ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের মধ্যে এক নতুন মাত্রা যোগ করল কিয়েভ সরকারের সাম্প্রতিক অভিযোগ (Russia Ukraine War)। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির (Volodymyr Zelenskyy) প্রশাসন গত সপ্তাহে জানায়, রুশ ফৌজের হয়ে যুদ্ধ করতে আসা দুই চিনা সেনাকে গ্রেফতার করা হয়েছে ডনেৎস অঞ্চলের যুদ্ধক্ষেত্র থেকে। এর সঙ্গে আরও বিস্ফোরক অভিযোগ—রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করছে অন্তত ১৫৫ জন চিনা সেনা।
চিনা সেনার পরিচয় প্রকাশ্য (Russia Ukraine War)
গ্রেফতার হওয়া দুই চিনা সেনার পরিচয় প্রকাশ্যে আনায় আন্তর্জাতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে Russia Ukraine War। ইউক্রেনের দাবি, এই সেনারা চিনা পিপল’স লিবারেশন আর্মির সদস্য, যারা রাশিয়ার পক্ষ নিয়ে সক্রিয়ভাবে যুদ্ধ করছে। এই ঘটনার ভিডিও এবং নথিপত্রও ইউক্রেন সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশ করা হয়েছে, যা প্রমাণ হিসেবে আন্তর্জাতিক ফোরামে তুলে ধরার প্রস্তুতি চলছে।
জ়েলেনস্কির বিবৃতি (Russia Ukraine War)
জ়েলেনস্কি এক বিবৃতিতে বলেন, “চিনের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সহায়তা রাশিয়ার আগ্রাসনকে দীর্ঘায়িত করছেRussia Ukraine War। এই সেনা উপস্থিতি শুধু ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত নয়, বরং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনেরও লঙ্ঘন।” তিনি আরও বলেন, কিয়েভ এই ইস্যু আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলবে এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাবে।

চিনের প্রতিক্রিয়া (Russia Ukraine War)
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে চিনের প্রতিক্রিয়াও এসেছে তীব্রভাবে। বেজিং-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধবন্দিদের পরিচয় ও ছবি প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক যুদ্ধনীতি ও মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করেছে। চিনা বিদেশ মন্ত্রকের এক মুখপাত্র বলেন, “চিন কখনও রাশিয়াকে সরাসরি সামরিক সহায়তা দেয়নি। ইউক্রেনের এই অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”

চিনের মদতে যুদ্ধ (Russia Ukraine War)
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই অভিযোগ আন্তর্জাতিক কূটনীতির ক্ষেত্রে একটি নতুন টানাপোড়েনের ইঙ্গিত। ইউক্রেন বরাবরই অভিযোগ করে এসেছে যে, রাশিয়ার পক্ষে চিন, উত্তর কোরিয়া, ও ইরান পরোক্ষভাবে সহায়তা করছে। ২০২৪ সালে সিঙ্গাপুরে ‘শাংরি লা ডায়ালগ’ সম্মেলনে জ়েলেনস্কি সরাসরি বলেন, “চিনের মদতে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হচ্ছে।” সেই ধারাবাহিকতাতেই এবার আরও সরাসরি পদক্ষেপ কিয়েভের।

চিনের উপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা (Russia Ukraine War)
পশ্চিমা দেশগুলি বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছে। ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনৈতিক মহল বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ওয়াশিংটন সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছে এবং প্রমাণ যাচাই করছে। এই অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে, চিনকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও চাপের মুখে পড়তে হতে পারে। অন্যদিকে, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগও সমান গুরুত্ব পাচ্ছে।
বিশ্ব রাজনীতির পালাবদল (Russia Ukraine War)
বর্তমানে যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়া ও ইউক্রেন দুই পক্ষই চূড়ান্ত চাপের মধ্যে রয়েছে। এর মধ্যেই এই নতুন তথ্য যুদ্ধকে আরও জটিল করে তুলছে।এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আগামী দিনে আন্তর্জাতিক ফোরামে ইউক্রেন ও চিনের অবস্থান এবং কূটনৈতিক পাল্টা-পাল্টি পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। বিশ্ব রাজনীতির পালাবদলে এটি এক নতুন অধ্যায় বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।