ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: অপারেশন সিঁদুর বিতর্কের সময় লোকসভায় ভাষণ দেওয়ার সময় প্রিয়াঙ্কা গান্ধী (Priyanka Gandhi Shreds Centre) কেন্দ্রের তীব্র সমালোচনা করেন।
পহেলগামে নিরাপত্তাহীনতায় প্রশ্ন তুললেন প্রিয়াঙ্কা (Priyanka Gandhi Shreds Centre)
অপারেশন সিঁদুর নিয়ে সংসদে তীব্র আক্রমণ শানালেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী (Priyanka Gandhi Shreds Centre)। তিনি প্রশ্ন তুললেন ২২ এপ্রিল, ২০২৫-এ জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে কেন এবং কীভাবে ২৬ জন পর্যটককে প্রকাশ্যে হত্যা করা হলো। তিনি বলেন, সরকার দাবি করছিল কাশ্মীরে সন্ত্রাস শেষ। অথচ জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র বৈসরন ভ্যালিতে কোনও সুরক্ষা না রেখে নিরীহ মানুষের প্রাণ নেওয়া হলো।
“সেদিন কেউ ছিল না আমাদের রক্ষা করার জন্য” (Priyanka Gandhi Shreds Centre)
প্রিয়াঙ্কা বলেন, শুভম দ্বিবেদী ও তাঁর স্ত্রী মাত্র ছয় মাস আগে বিয়ে করেছিলেন (Priyanka Gandhi Shreds Centre)। সেদিন বৈসরনে আবহাওয়া ভালো ছিল। অনেকে ঘুরতে এসেছিলেন, কেউ জিপলাইনে, কেউ চা খাচ্ছিলেন, শিশুরা ট্রাম্পোলিনে খেলছিল। হঠাৎ জঙ্গল থেকে চার জঙ্গি এসে শুভমকে তাঁর স্ত্রীর সামনে হত্যা করে। এরপর এক ঘণ্টা ধরে ২৫ জনকে আলাদা করে চিহ্নিত করে মেরে ফেলা হয়।
“সরকার ভরসা দিল, কিন্তু ছেড়ে দিল ঈশ্বরের ভরসায়” (Priyanka Gandhi Shreds Centre)
শুভমের স্ত্রী ঐশান্যা জানিয়েছেন, “আমি দেখলাম আমার পুরো পৃথিবী শেষ হয়ে গেল। সেদিন একজন নিরাপত্তারক্ষীও ছিল না।” প্রিয়াঙ্কা প্রশ্ন তোলেন, প্রতিদিন যেখানে ১,০০০-১,৫০০ পর্যটক যান, সেখানে একটিও নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল না কেন? তিনি বলেন, “মানুষ সরকারকে ভরসা করে যায়। আর সরকার তাদের ঈশ্বরের ভরসায় ছেড়ে দেয়।”
“স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কী করছিলেন?”
প্রিয়াঙ্কা বলেন, ঘটনার দুই সপ্তাহ আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কাশ্মীর গিয়ে বলেছিলেন, সন্ত্রাসবাদ শেষ। কিন্তু হামলার তিন মাস পর উপ-রাজ্যপাল বললেন, তিনি দায় নিচ্ছেন — তাতেই সব শেষ! কেউ আর কিছু জিজ্ঞেসও করল না। তিনি প্রশ্ন তোলেন, প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং এনএসএ কি দেশের নিরাপত্তার দায় বহন করেন না?
আরও পড়ুন: Operation Shivshakti : কাশ্মীরে ফের অভিযান, এবার ‘অপারেশন শিবশক্তি’! সেনার গুলিতে নিহত ২
“গোয়েন্দা ব্যর্থতা, প্রশাসনিক দায় নেই?”
প্রিয়াঙ্কা জানান, হামলার দায় স্বীকার করে যে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ নামের জঙ্গি সংগঠন, সেটিকে ২০১৯-এ গঠনের তিন বছর পর সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি বলেন, “সরকার বলছে তারা জানত, তাহলে কেন কোনও গোয়েন্দা সংস্থা আগাম খবর পেল না? এটি একটি বিপুল নিরাপত্তা ব্যর্থতা।”
২৬/১১-র উদাহরণ টেনে সমালোচনা (Priyanka Gandhi Shreds Centre)
২০০৮ সালের মুম্বই হামলার প্রসঙ্গ টেনে প্রিয়াঙ্কা বলেন, সেদিন সব জঙ্গিকে হত্যা করা হয়েছিল, একজন বাদে, যাকে পরে ফাঁসি দেওয়া হয়। সেবার মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদত্যাগ করেছিলেন। ছিল জবাবদিহি। অথচ এখন দিল্লিতে দাঙ্গা, মণিপুরে অশান্তি, পাহালগামে গণহত্যা—সব কিছুই ঘটছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা অবস্থায়।
“প্রতিরক্ষা বাহিনীকে সম্মান, কিন্তু সরকারেরও উচিত দায় স্বীকার করা”
তিনি বলেন, “দেশ যদি আক্রান্ত হয়, তাহলে সংসদের সব পক্ষই সরকারকে সমর্থন করবে। আমরা আমাদের সেনার সাহসের জন্য গর্বিত। কিন্তু শুধু বাহিনীর কৃতিত্ব নিয়ে গর্ব করলেই হবে না, দায়িত্বও নিতে হবে।”
“ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির কথা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নীরব”
তিনি অভিযোগ করেন, ভারত-পাক যুদ্ধবিরতির ঘোষণাও প্রথমে করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। “এই ঘটনা প্রধানমন্ত্রী কতটা দায়িত্বজ্ঞানহীন, তার প্রমাণ।”
“সরকার শুধু প্রচার আর রাজনীতি করে”
প্রিয়াঙ্কার মন্তব্য, “এই সরকার প্রশ্ন এড়াতে চায়। এদের রাজনৈতিক কাপুরুষতা অতুলনীয়। জনগণের প্রতি কোনও জবাবদিহি নেই। সব কিছুই শুধু পিআর আর রাজনীতি।”
“তাঁরা শুধু সংখ্যা নন, মানুষ ছিলেন”
নিজের বক্তব্যের শেষে প্রিয়াঙ্কা পড়ে শোনান ২২ এপ্রিল নিহত হওয়া ২৬ জনের নাম। তিনি বলেন, “আমি তাঁদের নাম পড়ছি যেন সকলে বুঝতে পারেন, তাঁরা আমাদের মতো মানুষ ছিলেন। তাঁরা কোনও রাজনৈতিক বোরে নন। তাঁরা এই দেশের শহিদ। আমরা প্রত্যেকে তাঁদের পরিবারের কাছে জবাবদিহি করি।”