ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: কোনও পূর্বশর্ত বা তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা ছাড়াই অবশেষে ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসতে চলেছে রাশিয়া(Russia Ukraine War)। মঙ্গলবার এই তথ্য জানান ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ। দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা যুদ্ধ পরিস্থিতিতে এই আলোচনাকে কূটনৈতিক মহলে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় বলে মনে করা হচ্ছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে যুদ্ধবিরতির আলোচনা (Russia Ukraine War)
বৃহস্পতিবার তুরস্কের ইস্তানবুল শহরে রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে (Russia Ukraine War)। যদিও বৈঠকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladímir Putin) ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত থাকবেন কি না, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিতভাবে কিছু জানায়নি মস্কো। একই রকম অনিশ্চয়তা রয়েছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির (Volodymyr Zelenskyy) যাত্রা নিয়েও। জ়েলেনস্কি অবশ্য সোমবার এক স্পষ্ট বার্তায় বলেন, “আগামী ১৫ মে আমি তুরস্কে থাকব এবং পুতিনের জন্য অপেক্ষা করব।” এই ঘোষণার পর আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলে আলোচনার আশা বাড়লেও, দুই নেতার সরাসরি সাক্ষাতের সম্ভাবনা এখনও অনিশ্চিত।
নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির আবেদন (Russia Ukraine War)
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকে যুদ্ধ চলছেই(Russia Ukraine War)। বহু শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, প্রাণ হারিয়েছেন হাজার হাজার সৈনিক ও নিরীহ নাগরিক। লাখ লাখ ইউক্রেনীয় নাগরিক ঘরছাড়া হয়ে আশ্রয় নিয়েছেন পোল্যান্ডসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে।ইতিমধ্যে আমেরিকা, ফ্রান্স, জার্মানি, পোল্যান্ড এবং ব্রিটেনের মতো দেশ ইউক্রেনকে সমর্থন জানিয়ে একাধিকবার যুদ্ধ থামানোর চেষ্টা করেছে। গত রবিবার এই দেশগুলি একত্রে ৩০ দিনের নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির আবেদন জানায়। পরদিন থেকেই তা কার্যকর করার আহ্বান জানানো হয়। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পুতিন সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব দেন। যদিও তার পরপরই ইউক্রেনে ফের ড্রোন হামলা চালায় রুশ বাহিনী, যা রুশ অবস্থান নিয়ে কিছুটা দ্বিধার সৃষ্টি করেছে(Russia Ukraine War)।

আরও পড়ুন: Security Of S Jaishankar : বাড়ানো হল বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের নিরাপত্তা! কেন এই সিদ্ধান্ত ?
মধ্যস্থতায় অনীহা (Russia Ukraine War)
বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে যখন শান্তির আহ্বান আসছে, তখন রাশিয়া স্পষ্ট করেছে তারা কোনও তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা চায় না (Russia Ukraine War)। প্রেসিডেন্ট পুতিন গত রবিবারই জানান, সরাসরি ইউক্রেনের সঙ্গেই আলোচনায় বসতে চায় মস্কো, কোনও পক্ষকাল বা বিদেশি হস্তক্ষেপ ছাড়াই। এই অবস্থানে অনড় থেকেও, আলোচনায় রাজি হওয়ায় কিছুটা নমনীয়তা দেখাচ্ছে রাশিয়া—এমনটাই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যদিও মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তবে মস্কো তা প্রত্যাখ্যান করে জানিয়ে দেয়, ‘এই সংঘাতের সমাধান কেবল কিয়েভ ও মস্কোর মধ্যেই সম্ভব, বাইরের কোনও চাপে নয়।’

আরও পড়ুন: US Iran Nuclear Talks : ট্রাম্পের সফরের আগেই সুর নরম তেহরানের ! এবার মিটবে “পরমাণু-দ্বন্দ্ব” ?
আলোচনাট ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা (Russia Ukraine War)
যুদ্ধবিরতির জন্য ইস্তানবুলে এই দ্বিপাক্ষিক আলোচনা যদি সফল হয়, তবে দুই দেশের যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলগুলোয় স্বস্তির হাওয়া বইতে পারে (Russia Ukraine War)। তবে আলোচনার আগেই রুশ বাহিনীর ড্রোন হামলা আবারও নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে—এই শান্তির উদ্যোগ কতটা আন্তরিক? ইউক্রেন সরকারের একাংশ আশাবাদী হলেও, অনেকে মনে করছেন রাশিয়া হয়তো কেবল আন্তর্জাতিক চাপ প্রশমনের কৌশল হিসেবে এই আলোচনার পথে হাঁটছে। এমনকি কোনও দৃশ্যমান ফলাফল ছাড়াই আলোচনাটি ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশ্লেষকরা। এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক দৃষ্টিসমূহ ইস্তানবুলের দিকেই। বৃহস্পতিবারের বৈঠক আসলেই যুদ্ধের অবসানে কোনো আশার আলো আনতে পারে কিনা, তা নির্ভর করবে দুই পক্ষের সদিচ্ছা ও বাস্তব প্রয়াসের উপর।