ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে মুনিরকে স্বাগত জানানোর পর (Pak Proposes Nobel Peace Prize For Trump), ভারত-পাক যুদ্ধবিরতিতে বিতর্কিত ভূমিকার জন্য মার্কিন রাষ্ট্রপতির জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কারের প্রস্তাব করেছে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের প্রস্তাব: ভারত-পাক বিরোধ মেটানোর জন্য ট্রাম্পই উপযুক্ত শান্তির দূত (Pak Proposes Nobel Peace Prize For Trump)
২০২৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম প্রস্তাব করল পাকিস্তান (Pak Proposes Nobel Peace Prize For Trump)। দেশটির দাবি, ভারত ও পাকিস্তানের সাম্প্রতিক উত্তেজনার সময় ট্রাম্প “সুস্পষ্ট কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ” করেছেন। এই খবর প্রকাশ করেছে The Hindu, যা পাকিস্তানের এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এর পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই প্রস্তাব এমন সময় এল, যখন ভারত সরকারের আধিকারিকরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন—এই বিরোধে কোনও তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা ছিল না। ভারতের মতে, ট্রাম্প যে ভারত-পাক বিরোধে হস্তক্ষেপ করেছেন বলে দাবি করেছেন, তা সত্য নয়।
হোয়াইট হাউসে পাক সেনা প্রধান, শুরু বিতর্ক (Pak Proposes Nobel Peace Prize For Trump)
এই সপ্তাহের শুরুতে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আসিম মুনির হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেন (Pak Proposes Nobel Peace Prize For Trump)। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র আনা কেলি জানান, মুনির ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্ভাব্য পরমাণু সংঘাত ঠেকানোর জন্য। সেই কারণেই তাঁকে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজের আমন্ত্রণ জানানো হয়।
তবে ভারতের সেনাবাহিনীর তরফে বারবার জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত একান্তভাবেই দুই দেশের ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশনস (DGMO)-এর মধ্যে সরাসরি আলোচনার মাধ্যমেই হয়েছে। কোনও তৃতীয় পক্ষ সেখানে ছিল না।
আরও পড়ুন: Iran Israel Conflict : ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি দু’বছর পিছোল, দাবি ইজরায়েলের!
পাকিস্তানের বিবৃতি: ট্রাম্পই আসল শান্তিদূত
পাকিস্তান সরকারের তরফে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে টানটান উত্তেজনার মুহূর্তে ট্রাম্প “কৌশলগত দূরদৃষ্টি এবং ব্যতিক্রমী নেতৃত্ব” দেখিয়েছেন। তাঁর হস্তক্ষেপে একটি সম্ভাব্য পারমাণবিক সংকট এড়ানো সম্ভব হয়েছে। বিবৃতিতে তাঁকে “একজন প্রকৃত শান্তি প্রতিষ্ঠাতা” বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে, যিনি কূটনীতির মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চান। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, কাশ্মীর ইস্যু মেটানোর জন্য ট্রাম্প আগেও “উদ্যোগী হয়েছেন”।
মোদীর প্রত্যাখ্যান: কাশ্মীর ও ট্রাম্প—উভয়ই নয়
তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই দাবিকে সম্পূর্ণ নাকচ করে দিয়েছেন। সম্প্রতি জি৭ সম্মেলনের সময় ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপের সময় তিনি স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, কাশ্মীর সমস্যা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং সেখানে কোনও তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের জায়গা নেই। এছাড়া মোদী ট্রাম্পের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছেন, যেখানে তাঁকে জি৭-র পরে ওয়াশিংটন সফরের অনুরোধ জানানো হয়েছিল। মোদী জানিয়েছেন, আগেই তাঁর কর্মসূচি ঠিক হয়ে গিয়েছিল, ফলে তিনি যেতে পারছেন না।
ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া: ‘‘আমাকে চার-পাঁচবার নোবেল দেওয়া উচিত ছিল!’’
শুক্রবার নিজেই ট্রাম্প বলেন, নোবেল শান্তি পুরস্কার তাঁর প্রাপ্য। কারণ হিসাবে তিনি উল্লেখ করেন—ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা প্রশমনের ভূমিকা এবং কঙ্গো-রুয়ান্ডা শান্তিচুক্তি। তিনি বলেন, ‘‘আমার চার-পাঁচবার নোবেল পাওয়া উচিত ছিল।’’ সঙ্গে যুক্ত করেন, ‘‘ওরা আমাকে নোবেল দেয় না, কারণ ওরা শুধু লিবারেলদেরই এই পুরস্কার দেয়।’’
দুই দেশের অবস্থান স্পষ্ট, বিতর্ক তবু চলছেই
পাকিস্তান যেখানে ট্রাম্পকে শান্তিদূত হিসেবে তুলে ধরছে, ভারত বারবার বলছে, কোনও তৃতীয় পক্ষ এই সংঘাতের মাঝে ছিল না। এই নিয়ে আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে নয়া বিতর্ক শুরু হয়েছে, তবে এখনই নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া আসেনি।