ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: তিন বছরের দীর্ঘ ও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে পর্যুদস্ত রাশিয়া ও ইউক্রেন। শান্তি ফেরানোর আশায় গত ১৭ মে প্রথমবার কোনও তৃতীয় পক্ষ ছাড়া মুখোমুখি বৈঠকে বসেছিল দুই দেশ(Russia Ukraine War)। যদিও যুদ্ধবিরতির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি, তবু যুদ্ধবন্দি বিনিময়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের কারণে আলো তৈরি হয়েছিল আলোচনার চারপাশে। সেই আলো নিভে আসছে নতুন করে—এবার আলোচনায় অনাগ্রহ দেখানোর অভিযোগ উঠেছে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে।
পুতিনের অভিযোগ (Russia Ukraine War)
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দফতর বৃহস্পতিবার অভিযোগ করেছে, তুরস্কের ইস্তানবুলে আগামী সোমবার নির্ধারিত শান্তিবৈঠকের প্রস্তাবে ইউক্রেন কোনও সাড়া দেয়নি (Russia Ukraine War)। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “ইউক্রেন আদৌ আলোচনায় অংশ নেবে কি না, তা এখনও আমরা জানতে পারিনি। তাদের প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষায় আছি।”
লিখিত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব দেওয়ার দাবি
অন্যদিকে, কিয়েভ বলেছে, আলোচনায় বসার আগে মস্কোকে লিখিতভাবে যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত বিস্তারিত প্রস্তাব পাঠাতে হবে(Russia Ukraine War)। ইউক্রেনের অবস্থান আরও অনমনীয় হয়ে উঠেছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কারণ, গত কয়েক সপ্তাহে রুশ বাহিনীর নতুন হামলায় ইউক্রেনের কুর্স্ক অঞ্চল এবং ডনেৎস্কের বিস্তীর্ণ এলাকা হাতছাড়া হয়েছে জ়েলেনস্কির (Volodymyr Zelenskyy) সেনাদের। এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতির শর্তাবলি নিয়ে ইউক্রেন আরও বেশি কৌশলী এবং সতর্ক অবস্থান নিচ্ছে।রুশ নিরাপত্তা পরিষদের সচিব সের্গেই শোইগু বৃহস্পতিবার সকালে দ্বিতীয় দফার শান্তি বৈঠকের প্রস্তুতির কথা ঘোষণা করেছিলেন। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মুখপাত্র পেসকভের অনিশ্চয়তার বার্তা যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎকে আরও প্রশ্নের মুখে ফেলে দিল।

যুদ্ধবন্দি মুক্তির সিদ্ধান্ত(Russia Ukraine War)
তবে, গত ১৭ মে ইস্তানবুলে অনুষ্ঠিত প্রথম রাউন্ডের বৈঠক কিছুটা আশাবাদী করেছিল আন্তর্জাতিক মহলকে(Russia Ukraine War)। তৃতীয় পক্ষ বা কোনও শর্ত ছাড়া হওয়া ওই বৈঠকে ১,০০০ জন করে যুদ্ধবন্দি মুক্তির সিদ্ধান্ত হয়েছিল, যা দু’দেশ চলতি সপ্তাহেই কার্যকর করেছে। তা সত্ত্বেও যুদ্ধবিরতি নিয়ে মৌলিক ঐকমত্য গড়ে ওঠেনি।বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে রুশ অগ্রগতি ও সামরিক দাপটের প্রেক্ষিতে কিয়েভ কোনও ‘দুর্বল’ অবস্থান থেকে আলোচনায় বসতে রাজি নয়। তাছাড়া, পশ্চিমি সমর্থন ও সামরিক সহায়তা আরও নিশ্চিত করার লক্ষ্যেও তারা সময় নিচ্ছে।

যুদ্ধবিরতির বার্তাবাহক তুরস্ক (Russia Ukraine War)
তুরস্কের ইস্তানবুলে সোমবারের বৈঠক অনিশ্চয়তায় পড়লেও, আন্তর্জাতিক মহল এখনও আশা ছাড়েনি(Russia Ukraine War)। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং আমেরিকা পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। যুদ্ধবিরতির বার্তাবাহক হিসেবে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তায়িপ এরদোয়ান ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগ নিয়েছেন আলোচনার ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে।যুদ্ধ চলাকালীন শান্তির প্রতিটা সম্ভাবনাই মূল্যবান। তাই কূটনৈতিক মহলের এখন একটাই প্রশ্ন—ইস্তানবুল কি যুদ্ধের এক নতুন বাঁক বদলের সাক্ষী হবে, না কি আরও এক ব্যর্থ প্রচেষ্টার নাম হয়ে থেকে যাবে?