ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: চিনের বেজিংয়ে অনুষ্ঠিত সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজ়েশন (এসসিও)-এর প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সম্মেলন শেষ হল যৌথ বিবৃতি ছাড়াই(Rajnath Singh In SCO)। কারণ, ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ (Rajnath Singh) চূড়ান্ত বিবৃতিতে স্বাক্ষর করলেন না। তাঁর আপত্তি, সীমান্তপারের সন্ত্রাস এবং পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গিবাদ নিয়ে ওই বিবৃতিতে কোনও উল্লেখই ছিল না। আর তাতেই নয়াদিল্লি অসন্তোষ প্রকাশ করল।
সন্ত্রাস নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান (Rajnath Singh In SCO)
সম্মেলনে নিজের বক্তব্যে পাকিস্তানের নাম না করেই সন্ত্রাসে মদতের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দেন রাজনাথ(Rajnath Singh In SCO)। তিনি বলেন,
“যে সব দেশ সন্ত্রাসকে নিজেদের কৌশলগত স্বার্থসাধনের হাতিয়ার করে তোলে, তাদের দায় নিতে হবে। এসসিও-র মতো আন্তর্জাতিক মঞ্চে এমন আচরণের সমালোচনায় কোনও দ্বিধা থাকা উচিত নয়।”
তিনি আরও বলেন, “সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দ্বিমুখী নীতি বরদাস্ত করা হবে না। আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।”
যৌথ বিবৃতি থেকে ভারতের সরে দাঁড়ানো (Rajnath Singh In SCO)
এসসিও-র সদস্যরাষ্ট্রগুলি ঐকমত্যের ভিত্তিতে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে থাকে(Rajnath Singh In SCO)। পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বিবৃতিতে সীমান্তপারের সন্ত্রাস, বিশেষত পাকিস্তানপ্রসূত হিংসা নিয়ে কোনও বক্তব্য রাখা হয়নি। ফলে ভারতের আপত্তিতে চূড়ান্তভাবে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করলেন না প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ। এর জেরে যৌথ বিবৃতি ছাড়াই সম্মেলন শেষ হল, যা আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে বড় বার্তা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

পাকিস্তান ও এসসিও মঞ্চ (Rajnath Singh In SCO)
এসসিও-র সদস্য পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ মুহাম্মদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন(Rajnath Singh In SCO)। ভারতের তরফে সরাসরি তাঁর দেশকে নিশানা না করলেও, রাজনাথের বক্তব্য ছিল স্পষ্টতই পাকিস্তানের বিরুদ্ধেই। প্রসঙ্গত, পহেলগাঁওয়ের পর্যটক হত্যা কাণ্ডের পরে ভারত-পাক সম্পর্ক আরও তলানিতে ঠেকেছে।
পহেলগাঁও কাণ্ডের পুনঃউল্লেখ (Rajnath Singh In SCO)
রাজনাথ তাঁর বক্তৃতায় ফের উল্লেখ করেন,“পহেলগাঁও হামলায় জঙ্গিরা ধর্ম দেখে মানুষকে গুলি করেছিল। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে রেজ়িস্ট্যান্স ফ্রন্ট, যা আসলে লশকর-এ-ত্যায়বার ছায়া সংগঠন। রাষ্ট্রপুঞ্জ এই সংগঠনকে আগেই সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী হিসেবে ঘোষণা করেছে।”
ভারতের গোয়েন্দাদের মতে, হামলাকারীরা পাকিস্তান থেকেই এসেছিল। ইসলামাবাদ অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। তবু সীমান্তপারের জঙ্গি অনুপ্রবেশ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ার জন্য এসসিও মঞ্চেই পাকিস্তানকে নিশানা করলেন রাজনাথ।

রাজনৈতিক তাৎপর্য (Rajnath Singh In SCO)
কূটনীতিকদের মতে, যৌথ বিবৃতিতে সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গ না থাকা শুধু ভারতের নিরাপত্তা উদ্বেগকে অগ্রাহ্য করা নয়, বরং এসসিও-র বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে। বিশেষত, যখন ভারত সীমান্তে বারবার সন্ত্রাসে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ মদতের অভিযোগ তুলে আসছে।
আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে যৌথ বিবৃতি থেকে সরে দাঁড়ানো বিরল ঘটনা। কিন্তু নয়াদিল্লি এবার স্পষ্টভাবে দেখিয়ে দিল, সন্ত্রাস ইস্যুতে কোনও আপস নয়। ভারতের এই দৃঢ় অবস্থান এসসিও-কে হয়তো ভবিষ্যতে আরও দায়িত্ববান ভূমিকায় বাধ্য করবে — এমনটাই আশাবাদ।