ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: তুরস্কের মাটিতে বৃহস্পতিবার ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে শান্তি আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও, এই বৈঠক আদৌ হবে কি না তা নিয়ে গভীর অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে(Putin Zelenesky Meeting)। আলোচনার সময় যত ঘনিয়ে আসছে, ততই পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠছে। এখন পর্যন্ত কোনও পক্ষ থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি। একাধিক সূত্রের দাবি, আলোচনায় অংশ নেওয়ার কথা বললেও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন উপস্থিত থাকবেন না। অথচ তিনিই আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছিল।
আলোচনায় আগ্রহী নন জেলেনস্কি (Putin Zelenesky Meeting)
অন্য দিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি (Volodymyr Zelenskyy) বলেছেন, তিনি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়্যিপ এরদোয়ানের সঙ্গে বৈঠকের পরই আলোচনায় বসা না-বসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন (Putin Zelenesky Meeting)। জেলেনস্কি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি রাশিয়ার কোনও প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী নন— তাঁর দাবি, এই প্রতিনিধি দল “মিথ্যা” এবং “নাটকীয়”। তাঁর শর্ত একটাই, যদি পুতিন নিজে আলোচনায় বসেন, তবে তবেই আলোচনার কোনও অর্থ থাকবে।
কিছুই ঘটবে না, জানালেন ট্রাম্প (Putin Zelenesky Meeting)
আলোচনায় অনুপস্থিত আরেক গুরুত্বপূর্ণ নাম হলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Putin Zelenesky Meeting)। তিনি পূর্বে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, তিনি হয়তো তাঁর মধ্যপ্রাচ্য সফরের সময়সূচি পরিবর্তন করে তুরস্কে আলোচনায় অংশ নিতে পারেন। কিন্তু পুতিন না থাকায় ট্রাম্প (Donald J. Trump) জানান, এই আলোচনায় “কিছুই ঘটবে না” এবং ইউক্রেন প্রসঙ্গে কোনও অগ্রগতি হবে না যতক্ষণ না তিনি নিজে পুতিনের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকে বসেন।

সরাসরি আলোচনা হয়নি (Putin Zelenesky Meeting)
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের পর থেকে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে কোনও সরাসরি আলোচনা হয়নি। ফলে এই সম্ভাব্য বৈঠক আন্তর্জাতিক মহলে বিশেষ নজর কাড়ছিল (Putin Zelenesky Meeting)। ইউরোপীয় দেশগুলির পাশাপাশি ট্রাম্পও রাশিয়ার উপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যদি মস্কো যুদ্ধবিরতির জন্য রাজি না হয়।তবে এই আলোচনার অনিশ্চয়তা একদিকে যেমন শান্তির প্রত্যাশায় ধাক্কা দিয়েছে, অন্যদিকে তা আন্তর্জাতিক কূটনীতিকে আরও চাপের মুখে ফেলেছে। রাশিয়া ও ইউক্রেন— উভয়ই পারমাণবিক শক্তিধর দেশ, এবং তাদের মধ্যে সামরিক সংঘাত শুধু ইউরোপ নয়, গোটা বিশ্বের নিরাপত্তার উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

তুরস্কের কূটনৈতিক ভারসাম্য (Putin Zelenesky Meeting)
তুরস্ক যদিও এই আলোচনার মাধ্যমে একটি মধ্যস্থতাকারী দেশ হিসেবে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করতে চেয়েছিল, কিন্তু নেতৃত্ব পর্যায়ের এই অনুপস্থিতি আলোচনার গুরুত্বকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে (Putin Zelenesky Meeting)। এরদোয়ান বরাবরই ইউক্রেন-রাশিয়া দ্বন্দ্বে কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা করার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি বলছে, নেতৃস্থানীয়দের অনাগ্রহ আলোচনার সম্ভাবনাকেই ক্ষীণ করে দিচ্ছে। যদি এই বৈঠক শেষমেশ বাতিল হয়, তবে যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। পশ্চিমা বিশ্ব ইতিমধ্যেই রাশিয়ার উপর চাপ বাড়াতে প্রস্তুত, এবং ব্যর্থ আলোচনার দায় সরাসরি মস্কোর উপর চাপিয়ে দেওয়া হতে পারে। ফলে আগামী দিনগুলিতে যুদ্ধবিরতি নয়, বরং নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা প্রতিক্রিয়ার খেলাই আন্তর্জাতিক রাজনীতিকে শাসন করতে পারে।
নিষ্ফল আলোচনা (Putin Zelenesky Meeting)
তুরস্কে সম্ভাব্য এই আলোচনা শান্তির পথে একটি সুযোগ হিসেবে উঠে এসেছিল (Putin Zelenesky Meeting)। কিন্তু রাশিয়া ও ইউক্রেন, বিশেষ করে নেতৃত্ব পর্যায়ের উদাসীনতা এবং একে অপরের প্রতি অবিশ্বাস আলোচনাটিকে প্রায় নিষ্ফল করে তুলেছে। আন্তর্জাতিক মহলের নজর এখন এখানেই—এই অচলাবস্থা ভাঙার নতুন কোনও উদ্যোগ কি সামনে আসে? নাকি যুদ্ধের বিভীষিকা দীর্ঘায়িত হয় আরও?