ত্রাসবাদ আগে ছিল না, হঠাৎ হল, এরকম তো নয়। কোনও একটি গোষ্ঠী বা একাধিক গোষ্ঠী, তাদের ক্ষমতা দেখানোর জন্য এটি করে এসেছে। এটা কবে থামবে কিংবা কিভাবে থামানো যায়, সেটা আগে দেখতে হবে।”
এই জঘন্য ঘটনা গ্রহণীয় নয়….(Pahalgam Terror Attack)
গতবছরই কাশ্মীরে (Pahalgam Terror Attack) গিয়েছিলেন দেবলীনা কুমার (Devlina Kumar)। তখন পরিস্থিতি ছিল অন্যরকম। বলেন, ” গত বছর জুন মাসে ওই একই জায়গাতে গিয়েছিলাম। যখন গিয়েছি মনে হয়েছে ওরা ভীষণই অতিথি পরায়ণ। আমার মনে হয় না ওখানকার মানুষরা এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। কারণ ওরা আমাদের দেশের মানুষ। সন্ত্রাস তো আর বলে আসে না। অনেকেই বলছেন রিভেঞ্জ নেওয়ার কথা। কিন্তু যে মানুষগুলো চলে গেল তারা আর কোনও দিনও ফিরে আসবে না।” অভিনেতা বিক্রমের (Vikram Chatterjee) কথায়, “এই ঘটনা কোনও ভাবেই গ্রহণীয় নয়। আমাদের সরকার এবং আমাদের সেনা এই ঘটনার বিরুদ্ধে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নিচ্ছে এবং নেবে।”
কাশ্মীরিদের কাছে পর্যটক মানেই ঈশ্বর! (Pahalgam Terror Attack)
কাশ্মীর কাণ্ডের পর বিধ্বস্ত হয়ে যেতে পারে কাশ্মীরের গোটা অর্থনীতি, এমনটা আশঙ্কা করছেন অনেকেই। এ প্রসঙ্গে অভিনেতা শান্তিলাল মুখার্জি (Shantilal Mukherjee) বলেন, “আমি কিছুদিন আগেই সপরিবারে কাশ্মীর গিয়েছিলাম। সেখানকার সাধারণ মানুষরা বোঝাতে চেয়েছিলেন যে, আপনারা আসুন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। কারণ আপনারা না এলে, আমরা সংসার চালাতে পারি না। এবার এই ঘটনার পর ওখানে কেউ যাবার সাহস পাবে না। যারা কাশ্মীরের স্থানীয় মানুষ, তাদের ক্ষতি হল। তাদের রুটিরুজি বন্ধ হল। টুরিস্ট না যাওয়ার ফলে যারা খেতে পাবে না তারা এক ধর্মের, আর যারা ভয়ে যাবে না তারা আর এক ধর্মের। ধর্মটা কোনও ফ্যাক্টর নয়। আমি যখন গিয়েছিলাম, তখন আমাকে ওখানকার এক বয়স্ক ভদ্রলোক পরিষ্কার বলেছিলেন, আমরা ওদের কাছে ঈশ্বর। আমাদের দেওয়া পয়সায় ওরা খাবে। যারা এমন জঘন্য কাণ্ড ঘটাল, তারা কিন্তু তাদের স্বজাতির মানুষদের খাবারটা বন্ধ করল। তাই এখানে এই ভাবে ধর্ম দেখে লাভ নেই। আর রাজনীতি আর ব্যবসায়ীরা সবসময় ফায়দা খোঁজে।”
“ধর্ম একেবারেই ব্যক্তিগত”
পরিচালক কৌশিক গাঙ্গুলীর (Kaushik Ganguly) বক্তব্য, ধর্মকে টেনে এনে যে ভাবে সমাজের অধঃপতন হচ্ছে, এমন চিত্র আগে ছিল না। বলেন, “ধর্ম জিজ্ঞাসা করে গুলি করা এটা একেবারেই গ্রহণ করা যায় না। এটা খুব বড় সমস্যা। একেবারে সহজে সমাধান করার মতো ব্যাপার নয়। ধর্ম একেবারেই ব্যক্তিগত। এই সমাজ আমরা আগে দেখিনি।”
আরও পড়ুন: Pahalgam Attack: জঙ্গিকে আসতে দেখেই কলমা পড়ে প্রাণ রক্ষা অধ্যাপক দেবাশিস ভট্টাচার্যের
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তনুশ্রী
কাশ্মীরের জঙ্গি হামলার দিন ১০ মিনিট আগে ওই স্থানে ছিলেন অভিনেত্রী তনুশ্রী চক্রবর্তীর (Tanusree Chakraborty) আত্মীয়রা। অভিনেত্রী মনে করছেন, একেবারেই ভাগ্যের জোরে তারা বেঁচে গিয়েছেন। বলেন, “আমি নিজেও কাশ্মীর গিয়েছি। ঘটনার সময় আমার পিসির মেয়েরা ওখানে ছিল। ওরা দশ মিনিট আগে নিচে নেমে এসেছে। যারা করেছে, তারা তো মানুষ। ধর্ম জিজ্ঞাসা করে, নাম জিজ্ঞাসা করে মানুষ মারা…. রাজনীতি হচ্ছে নাকি হচ্ছে না সেটা পরের কথা। কিন্তু এই জিনিসটা কোথা থেকে আসছে, কিভাবে হচ্ছে দেখতে হবে। যারা মারা যাচ্ছে তাদের তো কোনও দোষ নেই। শুধু একটাই কথা বলব, যারা এমন কাণ্ড করেছে তাদের কঠোর এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।”