ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইউক্রেন যুদ্ধের (Russia ukraine war) প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ভারত রাশিয়াকে স্পর্শকাতর সামরিক প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম সরবরাহ করছে—এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছে আমেরিকার একটি সংবাদ সংস্থা।সোমবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ‘হিন্দুস্থান অ্যারোনটিকস লিমিটেড’ রাশিয়াকে সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে, যা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার পরিপন্থী।
প্রতিবাদ ভারতের (Russia ukraine war)
এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে নয়াদিল্লি (Russia ukraine war)। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (Ministry of External Affairs) তরফে জানানো হয়েছে, হ্যাল (hal) বা ভারতের কোনো প্রতিরক্ষা সংস্থা আন্তর্জাতিক কৌশলগত বাণিজ্য নিয়ম লঙ্ঘন করেনি। নয়াদিল্লি দাবি করেছে, ‘শেষ-ব্যবহারকারী প্রতিশ্রুতি’ সংক্রান্ত সব আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা মেনে চলে ভারত। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও অভিযোগ করেছে যে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মনগড়া তথ্য উপস্থাপন করে সংবাদ সংস্থার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
ভারত-রাশিয়া প্রতিরক্ষা সহযোগিতা (Russia ukraine war)
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে পশ্চিমা দেশগুলো মস্কোর ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে (Russia ukraine war)। এর আওতায় প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি ও সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানির ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। তবে, ভারত রাশিয়ার সঙ্গে তার দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সম্পর্ক অব্যাহত রেখেছে এবং একাধিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।গত কয়েক মাসে আমেরিকা ভারতের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনায় বসেছে এবং নয়াদিল্লিকে সতর্ক করেছে যে, রাশিয়াকে ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ ও প্রযুক্তি সরবরাহ করলে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে পারে ভারতীয় সংস্থাগুলো। এ বিষয়ে ওয়াশিংটন কয়েকটি ভারতীয় সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্তও করেছে।

তেল আমদানিতে ভারত-রাশিয়ার ঘনিষ্ঠতা (Russia ukraine war)
ভারত-রাশিয়ার বাণিজ্যিক সম্পর্কও এই সংঘাতের সময়ে আরও মজবুত হয়েছে (Russia ukraine war)। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধির পর, রাশিয়া থেকে কম দামে তেল আমদানি বাড়িয়েছে ভারত। ওয়াশিংটন প্রকাশ্যে এই নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে এবং ভারতকে রাশিয়ার ওপর নির্ভরতা কমানোর পরামর্শ দিয়েছে। কিন্তু ভারত তার জ্বালানি নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্বার্থের কথা ভেবে রাশিয়ার সঙ্গে এই সম্পর্ক বজায় রেখেছে।ভারতের উদ্বেগের আরেকটি কারণ হলো বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের ক্রমবর্ধমান কৌশলগত সম্পর্ক। বিশেষ করে, বাংলাদেশ-চীন প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ায় নয়াদিল্লির শীর্ষ মহল চিন্তিত। ভারতের কূটনৈতিক মহলের মতে, দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের প্রভাব বৃদ্ধির মাধ্যমে ভারতকে কৌশলগতভাবে চাপে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: Imran Khan Nobel Peace : কেন নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হলেন ইমরান খান?

নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কা ও ভারতের কৌশলগত অবস্থান (Russia ukraine war)
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই ১০৭টি সামরিক সরঞ্জামের আমদানি নিষিদ্ধ করেছে (Russia ukraine war), যার মধ্যে বেশ কিছু রাশিয়ান অস্ত্রও রয়েছে। ভারত চায়, ২০২৪ সালের মধ্যে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতা বাড়াতে এবং বিদেশি নির্ভরতা কমাতে।বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের প্রতিরক্ষা সম্পর্ক অব্যাহত থাকলেও, ওয়াশিংটনের চাপে ভারত কিছুটা সতর্ক হয়ে কাজ করবে। তবে, ভূরাজনৈতিক স্বার্থ বজায় রাখতে ভারত তার নিজস্ব কৌশল অবলম্বন করবে এবং বহুমুখী কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখবে।