ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ট্যাঙ্ক উড়িয়ে দিতে সক্ষম মার্কিন ‘জ্যাভলিন’ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ভয়ঙ্কর আত্মঘাতী ড্রোন— এই জোড়া বিধ্বংসী অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে পাকিস্তানের কুখ্যাত বিদ্রোহী গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (Pakistan Army vs TTP)। সাম্প্রতিক ভিডিয়ো প্রকাশ করে এই গোষ্ঠী পাকিস্তানি সেনার বিরুদ্ধে বড়সড় লড়াইয়ের প্রস্তুতির বার্তা দিয়েছে। আর তাতেই রাওয়ালপিন্ডির সেনা শিবিরে তৈরি হয়েছে চরম উদ্বেগ।
এফজিএম-১৪৮ জ্যাভলিন (Pakistan Army vs TTP)
ভিডিয়োতে টিটিপি যোদ্ধাদের হাতে দেখা গিয়েছে আমেরিকার তৈরি ‘এফজিএম-১৪৮ জ্যাভলিন’ ক্ষেপণাস্ত্র, যা মূলত ট্যাঙ্ক ধ্বংস করার জন্য ব্যবহৃত হয় (Pakistan Army vs TTP)। এই অস্ত্র আফগানিস্তান এবং ইউক্রেন যুদ্ধে তার কার্যকারিতা ইতিমধ্যেই প্রমাণ করেছে। সাধারণ সৈনিকের পক্ষেও সহজে বহনযোগ্য এই ‘ফায়ার অ্যান্ড ফরগেট’ ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধক্ষেত্রে মারাত্মক হুমকি হিসেবে চিহ্নিত।
আফগান তালিবানের হাত ঘুরেই অস্ত্র টিটিপির কাছে?
বিশ্লেষকদের মতে, ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সময় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ফেলে রেখে গিয়েছিল মার্কিন বাহিনী (Pakistan Army vs TTP)। সেই অস্ত্রের বড় একটি অংশ এখন আফগান তালিবানের হাতে। ইসলামাবাদ দাবি করছে, সেখান থেকেই টিটিপি-র হাতে ‘জ্যাভলিন’ পৌঁছেছে। পাক সেনার এক আধিকারিক ‘ডন’ সংবাদপত্রকে জানিয়েছেন, “দেশের ভিতরে এই অস্ত্রের কোনও অস্তিত্ব নেই। তবে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এর সাহায্যে হামলা চালানো হতে পারে।”

আরও পড়ুন: UPI Disruption : দেশ জুড়ে ফের ইউপিআই বিভ্রাট, অনলাইন লেনদেনে ৩০ দিনে চতুর্থবার ভোগান্তি গ্রাহকের
ড্রোন হামলার ভয়াবহতা (Pakistan Army vs TTP)
টিটিপির প্রকাশিত দ্বিতীয় ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, আত্মঘাতী ড্রোন দিয়ে একটি পাক সেনাঘাঁটিতে পরপর দুটি বোমা ছোড়া হচ্ছে (Pakistan Army vs TTP)। বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে ঘাঁটি এলাকা। প্রাণহানির কোনও খবর না মিললেও এমন হামলার ধারা সেনাবাহিনীর জন্য বড় বিপদ বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।

আরও পড়ুন: US China Tariff : মোবাইল, কম্পিউটারের শুল্কে কোনও ছাড় নয়! শুল্কনীতিতে চিনের প্রতি অনমনীয় ট্রাম্প
পাল্টা অভিযান ও সংঘর্ষ(Pakistan Army vs TTP)
টিটিপির বাড়বাড়ন্তের পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে বড়সড় সামরিক অভিযান শুরু করেছে পাক ফৌজ (Pakistan Army vs TTP)। গত ১০ এপ্রিল লোয়ার দির জেলার তিমেরগারা পাহাড়ে পাক সেনা ও টিটিপি-র মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ হয়। তাতে গোষ্ঠীর একাধিক শীর্ষ নেতা নিহত হয়েছে বলে ইসলামাবাদ দাবি করেছে।তবে পরিস্থিতি এখনও থিতু হয়নি। বরং শান্তি আলোচনা ভেঙে পড়ার পর থেকে টিটিপি আগের চেয়েও বেশি আগ্রাসী। তাদের অস্ত্রভান্ডার যেভাবে সমৃদ্ধ হচ্ছে, তাতে ভবিষ্যতে পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে আরও বড় মাপের হামলার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
উদ্বিগ্ন সাবেক সেনাকর্তারা (Pakistan Army vs TTP)
পাকিস্তানের অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল খালেদ জামাল আনসারি ‘এক্সপ্রেস ট্রিবিউন’-কে বলেন, “জ্যাভলিনের ভয়ঙ্কর দিক হল, সীমান্তের যে কোনও পোস্ট এটির সাহায্যে উড়িয়ে দেওয়া সম্ভব। এতে ভূখণ্ড হারানোর সম্ভাবনা থাকছে।”
রাশিয়ার চাঞ্চল্যকর দাবি (Pakistan Army vs TTP)
রাশিয়ার (Vladimir Putin) প্রতিরক্ষা দফতরের দাবি, আফগানিস্তানে তালিবানের হাতে ১০০টিরও বেশি ‘জ্যাভলিন’ মজুত রয়েছে। সেই অস্ত্র কতটা টিটিপির হাতে এসেছে, তা পরিষ্কার নয়। তবে ভিডিয়োর প্রমাণে ইসলামাবাদ যে আতঙ্কিত, তা স্পষ্ট।পাকিস্তানের সীমান্ত এলাকায় টিটিপির জঙ্গি তৎপরতা যে মাত্রা নিচ্ছে, তা রীতিমতো উদ্বেগজনক। আমেরিকার বিপজ্জনক অস্ত্র ‘জ্যাভলিন’ এবং আধুনিক ড্রোন প্রযুক্তির সংমিশ্রণে ভবিষ্যতের সংঘাত আরও রক্তক্ষয়ী হতে চলেছে। ইসলামাবাদ যে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে, সে ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই।