ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: দীর্ঘ দেড় বছরের পরিকল্পনা, নিখুঁত লক্ষ্যভেদ এবং অভূতপূর্ব সমন্বয়—এই তিনে ভর করে ইউক্রেন রবিবার চালিয়ে দিল ইতিহাসের অন্যতম বড় ড্রোন হামলা (Russia Ukraine Conflict)। যার ফলাফল রাশিয়ার অন্তত ৪০টি সামরিক বিমান ধ্বংস। অভিযানের সাংকেতিক নাম—‘অপারেশন মাকড়সার জাল’। এই বিশেষ অভিযানের কথা প্রকাশ্যে আনলেন খোদ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি।
হামলার মূল লক্ষ্য কী ছিল? (Russia Ukraine Conflict)
হামলার মূল লক্ষ্য ছিল রাশিয়ার ইরকুটস্ক অঞ্চলের ওলেনিয়া বিমানঘাঁটি। পাশাপাশি নিশানা করা হয়েছিল আরও তিনটি বিমানঘাঁটি—বেলায়া, ইভানোভো, এবং দিয়াগিলেভো। জ়েলেনস্কির দাবি, মোট ১১৭টি ড্রোন ব্যবহার করে এই বিমানঘাঁটিগুলিতে অত্যন্ত নিখুঁত হামলা চালানো হয়। ধ্বংস হওয়া বিমানের মধ্যে রয়েছে রাশিয়ার দূরপাল্লার বোমারু বিমান টিইউ-৯৫ এবং টিইউ-২২। এই বিমানগুলি সাধারণত ক্যালিবার ক্ষেপণাস্ত্র বা অন্যান্য দূরপাল্লার অস্ত্র ছোঁড়ার জন্য ব্যবহৃত হয়।
সেনার প্রশংসায় জেলেনস্কি (Russia Ukraine Conflict)
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি (Volodymyr Zelenskyy) এই অভিযানে অংশ নেওয়া ইউক্রেন সেনার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, “এই অপারেশন ছিল অত্যন্ত কৌশলগত এবং নিখুঁতভাবে পরিকল্পিত। তিনটি ভিন্ন টাইম জোনে আমাদের বাহিনী কাজ করেছে। একাধিক দিক থেকে আক্রমণ চালিয়ে একযোগে সাফল্য এসেছে। এটি নিঃসন্দেহে অসাধারণ একটি অভিযান।”
ছ’মাস আগে অভিযানের অনুমোদন (Russia Ukraine Conflict)
তিনি আরও জানান, এই অভিযানের অনুমোদন তিনি দিয়েছিলেন প্রায় এক বছর ছ’মাস আগে (Russia Ukraine Conflict)। তারপর শুরু হয় গোপনে প্রস্তুতি। প্রত্যেকটি পদক্ষেপ ছিল ছক কষে সাজানো এবং সংগঠিত। হামলার আগে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছিল, যাতে বেসামরিক প্রাণহানি না ঘটে। ইউক্রেন দাবি করেছে, কেবলমাত্র সামরিক লক্ষ্যবস্তুতেই হামলা চালানো হয়েছে। তবে হামলার সিদ্ধান্ত হঠাৎ করেই চূড়ান্ত করতে হয় ইউক্রেনকে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর মেলে, রাশিয়া নিজেও পাল্টা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তখনই ইউক্রেন তাৎক্ষণিক হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়।

আরও পড়ুন: Pakistan Afganistan Ties : পাক ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে তালিবান! নেপথ্যে চিনের কূটনৈতিক কৌশল
৫০০ রুশ ড্রোন হামলা (Russia Ukraine Conflict)
জেলেনস্কির ভাষায়, “রাতভর আকাশে প্রায় ৫০০টি রুশ ড্রোন উড়েছে। রাশিয়া ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সক্ষমতা বাড়াচ্ছে। আমরা প্রতিরোধ করবই—যেকোনো মূল্যে দেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করব।”
অন্যদিকে, রবিবার একই দিনে রাশিয়াও ইউক্রেনের এক সামরিক ঘাঁটিতে পাল্টা হামলা চালিয়েছে। ওই ঘটনায় অন্তত ১২ জন ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছেন বলে খবর। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই হামলা শুধু সামরিক স্তরেই নয়, কূটনৈতিক পর্যায়েও গভীর প্রভাব ফেলবে। কারণ, এর পরের দিনই ইস্তাম্বুলে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সেই প্রেক্ষিতে ইউক্রেনের এই ড্রোন হামলা একটি “গেমচেঞ্জার” পদক্ষেপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।